images

আন্তর্জাতিক

ছিলেন নাইট গার্ড, এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ অক্টোবর ২০২২, ১২:২১ পিএম

'ইচ্ছা থাকল উপায় হয়' , বহু প্রচলিত এই প্রবাদ সত্যি করে দেখালেন ভারতের বিহারের ভাগলপুরের বাসিন্দা কমল কিশোর মণ্ডল। যেই বিশ্ববিদ্য়ালয়ে নাইট গার্ড-পিয়ন হিসেবে কাজ করতেন তিনি, সেই বিশ্ববিদ্যালয়েরই এখন অধ্যাপক তিনি। কিছুদিন আগে পর্যন্ত অনেকের টেবিলে চা-নাস্তা এগিয়ে দেওয়াই ছিল তার কাজ। এখন সেই বিশ্ববিদ্যালয়েই তার হাতে তৈরি হবে নতুন প্রজন্ম। কমল কিশোর মণ্ডলের সাফল্যে রীতিমতো অভিভূত পরিবার।

রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক কমল কিশোরকে চাকরিতে ঢুকতে হয়েছিল মাত্র ২৩ বছর বয়সে। তার বাবা একটি চায়ের দোকানে কাজ করতেন। কিন্তু, ২০০৩ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। অগত্যা পরিবারের হাল ধরতে হয় কমল কিশোরকে। ভাগলপুরের মুণ্ডিচক এলাকার বাসিন্দা সেই বছরই আরডি এন্ড ডিজে কলেজে নাইট গার্ডের চাকরিতে ঢোকেন। নাইট গার্ডের চাকরি করেও পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ হারাননি কমল কিশোর। বরাবর স্বপ্ন দেখে এসেছেন জীবনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য।

নাইট গার্ডের কাজ করতে করতেই পড়াশোনা এগিয়ে নেন কমল কিশোর। এই বিষয়ে তিনি অনুমতি চান কর্তৃপক্ষের তরফে। এরপর ২০০৯ সালে তিনি এমএ পড়া শুরু করেন। কিন্তু, এমএ পাশ করার পরেই নিজেকে থামিয়ে রাখতে চাননি কমল কিশোর। নাইট গার্ডের চাকরি করতে করতেই তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন প্রফেসর হওয়ার। 

২০১২ সালে তিনি পিএইচডি করার অনুমতি পান। ২০১৩ সালে গবেষণা শুরু করেন তিনি। তার পিএইচডি শেষ হয় ২০১৯ সালে। এরপরেই তার লক্ষ্য ছিল স্বপ্নপূরণ। তিনি কলেজ শিক্ষকের যোগ্যতা পরিমাপক এনইটি পাশ করেন। ২০২০ সালে তার দীর্ঘ লড়াইয়ের ফল পেতে চলেছিলেন তিনি। বিহার স্টেট ইউনিভার্সিটির তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর পদে নিয়োগ রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে তার কলেজ যেখানে তিনি নাইট গার্ডের চাকরি করতেন। ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাক পেয়েছিলেন ১২ জন। কিন্তু, তাদের মধ্যে নির্বাচিত হয়েছিলেন কমল কিশোর মণ্ডল। ২০২২ সালে ১৯ মে এই নির্বাচন সংক্রান্ত ফলাফল ঘোষিত হয়।

ছেলের সাফল্যে খুশি কমল কিশোর মণ্ডলের বাবা গোপাল মণ্ডল। অন্যদিকে, কমল বলেন, 'আর্থিক কষ্ট বা সমস্যা এই বিষয়গুলোকে আমি কখনোই আমার পথের কাঁটা হতে দিইনি। আমি সকালে ক্লাস করতাম এবং রাতে ডিউটি। এরই মাঝে পড়াশোনার জন্য বার করতাম সময়।'

সূত্র: এই সময় 

একে