আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১০:৫৮ এএম
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পের নবম দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে। তীব্র ঠাণ্ডা ও প্রতিকূল পরিবেশে ধ্বংসস্তূপে আটকে পড়াদের জীবিত উদ্ধারের আশা আরও ক্ষীণ হয়ে এসেছে। বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের কংক্রিট সরালেই মিলছে লাশ।
ভূমিকম্পে মৃত্যুর সংখ্যা যখন ২৭ হাজার ছিল তখন জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছিল যে, চূড়ান্ত সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে। সংস্থাটি বলেছে যে, ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের এখানে মৃতের সংখ্যা ১৯৩৯ সালের ভূমিকম্পকে ছাড়িয়ে গিয়ে ৩১৬৪৩ জনে দাঁড়িয়েছে। এটি আধুনিক তুরস্কের ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পে পরিণত হয়েছে। অপরদিকে গৃহযুদ্ধে বিধ্বস্ত সিরিয়ায় মৃতের সংখ্যা ৫৭১৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে।
তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ৬ হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ান্তেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে ১৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৫ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়ে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মিসর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও কম্পন অনুভূত হয়।
ডব্লিউএইচও এর শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং সম্প্রতি বলেন, ‘ভূমিকম্প যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে, তার মানচিত্র অনুসারে বলা যায় যে দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদের মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ অরক্ষিত অবস্থায় আছে।
তিনি আরও বলেন, তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ভূমিকম্প কবলিত অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অঞ্চলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত আফটারশক হতে পারে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ক্যারেন ম্যাগিনিস ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন যে ভূকম্পনের বৈশিষ্ট্যের কারণে আফটার শক পরের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্তও অনুভূত হতে পারে।
একে