images

আন্তর্জাতিক

একবারে ২০ লিটার পানি ৩৩০ মাইল বেগে টানতে পারে হাতি!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৯ মে ২০২৩, ০১:০২ পিএম

বৃহত্তম স্থলচর স্তন্যপায়ী হাতি। শুঁড়কে হাতের মত ব্যবহার করতে পারার জন্য এর নাম হাতি। এই প্রাণীর শক্তি সম্পর্কে কারোরই অজানা নয়। তবে এমন একটি বিস্ময়কর তথ্য গবেষকরা খুঁজে পেয়েছেন যেটি অবাক হওয়ার মতো।

রয়্যাল সোসাইটি ইন্টারফেসের জার্নালে প্রকাশিত গবেষণায় হাতির শুঁড়ের বিস্ময়কর ক্ষমতা প্রকাশ করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রায় ২০০ পাউন্ড ওজনের এই পেশীবহুল অনুনাসিক উপাঙ্গগুলো এক সেকেন্ডে তিন লিটার পানি চুষে নেওয়ার ক্ষমতা রাখে।

গবেষক ক্যাথরিন জে. উ প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, এই অসাধারণ প্রবাহ হার একই সাথে চলমান প্রায় ২৪টি ঝরনার মাথার সমতুল্য। ২০২১ সালে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়।

elephant suck

লাইভ সায়েন্স ও সায়েন্স নিউজে বলা হয়েছে, এই ধরনের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ পানি দ্রুত সরানোর জন্য হাতিরা একটি শ্বাস-প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া ব্যবহার করে। এসময় তারা এর গতি তুলতে পারে ঘণ্টায় ৩৩০ মাইল। এই বেগ মানুষের হাঁচির চেয়ে ৩০ গুণ বেশি এবং বেশিরভাগ উচ্চ-গতির ট্রেনের গতিকেও ছাড়িয়ে যায়।

হাতির শুঁড়ে অন্তত দেড় লাখ পেশীর একক রয়েছে। হাতির শরীরে সবথেকে স্পর্শকাতর অঙ্গ এটি। হাতির শুঁড়ের বহুমুখিতা বিভিন্ন পরিস্থিতিতে স্পষ্ট। গভীর পানিতে থাকা অবস্থায় হাতি এটির সাহায্য নিঃশ্বাস নিতে পারে। এছাড়া গাছ উপড়ে ফেলা বা কিছু সরিয়ে দিতে, খাবার বা পানি খেতে শুঁড়ের ব্যবহার করে হাতি। গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি না ভেঙে একটি টেবিল থেকে সূক্ষ্মভাবে একটি আলুর চিপ ছিঁড়ে ফেলতে পারে।

elephant big

হাতির দাঁত আইভরি দিয়ে তৈরি। যা বিশ্ববাজারে চড়া দামে বিক্রি হয়। ২ বছর বয়স থেকে হাতির দাঁত গজাতে শুরু করে আর তারপর আজীবন তা বাড়তে থাকে।

হাতি মাংসাশী প্রাণী নয়। এরা গাছের ফল, মূল, ডালপালা খেয়েই জীবন ধারণ করে। কোনও কোনও গাছের কাণ্ডও খেয়ে ফেলে এরা। একটি পূর্ণ বয়স্ত হাতি দিনে গড়ে ১৫০ কেজি খাবার খায়। তবে বেশি ক্ষুধার্ত হলে হাতি এর দ্বিগুণ খাবার খেতে পারে।

হাতির শরীরে পানির চাহিদা প্রচুর। তাই দিনে এরা প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ লিটার পানি পান করে। হাতি দিনের বেশির ভাগ সময় খেয়ে দেয়েই কাটিয়ে দেয়। উপমহাদেশের হাতির গড় ওজন হয়ে থাকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার কেজির মতো।

elephant

বিশ্বের সবথেকে বড় স্তন্যপায়ী জীব হাতি। এর সর্বোচ্চ ওজন হতে পারে ৬ টন পর্যন্ত। পুরুষ হাতি সাধারণত ৩০ থেকে ৪০ বছর বাঁচে। তবে বন্য হাতি বাঁচে ৬০ থেকে ৭০ বছর।

হাতির চামড়া ২.৫ সেন্টিমিটার পর্যন্ত মোটা হয়। ধুলো ও কাদা দিয়ে স্নান করে হাতি নিজের শরীর পরিষ্কার রাখে। হস্তি শাবক জন্ম নেওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে উঠে দাঁড়াতে পারে এবং ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই হাঁটা শুরু করে দেয়।

elephant

পৃথিবীতে দুই ধরনের হাতি পাওয়া যায়। একটি আফ্রিকান এবং অন্যটি এশিয়ান। কানের আকারগত ফারাকে এই দুই প্রজাতিকে আলাদা করে চেনা যায়।

হাতিরা তৃণভূমিতে বসবাস করে। হাতি প্রায় সবদেশে পাওয়া যায়। বেশি পাওয়া যায় আফ্রিকার দেশগুলোতে। তবে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, নেপালে ভারতীয় হাতি পাওয়া যায়। দক্ষিণ আফ্রিকা, বতসোয়ানা, জিম্বাবুয়ে, কেনিয়া, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নামিবিয়া, রুয়ান্ডা, মোজাম্বিকে পাওয়া যায় আফ্রিকান হাতি। উপমহাদেশে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এই শক্তিশালী প্রাণী।

একে