images

সাক্ষাৎকার

“পারলে অনন্ত জলিলের মতো ‘দিন দ্য ডে’ ছবি বানিয়ে দেখাক”

বেলাল হোসেন রাজু

০১ আগস্ট ২০২২, ০৩:৩৭ এএম

অনন্ত জলিল। পাঁচ বছর বয়সে মাকে হারিয়েছেন। মুন্সীগঞ্জ জেলায় বাবার কাছে বেড়ে উঠেছেন। তার প্রকৃত নাম আব্দুল জলিল। তিনি ও লেভেল এবং এ লেভেল পড়েছেন ঢাকার অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল থেকে। এরপর ম্যানচেস্টার থেকে বিবিএ এবং ফ্যাশন ডিজাইনিং পড়ালেখা করেন।

পোশাক ব্যবসায়ে পা রাখে ১৯৯৯ সালে। ২০০ শ্রমিক থেকে বর্তমানে তার পোশাক কারখানায় কাজ করে সাড়ে ১২ হাজার শ্রমিক। তিনি ২০১০ সালে খোঁজ-দ্যা সার্চ সিনেমার মাধ্যমে ঢালিউডের চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন। গার্মেন্টস ব্যবসার পাশাপাশি নিজের প্রযোজনা সংস্থার মাধ্যমে চলচ্চিত্র ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন।

সম্প্রতি ঈদুল আজহায় মুক্তি পেয়েছে তার প্রযোজিত ও অভিনীত ‘দিন দ্য ডে’ সিনেমা । আর এই সিনেমা নিয়ে আবারো আলোচনায় অনন্ত জলিল। কেন এই আলোচনা-সমালোচনা, তার বেড়ে উঠা, ব্যবসা, মানবিক কাজ এবং সিনেমা নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা মেইলের বেলাল হোসেন রাজু।
 
ঢাকা মেইল: এই সিনেমা নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আছে। এ বিষয়ে কিছু বলুন…
অনন্ত জলিল: এ বিষয়ে অনেক কথা হয়েছে। আর কিছু বলতে চাই না। আলোচনা বা সমালোচনা করা যাদের কাজ, তারা সেটা করেই যাবেন। আমাদের কাজ হচ্ছে ভালো মুভি বানানো। যদি সেটা পারি, তাহলে দর্শক দেখবে। গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, দর্শক ছবিটা দেখে কী বলছে। দর্শক কতটুকু দেখছে তা আপনারা জানেন? তাদের একটাই কথা, তারা টিকিট পাচ্ছেন না। আসলে ছবি বানাই দর্শকদের জন্য। দর্শকদের ভালো লাগাটাই আমাদের ভালো লাগা।
 
ঢাকা মেইল: ‘দিন-দ্যা ডে’ সিনেমা কোন কোন দেশে রিলিজ করা হবে? 
অনন্ত জলিল: শুরুতে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা ও আমেরিকা। তারপর ফ্রান্স, ইতালি, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়া, দুবাই, ওমান, বাহরাইন, ইউকেসহ অনেক দেশে আমরা রিলিজ করবো। বাকি কাজ ইরানের। ইরান বোধহয় রাশিয়া, আফ্রিকা, ইজিপ্টসহ অনেক দেশেই রিলিজ করবে।

aj
 
ঢাকা মেইল: আপনি সিনেমায় যে স্বপ্ন নিয়ে এসেছেন, সেটা কতটুকু পূরণ করতে পারছেন বা পারবেন বলে মনে করেন?
অনন্ত জলিল: দিন: দ্য ডে ছবিটি রিলিজ হলো। এই ছবিটার মেকিং, লোকেশন, গল্প—সব মিলিয়ে এ ধরণের ছবি আগে বানানো হয়েছে কি না? এ ধরণের লোকেশনে মানুষ আগে যেতে পেরেছে কি না? এ ধরণের মেকিং হয়েছে কি না? এই ছবিতে দেখেছেন যে, আর্মি, স্পেশাল ফোর্স, নেভি যে ধরণের ওইপনগুলো ব্যবহার হয়েছে, এগুলো আগে বাংলাদেশে হয়েছে কি না—এসব দর্শকরাই যাচাই করবেন। তো আমার স্বপ্ন ছিল- এ ধরণের ছবি দেশের দর্শকদের জন্য উপহার দেওয়া। তবে, পৃথিবী বসে নেই। আগামীতে অ্যাডভান্স টেকনোলজি থাকবে, এডভান্স গল্প থাকবে। ইয়াং জেনারেশন তো ব্যকডেটেড কিছু পছন্দ করবে না। এখন তাদের হাতের মুঠোয় পৃথিবী। আমাদের চিন্তাভাবনাও তাই অ্যাডভান্স থাকতে হবে। 
 
আমাদের পরবর্তী প্রজেক্ট হচ্ছে ‘নেত্রী: দ্য লিডার’, এটিও তুর্কির সাথে করা প্রোডাকশন মুভি। এটাতেও আমরা বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে অ্যাডভান্স টেকনোলজি ব্যবহার করেছি। দর্শকদের কতটুকু মানসম্মত মুভি দেখাতে পারি, সেটাই হবে দেখার বিষয়। গল্পেরও আলাদা একটা ব্যাপার আছে, সেটাও দেখার বিষয়।
 
তারপরের মুভিটা হচ্ছে ‘দ্য লাস্ট হোপ’। এটাও ইয়াং জেনারেশনের পছন্দের গল্পের বিষয়টি মাথায় রেখে বানানো হচ্ছে। নরওয়ের সঙ্গে আর্টিস্ট হিসেবে কাজ করে যাচ্ছি। ২০ দেশের আর্টিস্ট থাকবে ওই মুভিতে। ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, সুইডেন, জর্মানি, দুবাই, ইতালি ফ্রান্স, নরওয়ে ইত্যাদি। এত দেশ মিলে একসঙ্গে কাজ করতে অনেক প্রস্তুতি দরকার। তাই প্রস্তুতিটা সুন্দরভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করছি। আমরা দেশের সিনেমা পৃথিবীর সব জায়গায় পৌঁছে দিলেও কারা দেখবে? বাংলাদেশি দর্শক-শ্রোতারাই দেখবে। কিন্তু ওই ছবিতে শুধু বাংলাদেশি অডিয়েন্স থাকবেন না, যেহেতু ইন্টারন্যাশনাল মুভি। তাই আমাদেরকে প্রিপারেশন নিতে হবে ওভাবেই। কাজ করতে হবে বিদেশি আর্টিস্টদের সঙ্গে। ছবিগুলো ইরান রিলিজ করবে, ইরানিরা তাদের মেকিংয়ে ছবি দেখতে অভ্যস্থ। ইজিপ্টেসহ বিভিন্ন জায়গায় রিলিজ হবে। এখন আমাদের চিন্তাভাবনা হলো বাংলাদেশের আর্টিস্টরা শুধু বাংলাদেশে সীমাবদ্ধ থাকলেই হবে না। আমাদের কাজ করতে হবে ওভাবে যে, অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে কাজ করেন। ওই ধরণের চিন্তাভাবনা করেই আমাদেরকে কাজ করতে হবে।

aj

ঢাকা মেইল: বর্তমান চলচ্চিত্র জগত আদৌ কি একটি ফ্যামিলির মতো? এ বিষয়ে আপনার ভাবনাগুলো নিয়ে যদি কিছু বলতেন-
অনন্ত জলিল: চলচ্চিত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা শুধু মুখেই ফ্যামিলি পরিচয় বলতে স্বাচ্ছন্দবোধ করে। মূলত এটি মিথ্যা কথা। এটি সত্য হলে ভোট নিয়ে এত কেলেঙ্কারি হতো না। যদি একটা পরিবারই হতো, তাহলে বলতো যে, আমরা তো একটাই পরিবার, চলুন দুই বছরের জায়গায় একবছর আপনি থাকুন, এক বছর আমি থাকি। এত বাড়াবাড়ির দরকার কী? আপনারা জানেন, প্রযোজক সমিতিতে নির্বাচন হলে আরেকজন গিয়ে মামলা করে। তাহলে একটা পরিবার কেমনে হলো? প্রযোজক সমিতি বলেন বা শিল্পী সমিতি বলেন ঝামেলা লেগেই থাকে। ক্যামেরার সামনে আসলে তখন একটু সুন্দর করে কথা বলার চেষ্টা করে। সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করে যে, আমরা আসলে একটা ফ্যামিলি। এটা হান্ড্রেট পার্সেন্ট মিথ্যা কথা। তার প্রমাণ তো আপনারা পেয়েছেনই। আমি যখন সিনেপ্লেক্সে এই কথাটা বললাম, তারপর আমাকে একজন মান্না ভাইয়ের কথাটা শেয়ার করল। অর্থাৎ মান্না ভাইও সেইম কথাই বলে গেছেন। আমি কিন্তু আমার পেইজে আমার কথাটা শেয়ার করেছি। উনি কত আগে বলে গেছেন, আমি তো এখন বলছি। উনি অনেক গুণি শিল্পী। উনিই বলে গেছেন চলচ্চিত্র এক ফ্যামিলি এই কথাটি মিথ্যা। তবে আমি এতদিন ভুল জায়গায় ছিলাম বা ভুল বুঝেছিলাম যে, চলচ্চিত্র একটা ফ্যামিলি। আমাদের আসলে মান্না ভাইয়ের কথাটা ফলো করা উচিত। চলচ্চিত্র আসলেই একটা ফ্যামিলি না। এখানে হাজারো মুখ, হাজারো ফ্যামিলি। এখানে সবাই নিজের চিন্তা করে।

ঈদের আগের দিন বা চাঁদরাতে যখন আমার ছবিটা রিলিজ হলো, আমি ভিডিও পোস্ট করে উইশ করি অন্য দুই ছবির জন্য। আমার ছবির ব্যাপারে তারা পজিটিভ কথা বা উইশ করা তো দূরের কথা, বরং নেগেটিভ কথা বলেছে। কিন্তু আমি কী করেছি, আমি উইশ করেছি। এই যে এখন ‘হাওয়া’ ছবি রিলিজ হবে, আজকে সকালে নো মেকাপ, নো গেটাপ, নো ড্রেসাপে আমি ভিডিও দিয়েছি। উইশ করেছি ‘হাওয়া’ ছবিকে। আমি বলতে পারি, আমি ট্রাই করছি বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে একটা ফ্যামিলিতে রূপ দেওয়ার জন্য। হিংসা নিন্দা ভুলে যাওয়ার জন্য। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে আমরা সবাই ভালোবাসি। আমরা সবাই সবার পাশে দাঁড়াই। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রকে এগিয়ে নিয়ে যাই। কাঁদা ছোড়াছুড়ি বাদ দেই। আমরা শিল্পী, আমাদেরকে দেখার আগ্রহ বৃদ্ধি হোক মানুষের মধ্যে। এটাই আমার চেষ্টা। যারা এগুলো করে না, সেটা তাদের ব্যাপার। যারা নেগেটিভ বলে, সেটাও তাদের ব্যাপার। তবে যারা মুভি নিয়ে আলোচনা করেন, শুধু আমার ছবি না, সব ছবি নিয়ে যাদের আগ্রহ আছে, তাদেরকে শ্রদ্ধা করি। যারা ভালো মানুষ, তারা ভালো দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। আর যাদের কাজ নেই, তারা সমালোচনা করেন। পারলে অনন্ত জলিলের মতো ‘দিন দ্য ডে’ ছবি বানিয়ে দেখাক। এটা তো সম্ভব হয়নি। তাহলে সমালোচনা করার অর্থ কী? সমালোচনা করলেও সুন্দর লাগত যদি ভালো কিছু নিয়ে আসত। কিন্তু সেই যোগ্যতা তো নেই, আর যার যোগ্যতা নেই, সে সমালোচনা করবেই, তার জন্য ওটাই অনেক বড় কিছু। 
 
ঢাকা মেইল: আপনি জীবনকে কীভাবে দেখেন?
অনন্ত জলিল: আমি নিজেকে সাধারণ মানুষ হিসেবে দেখতে পছন্দ করি। আল্লাহ তাআলার ইচ্ছায় আমি নিঃশ্বাস নিতে পারছি। সেটা তাঁরই দান। আমি নিজেকে নিয়ে কখনো গর্ব করি না। তবে, ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। সেটা সিনেমা হোক বা অন্য কিছু। সিনেমা তো একটিমাত্র দিক। আমি একজন শিল্পপতি, আমি চাই ভালো ইন্ডাস্ট্রি করতে। যারা আমার ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করবে তাদেরকে ভালোভাবে দেখাশোনা করতে। যারা শুধু সমালোচনাই করেন, করোনা মহামারিতে কিছু করার তো যোগ্যতা দেখিনি। শুধু বড় বড় কথা বললে হয় না। আমার কোম্পানিতে সাড়ে ১২ হাজার শ্রমিক কাজ করে। একজনকেও করোনার সঙ্কটে চাকরি থেকে বিদায় করিনি। অথচ পুরো ঢাকা শহর ‘টু লেট এ ভরে গেছে। আসলে বলার লোক আছে, দেওয়ার কেউ নেই।

aj
 
ঢাকা মেইল: আপনার শৈশব ও বেড়ে ওঠার সময়গুলো নিয়ে কিছু বলুন…
অনন্ত জলিল: আমার শৈশব অনেক কঠিন ছিল। কারণ আমি মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির ছেলে। আমার বাবার অনেক বেশি টাকা ছিল না। আমার মা মারা যান আমার ছয় বছর বয়সে। বাবা ব্যবসা বাণিজ্য করতেন। আমাদেরকে মানুষ করার জন্য অনেক চেষ্টা করেছেন। অনেক বেশি মানুষের সাথে আমরা মিশতে পারিনি। খুব রেস্ট্রিক্টেড করে রেখেছিলেন। একটা নিয়মের মধ্যে থেকে যে যার মতো মানুষ হওয়ার চেষ্টা, যার যে পেশা পছন্দ বেছে নেওয়া এই তো।
 
ঢাকা মেইল: ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে যারা একতায় বিশ্বাসী তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন—
অনন্ত জলিল: একটা কথাই বলবো- কেউ কাউকে শত্রু না ভেবে সবাই সবাইকে সাপোর্ট দেবেন। যার ছবি আসবে সে যে হিরোই হোক তাকে সাপোর্ট দেবেন, যেই প্রযোজনা সংস্থার ছবি আসুক, যে ডিরেক্টরের ছবি আসুক, সবাই মিলে তাকে সাপোর্ট দেবেন। তাহলে চলচ্চিত্র সবাই দেখবে। চলচ্চিত্রকে নেগেটিভভাবে উপস্থাপন করা যাবে না। আমি চলচ্চিত্রে কাজ করতে পারি না বলে হিংসা করব, নেগেটিভ কথা বলব- এটা উচিত না। আমি করতে না পারলে কী হয়েছে, যে করছে সে তো আমার কলিগ। তাই তাকে উইশ করাই উচিত। এটাই আমার ভাষ্য।

aj

ঢাকা মেইল: এমন কোনো ইচ্ছা আছে, যা এখনো পূরণ হয়নি, কিন্তু পূরণ করতে চান।
অনন্ত জলিল: কোনো ইচ্ছা নেই। আমি শুধু চাই, মানুষ ভালো পথে চলুক। আমি যেমন ভালো পথে চলি, সবাই তেমন ভালো পথে চলুক। এটাই সবার প্রতি আমার অনুরোধ। বাকি পৃথিবীতো আমি চেঞ্জ করে ফেলতে পারবো না। প্রত্যেকে কর্ম অনুযায়ী ফল ভোগ করবে। আমি আমার কথা বলবো, আরেকজন আরেকজনের কথা বলবে। তবে আমি শুধু কথায় না, কাজও ভালো করতে চাই, যতটুকু উপার্জন করি গরীবদের পাশে থাকতে চাই। আমার কাজই হচ্ছে এটি। এজন্য কারো উপদেশ নেওয়ার দরকার আমার নেই। বাবা-মা, বড়ভাই উপদেশ দিয়েছেন এবং আমি আমার নিজের মনকে ওভাবে তৈরি করেছি। আর আমি যা করবো ভালোর জন্য করবো। এ কারণে আমি যতদিন বাঁচি আমি ভালো কাজ করে যাব। কে কী ভাবলো না ভাবলো সেটা আমার দেখার দরকার নাই। আসলে দেখার সময়ও নেই। সবাই ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন, সুস্থ থাকুন।
 
উল্লেখ্য, অনন্ত জলিল বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তারই অংশ হিসেবে ৩টি এতিমখানা নির্মাণ করেছেন। মিরপুর ১০ নং, বাইতুল আমান হাউজিং ও সাভার মধুমতি মডেল টাউনে আছে এতিমখানাগুলো। এ ছাড়াও সাভারের হেমায়েতপুরের ধল্লা গ্রামে সাড়ে ২৮ বিঘার উপর একটি বৃদ্ধাশ্রম নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন। এদিকে হেমায়েতপুরে অবস্থিত বায়তুস শাহ জামে মসজিদ এর নির্মাণকাজেও সহযোগিতা করেন তিনি। করোনা ভাইরাসে ঘরবন্দি মানুষ এবং সম্প্রতি সিলেট ও হবিগঞ্জের ভয়াবহ বন্যায় তিনি সক্রিয়ভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন।

বিএইচআর/এএস