আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৮:১২ এএম
সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক’ সামরিক অভিযান চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে মার্কিন বাহিনীর ওপর সাম্প্রতিক প্রাণঘাতী হামলার জবাবে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন।
যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানায়, সিরিয়ার মধ্যাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে আইএসের অন্তত ৭০টির বেশি লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়েছে। এতে যুদ্ধবিমান, আক্রমণকারী হেলিকপ্টার ও কামান ব্যবহার করা হয়। অভিযানে জর্ডানের বিমানও অংশ নেয়।
সেন্টকমের তথ্য অনুযায়ী, ‘অপারেশন হকআই স্ট্রাইক’ নামের এই অভিযানে ১০০টিরও বেশি নির্ভুল অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। আইএসের পরিচিত অবকাঠামো ও অস্ত্র মজুতের স্থানগুলো ছিল হামলার লক্ষ্য।
গত ১৩ ডিসেম্বর সিরিয়ার প্রাচীন শহর পালমিরায় আইএসের এক অতর্কিত হামলায় দুই মার্কিন সেনা ও একজন মার্কিন বেসামরিক দোভাষী নিহত হন। ওই ঘটনার পরই আইএসের ঘাঁটির বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়ার ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, আইএসের শক্ত অবস্থানগুলোতে ‘খুব জোরালোভাবে’ হামলা চালানো হচ্ছে।
সামাজিক মাধ্যমে এক্সে দেওয়া বিবৃতিতে সেন্টকম জানায়, শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা থেকে অভিযান শুরু হয়। সেন্টকমের প্রধান অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও তার অংশীদারদের ক্ষতি করতে চাওয়া সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ বলেন, এই অভিযান কোনো যুদ্ধের সূচনা নয়; এটি প্রতিশোধের ঘোষণা। তার ভাষায়, ‘যদি কেউ পৃথিবীর যেকোনো স্থানে আমেরিকানদের লক্ষ্য করে হামলা চালায়, যুক্তরাষ্ট্র তাকে খুঁজে বের করবে এবং হত্যা করবে।’
ট্রুথ সোশ্যাল-এ দেওয়া এক পোস্টে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘হত্যাকারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আমি যে কঠোর প্রতিশোধের কথা বলেছিলাম, সেটিই বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।’ তিনি দাবি করেন, এই অভিযানে সিরিয়া সরকারের সমর্থন রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস (এসওএইচআর) জানায়, রাক্কা ও দেইর আজ-জোর শহরের আশপাশে আইএসের অবস্থান লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে। এতে আইএসের এক শীর্ষ নেতা ও কয়েকজন যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলে দাবি সংস্থাটির। তবে আইএস এ বিষয়ে এখনো কোনো মন্তব্য করেনি।
সেন্টকমের দাবি, পালমিরার হামলাটি আইএসের এক বন্দুকধারী চালিয়েছিল এবং তাকে ঘটনাস্থলেই হত্যা করা হয়। ওই হামলায় আরো তিন মার্কিন সেনা আহত হন। পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা বলেন, হামলাটি এমন এক এলাকায় ঘটেছে, যেখানে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণ নেই।
অন্যদিকে এসওএইচআর দাবি করেছে, হামলাকারী ব্যক্তি সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য ছিলেন। এখন পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি এবং হামলাকারীর পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি। সূত্র বিবিসি।
এমআর