আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ পিএম
মঙ্গোলিয়ার সীমান্তের কাছে তিনটি সাইলো ফিল্ডে (সাধারণত কৃষিপণ্যের গুদাম) ১০০টিরও বেশি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) মোতায়েন করেছে চীন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের এক খসড়া প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
পেন্টাগনের প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, চীন বর্তমানে বিশ্বের অন্য যেকোনো পারমাণবিক শক্তিধর দেশের তুলনায় দ্রুতগতিতে তার অস্ত্রভাণ্ডার সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন করছে। তবে এ প্রতিবেদনকে ‘চীনকে কলঙ্কিত, অপমানিত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে বেইজিং।
গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি চীন ও রাশিয়ার সঙ্গে নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করতে পারেন। কিন্তু পেন্টাগনের খসড়া প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং এ ধরনের উদ্যোগে আগ্রহী বলে কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি।
প্রতিবেদনে পেন্টাগন বলেছে, ‘আমরা এখনও বেইজিংয়ের কাছ থেকে এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ বা আরও ব্যাপক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আলোচনার কোনও আগ্রহ দেখছি না।’
প্রতিবেদনে বিশেষভাবে বলা হয়েছে, চীন মঙ্গোলিয়া সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত সাইলো ফিল্ডগুলোতে ১০০টিরও বেশি সলিড-ফুয়েল ডিএফ-৩১ আইসিবিএম মোতায়েন করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পেন্টাগন আগেও এসব সাইলো ফিল্ডের অস্তিত্বের কথা জানিয়েছিল, তবে সেখানে কতগুলো ক্ষেপণাস্ত্র রয়েছে সে বিষয়ে এবারই প্রথম সংখ্যা উল্লেখ করা হলো।
পেন্টাগনের এই খসড়া প্রতিবেদনে নতুন করে মোতায়েন করা ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর সম্ভাব্য লক্ষ্যবস্তু সম্পর্কে কিছু জানানো হয়নি। তবে মার্কিন কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, মার্কিন আইন প্রণেতাদের কাছে পাঠানোর আগে প্রতিবেদনটি পরিবর্তন হতে পারে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০২৪ সালে চীনের পারমাণবিক ওয়ারহেডের সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০০-এর কিছু বেশি, যা আগের বছরগুলোর তুলনায় উৎপাদনের গতি কিছুটা কমার ইঙ্গিত দেয়। তবে চীনের পারমাণবিক সম্প্রসারণ অব্যাহত রয়েছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটি এক হাজারের বেশি ওয়ারহেডের মালিক হতে পারে।
এদিকে চীন বরাবরই দাবি করে আসছে, তারা আত্মরক্ষার জন্য পারমাণবিক কৌশল মেনে চলে এবং প্রথমে ব্যবহার না করার নীতি অনুসরণ করে।
পেন্টাগনের এই বিস্তৃত প্রতিবেদনে চীনের সামরিক গঠনের বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া হয়েছে এবং বলা হয়েছে, চীন ২০২৭ সালের শেষ নাগাদ তাইওয়ানকে কেন্দ্র করে একটি যুদ্ধ করতে এবং জয়ী হওয়ার সক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে।
এতে আরও বলা হয়, তাইওয়ান দখলের জন্য চীন তার সামরিক বিকল্পগুলো মধ্যে নিজ ভূখণ্ড থেকে ১,৫০০-২,০০০ নটিক্যাল মাইল দূরে হামলা অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। এই হামলাগুলো এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বা তার আশেপাশে মার্কিন ঘাঁটিগুলোকে গুরুতরভাবে চ্যালেঞ্জ এবং আঘাত করতে পারে।
সূত্র: রয়টার্স
এমএইচআর