images

আন্তর্জাতিক

ভূমিকম্প থেকে বেঁচে জমানো অর্থ দান করল তুর্কি শিশু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:৪০ পিএম

ভয়ংকর প্রাকৃতিক বিপর্যয় থেকে প্রাণে বেঁচে ফিরেছে সে। মৃত্যুকে খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেই ৯ বছরের শিশু বুঝতে পেরেছে জীবনের মূল্য কতখানি। বাড়ি ফিরে নিজের জমানো অর্থের সবটাই ত্রাণ তহবিলে দান করে দিয়েছে সে। এর সঙ্গে হৃদয়গ্রাহী লিখেছে একটি চিঠিও। তার প্রশংসা জানিয়েছে উদ্ধারকারী দল ও নেটিজেনরা।

তুরস্কের ৯ বছরের শিশুর নাম আলপার্সলান এফি দেমির। তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমের দুজসা প্রদেশের বাসিন্দা। গত নভেম্বরে যখন ৫.৯ মাত্রার কম্পনে কেঁপে উঠেছিল দেশটি, সেসময় সে একটি তাঁবুতে ঘুমিয়েছিল। ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল। কিন্তু প্রাণে বেঁচে যায় দেমির। মা-বাবার সঙ্গে শুরু করে নতুন জীবন। তারপর থেকেই দেমির নিজের মতো করে বুঝে গিয়েছিল ভূমিকম্প কতটা বিপদের।

এবার আরও বেশি মাত্রার ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গেছে তুরস্ক। দেশটি নিজের অবস্থান থেকে ৬ ফুট সরে গেছে। এখন পর্যন্ত তুরস্ক ও সিরিয়ায় ৩৪ হাাজরের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

little-boy-in-turkiey-donates

ভূমিকম্পে চরম দুরাবস্থা তৈরি হওয়ায় দেমির ভেঙে ফেলে নিজের পিগি ব্যাংক। এত বছর ধরে যে অর্থ সে জমিয়েছে, তার পুরোটাই তুরস্কের ত্রাণ তহবিলে দিয়েছে। দেমির তার মায়ের সঙ্গে তুর্কিশ রেড ক্রিসেন্টের দুজসা বিভাগের কার্যালয়ে গিয়েছিল। সেখানেই অর্থ তুলে দেয় সে। সঙ্গে একটি নোট। 

দেমির নোটে লিখেছে, 'দুজসায় যখন ভূমিকম্প হয়েছিল, আমি খুব ভয় পেয়েছিলাম। এরপর এই ভূমিকম্পের কথা শুনেও আমার একই রকম ভয় লেগেছিল। দেখলাম, আমার বয়সি কত ছেলেমেয়ের আর বড়রা কত কষ্ট পাচ্ছে। তখনই ঠিক করলাম, আমার পিগি ব্যাংকের সব অর্থ আমি দিয়ে দেব, যাতে ওরা ভালভাবে থাকতে পারে। ওই টাকায় আমি হয়ত চকোলেট কিনতাম, কিন্তু সেটা বড় নয়। ছোটরা শীতে কষ্ট পাবে, খাবার পাবে না – তা তো হতে পারে না। আমার কিছু জামা আর খেলনাও ওদের জন্য পাঠাব।'

তীব্র ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পার হওয়ার পরও ‘অলৌকিক উদ্ধার’ অব্যাহত রয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ায়। এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে বের করা হচ্ছে জীবিতদের। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৭০টিরও বেশি দেশ তুরস্ক ও সিরিয়ায় উদ্ধারকার্যক্রমে অংশ নিয়েছে। ভূমিকম্পে তুরস্কে প্রায় সাত হাজার ভবন ধসে পড়েছে। সিরিয়ায়ও বিস্তীর্ণ অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

একে