আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৪ এএম
পাকিস্তানে সংবিধান সংশোধন ঘিরে ক্রমশ বাড়ছে বিচারবিভাগীয় ‘সঙ্কট’। সংবিধান সংশোধনের প্রতিবাদে পদত্যাগ করলেন আরও এক পাকিস্তানি বিচারপতি।
এবার লাহোর হাইকোর্টের এক বিচারপতি পদত্যাগ করলেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি সংশোধনীর সমালোচনা করে পদত্যাগ করেছেন।
সম্প্রতি পাকিস্তানের সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। তার জন্য বিশেষ আইনি রক্ষাকবচের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
পাক সেনা সর্বাধিনায়কের বিরুদ্ধে কোনও মামলা করা যাবে না আদালতে। এর পাশাপাশি খর্ব করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতাও।
সংশোধনী অনুসারে, সংবিধান সংক্রান্ত যাবতীয় মামলার ভার সুপ্রিম কোর্টের হাত থেকে কেড়ে নতুন সাংবিধানিক আদালতে পাঠানোর কথা বলা হয়েছে।
বিরোধীদের অভিযোগ, এর ফলে পাকিস্তানের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আরও দুর্বল হবে। শক্তিশালী হবে সেনাবাহিনী।
এই সংশোধনীতে ইতিমধ্যে অনুমোদন দিয়েছেন পাক প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি। তার পর পরই গত বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টে পদত্যাগ করেন বিচারপতি সৈয়দ মনসুর আলি শাহ এবং বিচারপতি আথার মিনাল্লাহ।
তাদের বক্তব্য, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারব্যবস্থা এবং সংবিধানের অপমান করা হয়েছে। এবার পদত্যাগ করলেন লাহৌর হাই কোর্টের বিচারপতি শামস মেহমুদ মির্জাও।
সংবিধান সংশোধনীর প্রতিবাদের আঁচ এবার পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট থেকে ছড়াল হাই কোর্টেও। সংবাদসংস্থা পিটিআই জানাচ্ছে, পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল তেহরিক-ই-ইনসাফের দলের এক নেতার আত্মীয় লাহৌর হাই কোর্ট থেকে পদত্যাগ করা এই বিচারপতি।
আদালতের ক্ষমতা খর্বের অভিযোগের পাশাপাশি সেনার ক্ষমতাও বাড়ানোর অভিযোগ উঠেছে পাকিস্তানে। গত বৃহস্পতিবার পাক প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সরকার ‘চিফ অফ আর্মি স্টাফ’ (স্থলসেনা প্রধান) ফিল্ড মার্শাল মুনিরকে ‘চিফ অফ ডিফেন্স ফোর্সেস’ (সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান বা সেনা সর্বাধিনায়ক) পদে উন্নীত করার জন্য পাক সংবিধানের ২৪৩ নম্বর ধারা সংশোধনের বিল পাশ করিয়েছে।
পাক সংবিধানে সশস্ত্র বাহিনীর তিন শাখার (স্থল, নৌ ও বায়ুসেনা) প্রধানের মাথার উপর কোনও পদের অস্তিত্ব এতদিন ছিল না। মুনিরের জন্য বিশেষ ভাবে পদটি তৈরি করা হয়েছে।
-এমএমএস