আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪১ পিএম
পাঁচ লাখ হিন্দু সন্ন্যাসী নিয়ে কলকাতায় বাংলাদেশের উপ-দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি দিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভার বিরোধী দলনেতা ও বিজেপি বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর কথিত নির্যাতনের অভিযোগ তুলে শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) কলকাতার বাংলাদেশ উপ-দূতাবাসে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে বিজেপি ও সাধু সন্ন্যাসীদের এক প্রতিনিধি দল। এর আগে উপ-দূতাবাস থেকে প্রায় ২০০ মিটার দূরে বেগবাগান মোড়ে বিক্ষোভ থেকে ৫ লাখ হিন্দু সন্ন্যাসী নিয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস ঘেরাওয়ের হুমকি দেন শুভেন্দু।
আননন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন চত্বর থেকে গেরুয়া কাপড় পরা সাধু-সন্তদের নিয়ে একটি মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের দিকে অগ্রসর হলে বেহালা বাগান মোড়ে কলকাতা পুলিশ সেটি আটকে দেয়। এরপর বিকাল ৫টা ২০ মিনিটের দিকে শুভেন্দু অধিকারী ও সাধুসন্ত সমাজের পাঁচ জনসহ ছয় সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রায় ৩০ মিনিট ডেপুটি হাইকমিশনের কার্যালয়ে বৈঠকের পর শুভেন্দু অধিকারী ও প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বাইরে বেরিয়ে আসেন।
উপদূতাবাস থেকে বেরিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘আমাদের দাবিগুলো ডেপুটি হাইকমিশনারের মাধ্যমে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে পৌঁছে দিতে উপদূতাবাসে এসেছিলাম।’
এসময় শুভেন্দুর অভিযোগ করেন, গত সোমবার থেকে তারা উপদূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করতে চাইছিলেন। কিন্তু তাদের সময় দেওয়া হয়নি। অবশেষে শুক্রবার দেখা করার সময় দেওয়া হয়েছিল।
স্মারকলিপির বিষয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘আমরা জানতে চেয়েছিলাম ময়মনসিংহের নিহত যুবক দীপুর অপরাধ কী? কেন তাকে ওই ভাবে খুন করা হল? সেই কারণ আমাদের দেখাতে পারেননি। আমাদের বলা হয়েছে, দীপু দাসের খুনের ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
উপ-দূতাবাসের বাইরে থেকেই পরবর্তী কর্মসূচির ঘোষণা করে তিনি বলেন, ‘আজকে এক হাজার সাধু এসেছেন, তিন হাজার নাগা সন্ন্যাসী। গঙ্গাসাগরে পাঁচ লাখ সাধু যাবেন। গঙ্গাসাগরের স্নান করে ফেরার পরে আমি সব সাধুকে বাবুঘাট থেকে পথ দেখিয়ে এখানে নিয়ে আসব। কত ক্ষমতা আছে (পুলিশ কমিশনার) মনোজ ভার্মার ওই দিন দেখা যাবে।’
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘মমতা যতই প্রাচীর করে, পুলিশ দিয়ে রাখুক, সরকারের তরফে যদি ব্যবস্থা না নেয়, তবে নতুন বছরের আগেই সব তুলে ফেলে দেব।’
তিনি আরও, রাজ্য বা কলকাতা পুলিশ কেউই তাদেরকে আটকাতে পারবে না। পুলিশ যতই উপ-দূতাবাসের বাইরে ব্যারিকেড বসিয়ে নিরাপত্তাবলয় তৈরি করুক, তা ভেঙে ফেলা হবে! যুবভারতী স্টেডিয়ামে যে ভাবে প্রতিবাদ হয়েছে, সেই ঢঙে প্রতিবাদের হুমকি দেন শুভেন্দু।
এদিকে গত মঙ্গলবার বাংলাদেশের উপ-দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ, এভিবিপি, হিন্দু জাগরণ মঞ্চ-সহ একাধিক সংগঠন। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে সাত জন নারীকে আগেই জামিন দিয়েছিল আদালত। শুক্রবার বাকি ১২ জনকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়।
সূত্র: আনন্দবাজার
এমএইচআর