আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১০ এএম
সম্প্রতি মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় দেশটির মধ্যাঞ্চলের একটি গ্রামে ৩৮ জন শিশুসহ প্রায় ২০০ জন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এরপর জনসাধারণের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপনে কাজ করছে বলে জানিয়েছে বেসামরিক লোকদের গড়া সরকার। গ্রাম ছেড়ে পালাচ্ছে মানুষ।
জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের মানবাধিকার মন্ত্রী অং মিও মিন বলেছেন, 'বেসামরিক নাগরিকদের উপর মিয়ানমার জান্তার প্রাণঘাতী বিমান হামলা বন্ধ করার উপায় খুঁজে বের করা আমাদের জন্য অত্যন্ত অপরিহার্য।' খবর ভয়েস অব আমেরিকার
অং মিও মিন বলেন, 'আমরা জনসাধারণের জন্য বিমান প্রতিরক্ষা সতর্কতা ব্যবস্থা স্থাপনের জন্য কাজ করে যাবো। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের এর গুরুত্ব জানাতে হবে। আমাদের অবশ্যই একটি এয়ার সিগন্যাল সিস্টেম দরকার, যা মানুষকে সতর্ক করতে পারে।'
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছে, গত ১১ এপ্রিল ভোরে সাগাইং অঞ্চলের কানবালু শহরের পাজিগি গ্রামের বাইরে একটি ছোট স্থানীয় এনইউজি প্রশাসনিক কার্যালয় উদ্বোধনের বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ জন লোক জড়ো হয়েছিল। ঠিক সেসময়ই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিমান ওই স্থানে বোমাবর্ষণ করে।
তারা জানিয়েছে, ওই গ্রামে দুই শতাধিক বাড়ি ছিল। গ্রামবাসীরা, প্রধানত দরিদ্র কৃষক, এছাড়াও কাছাকাছি নদী খুঁড়ে স্বর্ণ খুঁজে বের করে তা বিক্রি করেও অনেকে জীবিকা নির্বাহ করে।
হামলার তিনদিন পর স্থানীয় উদ্ধারকারী গোষ্ঠীর একজন বালা গি বলেন, '১১ এপ্রিল পাজিগি গ্রামে সামরিক জান্তা বোমা হামলার পর ২৪ জন নারী ও ৩৮ জন শিশুসহ অন্তত ১৭০ জন নিহত হয়।'
বালা গি বলেন, এছাড়াও আরও ৩০ জন আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ২০ জনের অবস্থা গুরুতর। এদের মধ্যে একজন গর্ভবতী মহিলা এবং ৮ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে। যারা মারা গেছে তাদের মধ্যে ১৭১ জনের মৃতদেহ দাহ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কানবালু শহরে এটিই ছিল প্রথম বিমান হামলা। তিনি বলেন, যেহেতু এলাকায় আগে কখনো কোনো হামলা হয়নি, তাই পাজিগি গ্রামবাসীরা বোমা হামলার ঝুঁকিতে আছে বলে মনে করেননি।
জান্তার মুখপাত্র মেজর জেনারেল জাও মিন তুন হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন, তবে মারাত্মক পরিণতির জন্য বিরোধী বাহিনীকেই তিনি দায়ী করেছেন।
জাতিসংঘ এবং পশ্চিমা সরকারগুলো ও সাতটি শীর্ষস্থানীয় শিল্পোন্নত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা, বেসামরিক নাগরিকদের উপর এই হামলার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বিমান হামলা চালানোর জন্য তারা জান্তার নিন্দা করেছেন এবং দায়ীদের জবাবদিহিতার দাবি জানিয়েছেন।
একে