আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:২৩ পিএম
তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা এখন ৩৩ হাজার ছাড়িয়েছে। সেখানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে যে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ বলেছে, তুরস্ক-সিরিয়ায় সোমবারের ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার পেরিয়ে গেছে। কিন্তু, জাতিসংঘ সতর্ক করেছে যে চূড়ান্ত সংখ্যা দ্বিগুণ হতে পারে।
তবে সরকারি কর্মকর্তারা এবং চিকিত্সকরা বলেছেন যে তুরস্কে ২৯, ৬০৫ জন এবং সিরিয়ায় ৩,৫৭৪ জন ওই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্পে মারা গেছেন। যার ফলে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে মোট মৃতের সংখ্যা ৩৩ হাজার ১৭৯ জনে পৌঁছেছে।
জাতিসংঘ বলেছে যে ভূমিকম্পের পরে সিরিয়ায় ৫৩ লাখ মানুষ গৃহহীন হতে পারে। এখন তুরস্ক এবং সিরিয়ায় প্রায় ৯ লাখ লোকের জরুরি খাদ্যের (গরম খাবারের) প্রয়োজন রয়েছে।
সিরিয়ার সরকার তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত এলাকায় মানবিক সহায়তা বিতরণের অনুমোদন দিয়েছে।
এর আগে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান বলেন, ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা দেশের ধ্বংসাত্মক ১৯৯৯ সালের ভূমিকম্পের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডব্লিউএইচও এর কর্মকর্তারা ধারণা করছেন যে, নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়বে। তুরস্কের দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ এএফইডি জানিয়েছে, ৬ হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজিয়ান্তেপ শহর। ভূমিকম্পের পরে ১৭০০ আফটারশক রেকর্ড করা হয়েছে।
গত সোমবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪টা ১৫ মিনিটে এই ৭.৮ মাত্রার ভয়াবহ ভূমিকম্প আঘাত হানে। বেশিরভাগ মানুষ তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। বহুতল ভবন ধসে পড়ে ঘুমন্ত মানুষের ওপর। মোমের মতো ধসে পড়েছে একাধিক ভবন। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তৃত এলাকা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। মিসর, লেবানন ও সাইপ্রাস থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ডব্লিউএইচও এর শীর্ষ কর্মকর্তা অ্যাডেলহেইড মার্শাং বলেন, ‘ভূমিকম্প যেসব অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছে, তার মানচিত্র অনুসারে বলা যায় যে দুই কোটি ৩০ লাখ মানুষ এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এদের মধ্যে ৫০ লাখ মানুষ অরক্ষিত অবস্থায় আছে।
তিনি আরও বলেন, তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ার ভূমিকম্প কবলিত অঞ্চলে বেসামরিক অবকাঠামো ও স্বাস্থ্য সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অবকাঠামোগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
জেনেভায় ডব্লিউএইচও এর নির্বাহী কমিটিকে মার্শাং বলেছেন, ‘ডব্লিউএইচও মনে করে যে সিরিয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন জরুরি পণ্যের অভাব দেখা দেবে। এমনকি দেশটিতে মধ্যমেয়াদী সময়ের জন্য আরও এমন সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ওই অঞ্চলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত আফটারশক হতে পারে। সিএনএনের আবহাওয়াবিদ ক্যারেন ম্যাগিনিস ব্যাখ্যা করে জানিয়েছেন যে ভূকম্পনের বৈশিষ্ট্যের কারণে আফটার শক পরের কয়েক সপ্তাহ, এমনকি কয়েক মাস পর্যন্তও অনুভূত হতে পারে।
সূত্র : আল-জাজিরা, বিবিসি
এমইউ