জাকিয়া সুলতানা
১০ মে ২০২৫, ০২:২৭ পিএম
কর্ম পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তনশীল। প্রতিটি কর্মীই চান তার কাজের মাধ্যমে নিজেকে প্রকাশ করতে। নিয়োগদাতারাও চায় কর্মীর থেকে সেরা পারফরম্যান্স। যেকোনো কর্মস্থলে সেরা হওয়ার জন্য প্রয়োজন দৃঢ় পরিশ্রম, দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাস। তবে, সফলতা একদিনে আসে না, এটা একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া।
এই প্রতিবেদনে এমন কিছু পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো, যা আপনাকে কর্মক্ষেত্রে সেরা হতে সাহায্য করবে।
কর্মস্থলে সেরা হওয়ার প্রথম শর্ত আপনাকে হতে হবে দায়িত্বশীল। প্রতিটি কাজে থাকতে হবে সততা। নিজের ভুল স্বীকার করা জানতে হবে। একসঙ্গে অনেক কাজ করলে প্রাধান্য অনুযায়ী কাজ করুন এবং তা সময় অনুযায়ী সম্পন্ন করার চেষ্টা করুন। যথাসময়ে কাজ শেষ করা এবং প্রত্যাশিত ফলাফল পাওয়া কর্মস্থলে আপনার মূল্যায়ন আরও বাড়িয়ে তুলবে।

কর্মস্থলে অবশ্যই পেশাদারিত্ব থাকতে হবে ।ভদ্রতা এবং আদর্শ আচরণ বজায় রাখা খুব জরুরি। কাজে পেশাদারিত্ব মনোভাব আপনাকে অন্যান্য সহকর্মীদের কাছে বিশ্বস্ত করে তুলবে। আপনি যদি আপনার কাজের জন্য বিশ্বস্ত হন, তবে আপনার প্রতি অন্যদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং সহকর্মীরা আপনাকে আরও বেশি দায়িত্ব দিতে প্রস্তুত থাকবে।
কর্মস্থলে সেরা হওয়ার অন্যতম একটি দিক, প্রতিনিয়ত নিজের দক্ষতা বাড়ানো এবং নতুন কিছু শেখা। পেশাদার জীবনে প্রতিনিয়ত নতুন দক্ষতা অর্জন করলে এবং আগের কাজগুলোকে আরও উন্নত করতে যদি মনোযোগ দিলে একসময় আপনি নিজ কাজে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠবেন। এছাড়া বিভিন্ন কোর্স, ওয়ার্কশপ বা অনলাইন ট্রেনিং এর মাধ্যমে নতুন কিছু শিখতে পারেন। যা ক্যারিয়ারকে আরও ধারালো করে তুলবে।
একজন সফল কর্মী শুধু তার নিজের কাজেই মনোযোগী থাকেন না, বরং তিনি দলের সদস্যদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখেন। তাই সুযোগ পেলে সহকর্মীদের সহযোগিতা করুন। তাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করুন। দলগতভাবে কাজ করলে কাজের মান ও পরিবেশ আরও উন্নত হয়। ক্যারিয়ারে সফল হতে চাইলে টিমওয়ার্কে নজর দিন।

কর্মক্ষেত্রে সমস্যা থাকবেই। তবে, যিনি দক্ষতার সঙ্গে দ্রুত সমস্যার সমাধান করতে পারেন, তিনিই সেরা কর্মী হিসেবে পরিচিতি পান। আপনি যদি সমস্যা সমাধানে আরও নতুন এবং সৃজনশীল উপায় খুঁজে বের করেন, তবে আপনার কাজের প্রতি সবার আস্থা বাড়বে। বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাভাবনা এবং ইনোভেটিভ আইডিয়া কর্মস্থলে আপনার অবস্থান আরও শক্তিশালী করে উঠতে সহায়ক হবে।
যোগাযোগ রক্ষা কর্মস্থলে সেরাদের সেরা হয়ে ওঠার একটি অপরিহার্য দক্ষতা। আপনি যদি পরিষ্কার, সংক্ষিপ্ত এবং কার্যকরিভাবে চিন্তা প্রকাশ করতে পারেন, তবে তা সহকর্মী ও কর্তৃপক্ষের কাছে আপনার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি করবে। একজন সেরা কর্মীর শোনার দক্ষতা এবং অন্যের দৃষ্টি আকর্ষণের দক্ষতা থাকে। এগুলো আয়ত্ত করুন।
সময় ব্যবস্থাপনা একটি গুরুত্বপূর্ণ দক্ষতা। আপনার কাজের মধ্যে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করুন এবং যথাসময়ে কাজ শেষ করুন। কর্মক্ষেত্রে যদি আপনি ভালোভাবে সময় পরিচালনা করতে পারেন এবং প্রায়োরিটি ঠিক রাখতে পারেন, তবে এটি আপনার সময় আরও বাঁচাবে। সেইসঙ্গে কাজের ফলাফলও আরও তরান্বিত করবে। কর্মস্থলে সেরা হতে চাইলে এই গুণটি অপরিহার্য।
নতুন ধারণা, উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতা আপনাকে অনন্য করে তুলবে। বহমান এই সময়ে প্রতিনিয়ত কাজে নতুনত্ব থাকা চাই। আপনি যদি নতুন প্রকল্প শুরু করেন, নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করেন কিংবা চিন্তার নতুন কোনো দিক উন্মোচন করেন, তবে আপনার প্রতিভা সর্বাধিক প্রকাশ পাবে।
আরও পড়ুন: এনজিওতে চাকরি, বেতন ছাড়াও অনেক সুবিধা
সেরা কর্মী হওয়ার জন্য স্বাস্থ্য এবং মানসিক অবস্থাও ভালো থাকা চাই। আপনি যদি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ না থাকেন, তবে এর প্রভাব পড়বে কাজেও। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া, পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া এবং মানসিক চাপ কমানোর উপায়গুলো অনুসরণ করা জরুরি।
কর্মস্থলে নিজেকে সেরা গড়ে তুলতে চাওয়া শুধু কঠোর পরিশ্রম এবং দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যাপার নয়, এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। আত্মবিশ্বাস, সময়মতো কাজ করা, প্রতিনিয়ত নতুন কিছু শেখার আগ্রহ একজন কর্মী দ্রুত কর্মক্ষেত্রে সেরার আসনে নিয়ে যায়।
তবে মনে রাখতে হবে, সফলতা একদিনে আসে না। এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী প্রক্রিয়া এবং এর প্রতিটি পদক্ষেপই আপনাকে সামনের দিকে অগ্রসর করবে।
জেএস/এনএম/এজেড