images

আন্তর্জাতিক

ফিরে দেখা ২০২৫: গাজা গণহত্যা এবং বহু যুদ্ধ-সংঘাতের বছর

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৯ পিএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিগত কয়েক মাসে জোরালোভাবে দাবি করেছেন, তিনি ‘চলতি বছর আটটি যুদ্ধের অবসান ঘটিয়েছেন এবং বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ জীবন বাঁচিয়েছেন’। তবে বিশ্ব এখন তার এই দাবিকে মানতে নারাজ, যার যুক্তিসংগত কারণও রয়েছে।

গত ১০ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও দখল ইসরায়েল ফিলিস্তিনিদের বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যা করে চলেছে।

ইউক্রেনের যুদ্ধ, যা ট্রাম্প জানুয়ারিতে তার দ্বিতীয় মেয়াদ শুরু করার ২৪ ঘন্টার মধ্যে শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন- সেটিও অবিরামভাবে অব্যাহত রয়েছে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়ার সীমান্ত সংঘাত কিছুদিন বিরতির পর আবারও তীব্র আকার ধারণ করেছে। 

সুদানে চলা গৃহযুদ্ধ ইতিহাসের বৃহত্তম অভ্যন্তরীণ বেসামরিক বাস্তুচ্যুতির সূত্রপাত করেছে, লাখ লাখ মানুষ দেশটির সামরিক বাহিনী এবং আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে সংঘর্ষে আটকা পড়েছে।

অপর দিকে চলতি বছর মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে চলা গৃহযুদ্ধের এক তীব্র পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, যখন হাইতিতে গ্যাং সহিংসতা এবং সশস্ত্র সংঘাতের ফলে ১৪ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। 

ইসরায়েল ও ইরান বর্তমানে যুদ্ধ বন্ধ করে দিয়েছে এবং ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনাও চার দিনের মধ্যে শেষ হয়েছে, তবে এই দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা এখনো রয়ে গেছে এবং যেকোনো সময় আবারও সংঘাত শুরু হতে পারে। 

এছাড়াও স্বঘোষিত শান্তিরক্ষী ট্রাম্প ভেনেজুয়েলার বিরুদ্ধে তীব্রতম উত্তেজনার মধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছেন, যা আরও একটি যুদ্ধ শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছে।

বছরজুড়ে যুদ্ধ ও সংঘাতে অভূতপূর্ব সংখ্যক মানুষ নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন লেখক এবং ভূ-রাজনৈতিক সংঘাতের বিশেষজ্ঞ ড্যান স্টেইনবক ২০২৫ সালকে ‘অত্যন্ত অন্ধকার - অযৌক্তিক মানবিক ও অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতির বছর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। 

তার মতে, যথাযথ আন্তর্জাতিক কূটনীতির মাধ্যমে এই বিপুল ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনা এড়ানো যেত।

গাজার জন্য 'সবচেয়ে মারাত্মক বছর'

১২টি ইসরায়েলি অধিকার গোষ্ঠীর একটি সমন্বিত প্রতিবেদনে ২০২৫ সালকে ১৯৬৭ সালের পর থেকে ফিলিস্তিনিদের জন্য ‘সবচেয়ে মারাত্মক এবং ধ্বংসাত্মক বছর’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘২০২৩ এবং ২০২৪ সালে গাজায় গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছিল, কিন্তু ২০২৫ সালে পরিস্থিতি তীব্র অবনতি দেখা গেছে, মৃতের সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে, বাস্তুচ্যুতি প্রায় পুরো উপত্যকাজুড়ে বেড়েছে এবং ক্ষুধা ব্যাপক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে’।

image

২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৭০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এরমধ্যে শুধুমাত্র ২০২৫ সালেই ৩০ হাজারের এরও বেশি মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছে ইসরায়েলি মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো। 

এদিকে গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ বন্ধে ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনা উন্মোচন ট্রাম্প, এরপর ১০ অক্টোবর জাতিসংঘ এবং তুরস্কসহ প্রধান আঞ্চলিক শক্তির সমর্থিত যুদ্ধবিরতি শুরু হয়, যা গাজাসহ অন্যান্য ফিলিস্তিনি অঞ্চলে ইসরায়েলের গণহত্যা অবসানের আশা জাগিয়ে তুলেছিল। কিন্তু ইহুদিবাদী সরকার শুধু যুদ্ধের নিয়ম পরিবর্তন করেছে, যুদ্ধবিরতি সত্তেও গাজার বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ওপর প্রতিদিনই হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, যুদ্ধবিরতির পর থেকে ৪০০ জনের বেশি হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। আহত হয়েছেন আরও অনেক।  

তেহরান-ভিত্তিক ইরানি সাংবাদিক ফাতেমেহ করিমখান বলেন, গাজা যুদ্ধবিরতি ছিল এই বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশ্বিক ঘটনা। 

তার মতে, ইসরায়েলি সকল প্রচেষ্টা এবং মার্কিন সমর্থন সত্ত্বেও তেল আবিব গাজায় তাদের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হয়েছে এবং যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে বাধ্য হয়। 

ইউক্রেনে অচলাবস্থা 

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ হিসেবে শুরু হওয়া যুদ্ধ শেষ হওয়ার কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এবং এখন চতুর্থ বছরে গড়াতে যাচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির অনুপাতে এটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপে সবচেয়ে বড় সামরিক সংঘাত হিসেবে আর্ভিভূত হয়েছে। 

image

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প দ্বিতীয়বারের মতো হোয়াইট হাউসে প্রবেশ করেছিলেন ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শেষ ও পুতিনের সঙ্গে শান্তি স্থাপন’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে। বছরের শুরুতে কিছুটা অগ্রগতির আংশিক ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল। রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আক্রমণের পর প্রথমবার ওয়াশিংটন ও মস্কো সরাসরি আলোচনা করে। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ট্রাম্প নিয়মিত ফোনে কথা বলেন এবং গত আগস্টে আলাস্কায় বৈঠক করেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতি নাটকীয়ভাবে পাল্টে গেছে এবং এখনো ভয়াবহ যুদ্ধ অব্যহত রয়েছে। 

ইরান-ইসরায়েলের ১২ দিনের যুদ্ধ

২০২৫ সালের সবচেয়ে নাটকীয় উত্তেজনার সূত্রপাত করে ইসরায়েল। গত জুনে ইরানের সামরিক ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। জবাবে ইহুদিবাদী রাষ্ট্রে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা  চালায় তেহরান। এই সংঘাতে সরাসরি যোগ দেয় যুক্তরাষ্ট্রও এবং ইরানের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু স্থাপনা— ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইসফাহান হামলা চালায়। পরে সেই যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্ততায় ১২ দিনের সংঘাত শেষ হয়।   

ইসরায়েলি ও মার্কিন হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোর কতটা ক্ষতি হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। মার্কিন ও ইউরোপীয় গোয়েন্দা সংস্থা গোয়েন্দারা তাদের প্রাথমিক মূল্যায়নে জানিয়েছেন, হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির মূল উপাদান ধ্বংস হয়নি, ইউরেনিয়াম আগেই সরানো হয়েছিল। এ হামলা দেশটির পারমাণবিক কার্যক্রম শুধুমাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে দিয়েছে। 

তবে, ইসরায়েলি হামলায় বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হারিয়েছে ইরান। অন্যদিকে, ইসরায়েলের কৌশলগত স্থাপনা ও সেনাঘাঁটিতে ভয়াবহ হামলা চালিয়ে ব্যপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের গর্বের ধন বিজ্ঞান গবেষণাগার ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের দপ্তর গুড়িয়ে দিয়েছে।

মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলে ইহুদিবাদী দেশটির প্রতিদিন প্রায় কয়েকশ মিলিয়ন ডলার খরচ হয়েছে। এই ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক চাপ এড়াতে ইসরায়েলি বিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতিবিদরা দ্রুত এই সংঘাতের অবসান ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে আসছিলেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন অনুসারে, ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মাসিক খরচ কমপক্ষে ১২ বিলিয়ন ডলার। 

ইরানের গণমাধ্যম দ্যা তাসনিম নিউজ জানিয়েছে, ইসরায়েলের বিশ্লেষকরা সতর্ক করে দিয়েছেন যে- যুদ্ধ যদি দুই সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হতো, তাহলে আর্থিক এবং কাঠামোগত চাপ নিয়ন্ত্রণ করা দেশটির পক্ষে সম্ভব হতো না।

ইসলামাবাদ-ভিত্তিক ইরান বিষয়ক বিশেষজ্ঞ আইমেন জামিল বলেন, ১২ দিনের এই যুদ্ধ তেহরান এবং তেল আবিবের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে চলা কৌশলগত অস্পষ্টতা এবং ছায়াযুদ্ধের অবসান ঘটায়, যা এটিকে ‘২০২৫ সালের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূ-রাজনৈতিক ঘটনা’ করে তোলে। 

অনান্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, ১২ দিনের এই যুদ্ধ অস্থিতিশীল অঞ্চলে আরও বিস্তৃত সংঘাতের সম্ভাবনা উন্মোচিত করেছে। দুই চির শত্রু দেশের মধ্যে উত্তেজনা অদূর ভবিষ্যতে আরও সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যেতে পারে। এটি মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতি পুনর্নির্ধারণ করার পাশাপাশি এই অঞ্চলের সমৃদ্ধ জ্বালানি বাজারে এর সম্ভাব্য প্রভাবও দেখা দেবে।

পারমাণবিক শক্তিধর দুই প্রতিবেশীর চার দিনের যুদ্ধ 

২০২৫ সালটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া জুড়ে উত্তেজনার বছর ছিল- এরমধ্যে অন্যতম ছিল চার দিনের পাকিস্তান-ভারত সংঘর্ষ, যা দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে ‘কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর সামরিক সংকট’ হিসাবে চিহ্নিত হয়েছিল।

গত ২২ এপ্রিল ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পহেলগামে বন্দুকবাজদের হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। মূলত পর্যটকদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। এই ঘটনার পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তুঙ্গে উঠে।

পহেলগামে হামলার দায় পাকিস্তানের ওপর চাপিয়ে গত ৭ মে পাকিস্তানের নয়াটি স্থানে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। পাল্টা জবাবে ইসলামাবাদও ব্যাপক ড্রোন হামলা চালায় নয়াদিল্লিতে। চার দিন ধরে উভয় দেশের মধ্যে সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করে। পরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় গত ১০ মে উভয় দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। 

এদিকে উত্তেজনা কিছুটা কমলেও দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতারা পাল্টা পাল্টি হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন। 

india-pakistan

সম্প্রতি ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী সম্প্রতি পাকিস্তানকে মানচিত্র থেকে মুছে দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। তিনি বলেন, পাকিস্তান যদি রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় সন্ত্রাসবাদ বন্ধ না করে, তাহলে ইতিহাস এবং ভূগোলে তাদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। তার এই বক্তব্যকে সরাসরি যুদ্ধ উসকে দেওয়ার শামিল বলে উল্লেখ করেছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী।

ভারতের এই ধরনের ‘উস্কানিমূলক ও ভিত্তিহীন’ মন্তব্যের জবাবে পাকিস্তানের আইএসপিআর (Inter-Services Public Relations) এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতের এই বক্তব্য আঞ্চলিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়াকে আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। তারা বলছে, ভারত বারবার নিজেদের ভুক্তভোগী হিসেবে তুলে ধরলেও বাস্তবে তারাই অঞ্চলজুড়ে সহিংসতা উসকে দিচ্ছে।

পাকিস্তান সতর্ক করে জানিয়েছে, আগ্রাসন চালানো হলে তারা দেরি করবে না। জবাব হবে দ্রুত, চূড়ান্ত এবং বিধ্বংসী। পাকিস্তান এখন এমন একটি ‘নতুন প্রতিক্রিয়া নীতি’ গ্রহণ করেছে, যা কোনো ধরনের দ্বিধা বা সংযম ছাড়াই কার্যকর করা হবে।

পাকিস্তানের সেনাবাহিনী আরও বলেছে, তারা শুধু সীমান্তে নয়, শত্রুর ভেতরে ঢুকেও আঘাত হানতে প্রস্তুত। তাদের ভাষায়, ‘শত্রুর ভূখণ্ডের প্রতিটি কোণায় যুদ্ধ পৌঁছে দেওয়ার সক্ষমতা পাকিস্তানের আছে এবং ভারতের তথাকথিত ভৌগোলিক নিরাপত্তার মিথ তারা ভেঙে দিতে পারবে।’ 

সুদানের বিপর্যয়

২০২৩ সালের এপ্রিলে উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদান ভয়াবহ গৃহযুদ্ধে মুখোমুখি। জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল বুরহানের নেতৃত্বাধীন সুদানী সেনাবাহিনী এবং মোহাম্মদ হামদান দাগালোর নেতৃত্বাধীন আধাসামরিক র‍্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) এর মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব শুরু হওয়ার এই যুদ্ধ ২০২৫ সালে সবচেয়ে রক্তাক্ত এবং পূর্ণাঙ্গ সংঘাতে পরিণত হয়েছে। প্রায় দেড় বছর ধরে চলা এই ধ্বংসাত্মক সংঘাতে ১ লাখ ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত। আহত হয়েছেন দ্বিগুণেরও বেশি মানুষ এবং আনুমানিক ১ কোটি ২০ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

এই বছরের অক্টোবরে উত্তর আফ্রিকার দেশ সুদানের গৃহযুদ্ধকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকট’ হিসাবে ঘোষণা করেছে জাতিসংঘ। 

আরএসএফের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ আনা হয়েছে, বিশেষ করে ১৮ মাস ধরে সুদানের উত্তর দারফুর রাজ্যের রাজধানী আল ফাশার দখল এবং সেখানে ব্যাপক প্রাণহানি ও অবরোধের লাখ লাখ মানুষের বাস্তুচ্যুতির কারণে।

sudan

সুদান এবং আফ্রিকা বিষয়ক বিশ্লেষক জিহাদ মাসমাহৌন বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত কেবল আরএসএফকেই নয়, বরং বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে বর্বর শক্তি প্রয়োগকারী অন্যান্য মিত্র সুদানী দলগুলোকেও সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত তালিকাভুক্ত করা। 

এমএইচআর