আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১১:৩৪ এএম
তীব্র ভূমিকম্পের ধ্বংসের নগরিতে পরিণত হয়েছে তুরস্ক ও সিরিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। তুরস্কে সেনাবাহিনীসহ হাজার হাজার উদ্ধারকর্মী মরদেহ ও জীবিতদের উদ্ধারে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তবে একই ঘটনা সিরিয়ায় হলেও সেখানের পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন। ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে এমন কয়েকটি অঞ্চল দেশটির সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল প্রতিবেশী তুরস্কে হলেও সিরিয়াতেও বহু শত মানুষ মারা গেছে। এই দুর্যোগের ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ভিডিও এবং ছবি উঠে আসছে। আলেপ্পোর উত্তর-পশ্চিমে এক শহর থেকে পাওয়া এক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে যে ভবনগুলি ধসে পড়ার সাথে সাথে ধুলোর বিশাল মেঘের মধ্য দিয়ে বাসিন্দারা পালিয়ে যাচ্ছে এবং চিৎকার করছে।
ভূমিকম্পে খুবই ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকা সরকারি নিয়ন্ত্রণে নেই। তাই সেখানে চিকিৎসা সেবা এবং জরুরি সরবরাহের সুযোগ সীমিত। সিরিয়ার বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় কাজ করা একটি ত্রাণ সংস্থা হোয়াইট হেলমেট জরুরি সাহায্যের আহ্বান জানিয়েছে।
বিদ্রোহীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চলে দামেস্ক সরকার এবং উদ্ধারকর্মীদের পরিসংখ্যান অনুসারে সিরিয়ায় দেড় হাজারের বেশি নিহত এবং প্রায় চার হাজার মানুষ আহত হয়েছেন।
তবে এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায়, দুর্গম অঞ্চল হওয়ায় ও উদ্ধার তৎপরতা ধীর গতিতে চলায় সঠিক ক্ষয়ক্ষতি জানা সম্ভব হচ্ছে না।
সিরায়ার আলেপ্পো, হামা এবং লাত্তাকিয়াসহ কয়েকটি অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়া উভয় দেশ দুর্যোগ ও জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
১১ বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে আগে থেকেই ধ্বংসাবস্থায় রয়েছে তুরস্ক। তার মধ্যে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছে।
এরই মধ্যে সিরীয় প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিশ্বনেতারা। আসাদের সঙ্গে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও।
জাতিসংঘ সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে মিলে কাজ করছে। জাতিসংঘের একজন শীর্ষ মানবিক কর্মকর্তা বলেছেন যে, জ্বালানীর ঘাটতি এবং কঠোর শীতের আবহাওয়া উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত করেছে।
দামেস্ক থেকে ভিডিও সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী এল-মোস্তফা বেনলামলিহ বলেন, 'অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা মানবিক কাজের জন্য যে রাস্তাগুলো ব্যবহার করতাম সেগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, কীভাবে মানুষের কাছে যাওয়া যায় সে বিষয়ে আমাদের সৃজনশীল হতে হবে। তবে আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি।'
সরকার-নিয়ন্ত্রিত শহর আলেপ্পোর একটি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, দুটি পাশাপাশি ভবন ধসে পড়ছে, রাস্তাগুলো ধুলোয় ভরে যাচ্ছে। যুদ্ধে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া শহরের দুই বাসিন্দা বলেছেন, ভূমিকম্পের কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভবনগুলো পড়ে গেছে।
সিরিয়ান হোয়াইট হেলমেটস এর রাইদ আল-সালেহ (বিদ্রোহী-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে উদ্ধারকারী পরিষেবা সংস্থা) বলছেন যে, তারা ধ্বংসস্তূপের নিচে থাকা ব্যক্তিদের জীবন বাঁচানোর জন্য যুদ্ধ করছে।
একে