আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:২৬ পিএম
মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমার প্রত্যাশা এবং ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে স্বর্ণের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিশ্ববাজারে সোমবার মূল্যবান এই ধাতুটির দাম ১ শতাংশ বেড়ে সাত সপ্তাহের মধ্যে সর্বোচ্চে দরে পৌঁছেছে। একই সঙ্গে আরেক মূল্যবান ধাতু রুপার দামও ঊর্ধ্বমুখী।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটে (গ্রিনিজ টাইম) স্পট মার্কেটে স্বর্ণের দাম প্রতি আউন্সে ১ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩৪৩ দশমিক ৯৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে, যা গত ২১ অক্টোবরের পর থেকে সর্বোচ্চ।
একই সময়ে ফেব্রুয়ারিতে ডেলিভারির জন্য মার্কিন স্বর্ণের ফিউচার গোল্ডের দাম আউন্সপ্রতি ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ৪ হাজার ৩৭৭ দশমিক ৮০ ডলারে লেনদেন হয়েছে।
অন্যদিকে শিল্প চাহিদা বৃদ্ধি, মজুদ হ্রাস এবং যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক গুরুত্বপূর্ণ খনিজ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করার ফলে, সোমবার সেশনের শুরুতে স্পট সিলভারের দাম প্রতি আউন্সে ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ ৬৩ দশমিক ৭৬ ডলারে লেনদেন হচ্ছে, যদিও গত শুক্রবার সাদা ধাতুটির দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ ৬৪ দশমিক ৬৫ ডলার ছুঁয়েছিল।
আরও পড়ুন
মূলত, সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু দুর্বল অর্থনৈতিক ডেটা এবং ফেড কর্মকর্তাদের নরম মন্তব্যের পর ডিসেম্বরের সুদ কমানোর সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়েছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত দুই সপ্তাহে সুদের হার কমানোর প্রত্যাশার কারণে স্বল্পমেয়াদে স্বর্ণের দাম পুনরুদ্ধার হয়েছে। বাজার এখন যেকোনো মার্কিন অর্থনৈতিক তথ্য খুব সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। কারণ সুদের হার কমলে স্বর্ণের মতো সুদবিহীন সম্পদের চাহিদা বাড়ে।
ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো বলেছেন, ‘২০২৬ সালে আরও কম সুদের হারের প্রত্যাশা শুরু করেছেন বিনিয়োগকারী, যা স্বর্ণের দাম বৃদ্ধিতে সমর্থন করছে।’
অন্যদিকে ইউরোপের দেশগুলোর বিভিন্ন ব্যাংকে গচ্ছিত রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২ হাজার ৪৬০ কোটি ডলারের (২১০ বিলিয়ন ইউরো) সমপরিমাণ অর্থ ও সম্পদ অনির্দিষ্টকালের জন্য জব্দ করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার অর্থ ব্যবস্থা দুর্বল করতেই এসব পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং জব্দ অর্থ ইউক্রেনকে ঋণ হিসেবে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে ইইউর। এতে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়েছে।
এরআগে গত ২০ অক্টোবর স্বণের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৩৮১ দশমিক ২১ ডলারে পৌঁছায়, এতে চলতি বছর মূলবান এই ধাতুর মূল্য ৫৩ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়। তবে মার্কিন ডলারের শক্তিশালী হওয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র–চীন বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা প্রশমিত হওয়ায় কমতে থাকে স্বর্ণের দাম।
এদিকে ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি, দুর্বল আর্থিক নীতি এবং ক্রমাগত বাজেট ঘাটতির কথা উল্লেখ করে আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটস তাদের দীর্ঘমেয়াদী স্বণের দামের পূর্বাভাস ২০২৬ সালে গড়ে প্রতি আউন্স ৪ হাজার ৬০০ ডলার এবং ২০২৭ সালে প্রতি আউন্স ৫ হাজার ১০০ ডলারে উন্নীত করেছে।
সূত্র: রয়টার্স
এমএইচআর