আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ মার্চ ২০২৩, ০১:০৭ পিএম
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) পরোয়ানার অধীনে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে গ্রেফতার করার চেষ্টা করা হলে যুদ্ধ বাঁধবে। প্রভাবশালী রুশ কর্মকর্তা দিমিত্রি মেদভেদেভ এমন তথ্য দিয়েছেন। শুক্রবার আইসিসি ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরে এমন মন্তব্য করেছেন তিনি।
রাশিয়ান সামাজিক নেটওয়ার্কিং পরিষেবা ভিকে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এক সাক্ষাত্কারে কথা বলার সময়, মেদভেদেভ জার্মান আইন ও বিচার বিষয়ক মন্ত্রী মার্কো বুশম্যানের দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। ওই জার্মান মন্ত্রী আগে বলেছিলেন, পুতিন যদি জার্মানিতে আসেন তবে তাকে গ্রেফতার করা হবে।
ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করা এবং দেশটির শিশুদের জোর করে রাশিয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার ‘অপরাধে’ সম্প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। এর সদস্য বিশ্বের ১২৩টি দেশ। আদালতের রায়, এই দেশগুলোর মধ্যে কোনো একটিতে পা রাখলেই গ্রেফতার করা হবে পুতিনকে। রাশিয়া জানিয়ে দিয়েছে, তারা আইসিসি-র সদস্য নয়। ওই রায় মস্কো মানে না। বিষয়টিকে ‘ফাঁপা আওয়াজ’ বলেও উড়িয়ে দিয়েছে ক্রেমলিন। যদিও স্বাভাবিকভাবেই এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ রাশিয়া। গতকাল অনেক রাতে একটি বক্তৃতায় মেদভেদেভ বলেন, ‘‘পুতিনকে গ্রেফতার করা হলেই একটি দেশকে আক্রমণ করা হবে।’’
পুতিন-ঘনিষ্ঠেরা বলছেন, ‘‘এটা পরিষ্কার, এমন কোনো ঘটনা কখনই ঘটবে না। কিন্তু কল্পনা করা যাক, পুতিনকে গ্রেফতার করা হলো। ধরা যাক, জার্মানিতে গেলেন পরমাণু শক্তিধর দেশটির প্রধান। আর সেখানে তাকে গ্রেফতার করা হলো। সেটা কেমন হবে? সেটা কিন্তু রুশ ফেডারেশনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হবে।’’ মেদভেদেভ বলেন, ‘‘সে ক্ষেত্রে বুন্ডেসটাগের ওপরে আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পড়বে। জার্মান চ্যান্সেলরের অফিসে হামলা চলবে।’’
রাশিয়া আজও ইউক্রেনের একাধিক শহরে হামলা চালিয়েছে। সদ্য মস্কো সফর সেরে বেজিংয়ের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তিন দিনের সফরে পুতিনের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন শি। তাদের আলোচনার অন্যতম বিষয়বস্তু ছিল ইউক্রেনের যুদ্ধ। দু’দেশ যৌথ বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘রাশিয়া ফের শান্তি আলোচনা শুরু করতে চায়।’’ অথচ শি রওনা দিতে না-দিতেই ইউক্রেনে হামলা চালাল রাশিয়া। কিয়েভ অঞ্চলে অন্তত ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের হামলায়। দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের জাপোরিজিয়া থেকে একজনের মৃত্যুর খবর মিলেছে। দু’টি শিশু-সহ ৩৪ জন গুরুতর জখম হয়েছেন। একটি আবাসনে এসে পড়েছিল ওই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র। ৯তলা বাড়িটি দাউদাউ করে জ্বলতে শুরু করে। সেই ছবি ছড়িয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এ পর্যন্ত রাশিয়ার প্রতিটি পদক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছে ইউক্রেন। যদিও চীনা প্রেসিডেন্টের মস্কো-সফর নিয়ে একেবারে চুপ তারা। ফেব্রুয়ারি মাসে চীন যুদ্ধ থামাতে ১২টি পয়েন্টের একটি শান্তি-প্রস্তাব দিয়েছিল। তাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছিল ইউক্রেন। ধারণা করা হচ্ছে, চীন যতই রাশিয়ার হয়ে কথা বলুক না কেন, তাদের নিয়ে আশাবাদী ইউক্রেন। শি-র মস্কো সফরের পরে ফোনে তার সঙ্গে কথা বলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। সে নিয়ে তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল। জেলেনস্কি বলেছেন, ‘‘তেমন নির্দিষ্ট কোনো কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি। আমরা এখনও কিছু জানি না।’’
সূত্র : ইয়েনি শাফাক
এমইউ