images

আন্তর্জাতিক

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর বর্ণনায় তুরস্কের ভূমিকম্প

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:৩১ পিএম

‘এটা ভাষায় প্রকাশ করার মতো না। চোখের সামনে যা দেখছি এটা কোনোদিন ভাবিও নাই। মৃত্যুর সংখ্যা এখানে বলছে দুই হাজার ৯২১ জন। এটাও এখন বেড়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থী একজনই নিখোঁজ। আমার পরিচিত এক ছোট ভাইয়ের বন্ধু। ওর কাছে শুনেছি তারা একসঙ্গেই থাকত। কিন্তু নিখোঁজ ছেলেটা বের হতে পারেনি। ভবনটা মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।’

এভাবেই তুরস্কের ভূমিকম্পের পরিস্থিতির কথা বলছিলেন দেশটির রাজধানী আঙ্কারায় বসবাস করা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী হাফিজ মুহাম্মদ। শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটির বেশ কয়েকটি শহরে ব্যাপক ক্ষতি হলেও আঙ্কারায় ক্ষতি তেমনটা হয়নি। তবে এখানেও ভূমিকম্প ভালোই দুলিয়েছে শহরটিকে।

turki

বাংলাদেশ সময় বেলা ১২টায় মুঠোফোনে কথা হয় হাফিজ মুহাম্মদের সঙ্গে। ঢাকা মেইলকে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তিনটা শহরে এখনো বিদ্যুৎ নাই। বাকিগুলোতে বিদ্যুৎ অনেকটা স্বাভাবিক হয়েছে। বিভিন্ন সংস্থা, সিটি করপোরেশন, রেড ক্রিসেন্ট, বড় বড় ব্যবসায়ীরা খাবার দিচ্ছে। তবে কোনো কোনো স্থানে পানির সমস্যা আছে। উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করলেও বহু ভবন ধ্বসে পড়ায় কুলায়ে উঠতে পারছে না। সামর্থের বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই। এক শহরে হাজারখানেক ভবন ধ্বসে পড়েছে। তারা নিরবচ্ছিন্নভাবে উদ্ধার কার্যক্রম চালাচ্ছে। সাধারণ মানুষও যোগ দিয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলো থেকেও বহু উদ্ধারকর্মী এসেছে। ভূমিকম্পে কাহরামানমারাস ছাড়াও গাজিয়ান্তেপ, মালাতিয়া, আদানা, হাতাই, দিয়ারবাকির, আদিয়ামান, উসমানিয়ে, সানলিউরফা, কিলিস বিভাগের দুই হাজারের বেশি ভবন ধ্বংস হয়েছে।

হাফিজ মুহম্মদ আরও বলেন, ‘ভূমিকম্পের সময় আমার শহরে তুলনামূলক অনুভূত কম হয়েছে। তারপরেও ভূমিকম্প দারুন দুলিয়েছে। ওই সময় আমার ঘুম ভেঙে যায়। এরপর বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিয়ে শুনলাম সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি বিভিন্ন শহরে খোঁজ নিলাম। অনেক রাতে ভূকম্পনের কারণে সবাই ঘুমিয়ে থাকায় হতাহতের সংখ্যাটা বেশি হয়েছে।

turki-1

‘হাসপাতাল চিকিৎসা চলছে। এখানে সেবাখাত অনেক শক্তিশালী। হাসপাতালগুলোতে অনেক জায়গা। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে রোগীদের ইস্তাম্বুল ও আঙ্কারায় নিয়ে আসছে। অনেককেই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে আসছে।

উল্লেখ্য, গতকাল ভোররাতে সিরিয়ার সীমান্তের কাছে দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্কের গাজিয়ানটেপ এলাকায় শক্তিশালী ভূমিকম্প অনুভূত হয়। স্থানীয় সময় সোমবার ভোর ৪টা ১৭ মিনিটে ৭.৮ মাত্রার শক্তিশালী এই ভূমিকম্প দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল কেঁপে উঠে। ভয়াবহ এই ভূমিকম্পে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এখন পর্যন্ত সাড়ে চার হাজারের মতো মানুষের মৃত্যুর খবর এসেছে। সময় যতই গড়াচ্ছে প্রাণহানির তালিকা ততই যুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন বহু মানুষের নাম।

পিএস/এমআর