আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:৪৭ পিএম
কলকাতার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন রাখতে দেবেন না বলে হুমকি দিয়েছেন ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান শুভেন্দু অধিকারী।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) কলকাতার পার্ক সার্কাস এলাকায় বাংলাদেশের উপদূতাবাসের সামনে বাংলাদেশের ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু দাস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে শুভেন্দুর নেতৃত্বে বিক্ষোভ করে হিন্দুত্ববাদী বেশ কয়েকটি সংগঠন। একই সঙ্গে এ বিষয়ে বাংলাদেশের উপদূতাবাসে একটি স্মারকলিপি দেওয়ার চেষ্টা করে তারা। তবে পুলিশি বাধায় দূতাবাসের কাছে পৌঁছাতে পারেনি, এতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীও রাস্তায় বসে পড়েছিলেন।
এ সময় তিনি ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে বলেন, ‘দীপুকে জীবন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে মারা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশ হাইকমিশনকে এখানে থাকতে দেব না। তাদের এটি তালাবদ্ধ করতে হবে। আগামী ২৪ ডিসেম্বর সীমান্তে এক ঘণ্টার প্রতীকি অবরোধ হবে এবং ২৬ ডিসেম্বর আমরা আবারও এখনো জড়ো হবো।’
#WATCH | Kolkata, West Bengal: State LoP and BJP leader Suvendu Adhikari says, "Dipu Das was burnt alive. We will not allow them to sit here (Bangladesh High Commission). They will have to lock this up. On 24th December, there will be a 1-hour blockade at the border and on 26th… https://t.co/WyU5IFU63g pic.twitter.com/X1gq2xDLcf
— ANI (@ANI) December 22, 2025
এমন উস্কানিমূলক বক্তব্যের সময় তার আশপাশের মানুষকে জয় শ্রী রাম স্লোগান দিতে শোনা গেছে।
অন্যদিকে আসামের ৫০টিরও বেশি জায়গায় ওই একই ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখিয়েছে ‘বাঙালি পরিষদ, আসাম’। প্রতিটা কর্মসূচীতেই বাংলাদেশের অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়।
সংগঠনটির রাজ্য সভাপতি ডাঃ শান্তনু কুমার সান্যাল জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি জমা দিয়ে ভারত সরকারের কাছে আবেদন করেছেন যাতে “বাংলাদেশের হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য” আন্তর্জাতিক মহলের কাছেও বিষয়টিকে তুলে ধরে।
এছাড়াও দুই দফা হামলার জেরে ভারতের দিল্লিতে অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে দেওয়া সব ধরনের সেবা ও ভিসা কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
গত শনি ও রোববার (২০ ও ২১ ডিসেম্বর) দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পরপর দুদিনই হামলা চালানো হয়। এর মধ্যে গতকাল রোববার (২১ ডিসেম্বর) বিকেলে প্রায় দুই শতাধিক দুষ্কৃতিকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটকের সামনে জড়ো হয়ে বাংলাদেশবিরোধী নানা স্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে তারা সংঘবদ্ধভাবে হাইকমিশনে হামলা চালায়।
হামলাকারীরা ‘অখণ্ড হিন্দুরাষ্ট্র’ নামের একটি উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। সংগঠনটি প্রকাশ্যেই বাংলাদেশকে তথাকথিত অখণ্ড ভারতের অংশ করার ঘোষণা দিয়ে আসছে।
একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত ভারতীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্যরা কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেননি। বরং অভিযোগ রয়েছে, তাদের কেউ কেউ হামলাকারীদের নীরব সমর্থন ও উৎসাহ দিয়েছেন।
এদিকে পরপর দুই দিন এ ধরনের সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে হাইকমিশনে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা চরম নিরাপত্তাহীনতা ও আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ই ডিসেম্বর বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার ভালুকায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী একজন পোশাক শ্রমিককে ধর্ম নিয়ে কটূক্তির অভিযোগ তুলে দলবদ্ধ হয়ে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ১২ আসামির ৩ দিনের রিমান্ড এ ঘটনায় গ্রেফতার হওয়া ১২ আসামির ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সূত্র: এএনআই, বিবিসি
এমএইচআর