আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৪:১১ পিএম
রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল না কিনতে ভারতের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের যে তুমুল চাপ তার সমালোচনা করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি রাশিয়ার তেল কিনতে পারে, তাহলে ভারত পারবে না কেন?’
দুই দিনের ভারত সফরে পুতিন নয়া দিল্লিতে নামার কয়েক ঘণ্টা পর সম্প্রচারমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে রুশ প্রেসিডেন্টের এক সাক্ষাৎকার প্রচার করে। সেখানেই তাকে তেল কেনা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের সমালোচনা করতে দেখা গেছে।
রুশ প্রেসিডেন্টের এবারের ভারত সফরে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য, সামরিক খাত ঘিরে বেশ কয়েকটি চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সোভিয়েত ইউনিয়নের সময়কাল থেকেই নয়া দিল্লি ও মস্কোর মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বিদ্যমান। দশককাল ধরে ভারতের অস্ত্র কেনার প্রধান উৎসও রাশিয়া।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরুর পর ভারত সমুদ্রপথে রুশ তেলের অন্যতম বড় ক্রেতায় পরিণত হয়।
তবে এ কারণে নয়া দিল্লির পণ্যে যুক্তরাষ্ট্র শাস্তিমূলক শুল্কও আরোপ করে। ওই শুল্কের কারণে ভারতীয় কোম্পানিগুলো রাশিয়ার তেল কেনা কমিয়ে দেওয়ায় চলতি মাসে ভারতে তিন বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম অপরিশোধিত তেল আমদানি হচ্ছে। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, ভারত রুশ তেল কিনে ইউক্রেনে পুতিনের যুদ্ধে সহায়তা করছে।
ইন্ডিয়া টুডেকে পুতিন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র নিজেই আমাদের কাছ থেকে পারমাণবিক জ্বালানি কেনে। সেটাওতো জ্বালানি। যুক্তরাষ্ট্রের যদি আমাদের জ্বালানি কেনার অধিকার থাকে, তাহলে ভারতের সেই সুযোগ থাকবে না কেন? এই প্রশ্নটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করার যোগ্য, আমরা এটি নিয়ে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত, এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গেও।’
মস্কোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করে ভারত ট্রাম্পের শাস্তিমূলক শুল্ককে ‘অন্যায্য ও অযৌক্তিক’ আখ্যা দিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখনও তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে শুরু করে সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামসহ শত শত কোটি ডলারের রুশ পণ্য কেনা অব্যাহত রেখেছে।
প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, ‘চলতি বছরের প্রথম নয় মাসে সামগ্রিক বাণিজ্য লেনদেনে কিছুটা পতন দেখা যাচ্ছে। এটা সামান্য। মোটাদাগে আমাদের বাণিজ্য লেনদেন মোটামুটি আগের মতোই আছে। ভারতে পেট্রোলিয়াম পণ্য ও অপরিশোধিত তেল, বিশেষ করে রাশিয়ান তেলের বাণিজ্য স্বাভাবিকভাবেই চলছে।’
ট্রাম্প এবং তার শুল্ককে ভারত-রাশিয়া কীভাবে মোকাবিলা করবে এ প্রশ্নের জবাবে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন কিছু উপদেষ্টা আছেন, যারা মনে করেন, তাদের এমন শুল্ক নীতিতে আদতে মার্কিন অর্থনীতির উপকার হবে। আমরা আশা করি, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার যে সকল নিয়ম লঙ্ঘিত হচ্ছে, তা ঠিক করা হবে।’
এফএ