images

আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের চাপে নিরাপত্তা চুক্তির পথে সিরিয়া-ইসরায়েল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০২ এএম

মার্কিন চাপে ইসরায়েলের সঙ্গে আংশিক নিরাপত্তা চুক্তির পথে এগোচ্ছে সিরিয়া। আলোচনার বিষয়ে অবহিত একাধিক সূত্র জানিয়েছে, চুক্তিটি সম্পূর্ণ শান্তিচুক্তি না হলেও দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে কৌশলগত সমঝোতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। সিরিয়া আশা করছে, এই চুক্তি বাস্তবায়িত হলে ইসরায়েল দখল করা সীমান্ত এলাকা থেকে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং দেশটির অভ্যন্তরে হামলা বন্ধ করবে।

সূত্র বলছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বিশ্ব নেতারা যখন একত্র হবেন, তখন এই চুক্তি বা এর অগ্রগতি নিয়ে কোনো ঘোষণা আসতে পারে। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র—বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর ব্যাপক চাপ প্রয়োগ করছেন। মার্কিন কর্মকর্তারা চান, এই উদ্যোগের মাধ্যমে ট্রাম্প নিজেকে মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রতিষ্ঠায় সফল একজন কূটনৈতিক নেতা হিসেবে তুলে ধরতে পারেন।

যদিও সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই এবং উভয় দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে, তারপরও কিছু নির্দিষ্ট ইস্যুতে সমঝোতায় আসার চেষ্টা চলছে। সিরিয়ার পক্ষ থেকে যেসব দাবি তোলা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে: ইসরায়েল যেন দখলকৃত সীমান্ত অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে, ১৯৭৪ সালের যুদ্ধবিরতির শর্তে নির্ধারিত বাফার জোন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে এবং সিরিয়ার ভূখণ্ডে বিমান হামলা ও স্থল অনুপ্রবেশ বন্ধ করে।

তবে এই আলোচনায় সবচেয়ে বিতর্কিত ইস্যু— গোলান মালভূমি। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে ইসরায়েল এ এলাকা দখল করে নেয় এবং ১৯৮১ সালে একতরফাভাবে এটিকে নিজেদের ভূখণ্ড হিসেবে ঘোষণা করে। সিরিয়ার দাবি অনুযায়ী, গোলান মালভূমি তার বৈধ ভূখণ্ড এবং তা ফিরিয়ে দেওয়া না হলে পূর্ণাঙ্গ শান্তিচুক্তি সম্ভব নয়। যদিও বর্তমান আলোচনায় গোলান ইস্যু সরাসরি অন্তর্ভুক্ত নেই এবং তা ভবিষ্যতের জন্য রেখে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে একটি সিরিয়ান সূত্র।

ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে এই আলোচনার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। রয়টার্সের পক্ষ থেকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং আলোচনায় নেতৃত্ব দেওয়া কৌশলগত বিষয়ক মন্ত্রী রন ডার্মারের কার্যালয়ে যোগাযোগ করা হলেও তারা কোনো উত্তর দেয়নি। তবে ইসরায়েলি নিরাপত্তা সূত্র জানিয়েছে, এই আলোচনা মূলত যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপূরণের অংশ। ট্রাম্প চাচ্ছেন, আগামী নির্বাচনের আগে মধ্যপ্রাচ্যে  ‘সফল কূটনৈতিক অর্জন’ তার নামে যুক্ত হোক।

সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে শেষবার কোনো ধরনের সমঝোতা হয়েছিল ১৯৭৪ সালে, গোলান মালভূমি ঘিরে উত্তেজনার পর যুদ্ধবিরতি ও নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির মাধ্যমে। এরপর থেকে দুই দেশের মধ্যে বেশ কয়েকবার সীমান্ত সংঘর্ষ, বিমান হামলা এবং সামরিক উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সিরিয়া এখন ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা এবং সীমান্ত দখলের মুখে কিছুটা চাপের মধ্যে রয়েছে। বিশেষ করে, গত কয়েক মাসে ইসরায়েল সিরিয়ার অভ্যন্তরে একাধিক হামলা চালিয়েছে এবং সীমান্তে সেনা মোতায়েন জোরদার করেছে। সূত্র: রয়টার্স 

এইউ