আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৪৯ এএম
তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের এগারতম দিন আজ। বুধবার দশম দিনেও একাধিক জীবিত ব্যক্তিকে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় এবং তেমন কোনও খাবার ছাড়াই কীভাবে দীর্ঘ সময় সেখানে বেঁচে ছিলেন সেই বর্ণনা দিয়েছেন উদ্ধার হওয়া অনেকে। তাদের কথায় উঠে এসেছে রোমহর্ষক এসব চিত্র।
হুসেইন বারবার ১৮৭ ঘণ্টা পর উদ্ধার হন। তিনি কীভাবে এত সময় সেখানে বেঁচে ছিলেন সেটি জানিয়েছেন তিনি। ডায়াবেটিস রোগী হুসেইন তার বিল্ডিংয়ের গ্রাউন্ডফ্লোরে আটকা পড়েন। সেখানে একটি ফ্রিজ ও একটি কেবিনেট তাকে বেঁচে থাকতে সহায়তা করেছে। এছাড়া বসার জন্য একটি আর্মচেয়ার ও পাটি তাকে উষ্ণ থাকতে সহায়তা করেছিল।
মারসিন সিটি হাসপাতালের বিছানা থেকে তিনি জানান, তার কাছে এক বোতল পানি ছিল। সেটি ফুরিয়ে গেলে প্রস্রাব পান করেন।
হুসেইন বারবার বলেন, 'আমি চিৎকার করতে থাকি। কিন্তু কেউ আমার কথা শুনছিল না। আমি এত চিৎকার করেছিলাম যে আমার গলা ব্যথা করছিল। অনেক সময় পর কেউ একজন হাত বাড়িয়ে দিল। তারপর আমাকে তারা উদ্ধার করে। আমি যে গর্তে আটকা পড়েছিলাম তা অনেক ছোট ছিল। এমন পরিস্থিতিতে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম।
ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ায় বড় ভবনগুলো একেবারে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ভোররাতে হওয়া ভূমিকম্পের সময় প্রায় সবাই গভীর ঘুমে ছিলেন। এমন অবস্থায় অনেকে বের হওয়ারও সময় পাননি। ধ্বংস হওয়া এসব ভবনের মধ্যে যেগুলো কিছুটা কম বিধ্বস্ত হয়েছে সেগুলোতে বা ভবনের মাঝে গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে অনেকে আশ্রয় নেন।
ঘণ্টার পর ঘণ্টা সেখানে তারা বেঁচে থাকার চেষ্টা করেছেন। ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া সকলের ঘটনাই প্রায় একই রকম। তারা বেঁচে থাকার জন্য শেষ চেষ্টা করেছেন। অতঃপর উদ্ধারকারীরা তার কাছে পৌঁছে গেছে।
ভয়াবহ ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। ঘটনার দশম দিনে (বুধবার) ২২৮ ঘণ্টা পর দুই শিশু ও তিন নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়া অনেকে জীবিত আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাদের উদ্ধারে মরিয়া চেষ্টা করছে উদ্ধারকারীরা।
তুরস্ক এবং সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৪২ হাজার মানুষের। লাখ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে। হিমাঙ্কের নিচে তাপমাত্রায় গৃহহীন হয়ে পড়া মানুষ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সেখানে বেঁচে যাওয়া লাখ লাখ মানুষের জরুরি সহায়তা প্রয়োজন।
সূত্র: রয়টার্স
একে