আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:০১ পিএম
নেপালজুড়ে জেন জি নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভে ২০০ বিলিয়ন নেপালি রুপিরও বেশি মূল্যের সরকারি অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে বলে ধারণা করছেন দেশটির সরকারি কর্মকর্তারা। বিভিন্ন ভবন ধ্বংসের পাশাপাশি ঐতিহাসিক দলিলপত্র এবং নথিও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দেশটির নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সিংহ দরবার (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও সচিবালয়), পার্লামেন্ট ভবন এবং সুপ্রিম কোর্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলো মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এগুলো তৈরিতে বিলিয়ন বিলিয়ন রুপি খরচ হয়েছিল।
মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র বলেছেন, ‘এই স্থাপনাগুলোর বেশিরভাগই সংস্কারের অযোগ্য। ভূমিকম্পের পর ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত করা গেলেও এগুলো সেভাবে করা যাবে না। এ স্থাপনাগুলো নতুন করে তৈরি করতে প্রায় ২০০ বিলিয়ন রুপি খরচ হবে।’
তিনি আরও জানান, এই হিসাবের মধ্যে শুধু ভবনগুলোর খরচ ধরা হয়েছে। এরসঙ্গে অফিস স্থাপন এবং ব্যবস্থাপনার জন্য প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত আরও কয়েক বিলিয়ন রুপি প্রয়োজন হবে।
এদিকে রাজধানী কাঠমান্ডুর বাইরেও সরকারি অবকাঠামোতেও ধ্বংসযজ্ঞ জালিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। একাধিক প্রদেশের বিধানসভা হল, মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়, কারাগার, পুলিশ স্টেশন, ভূমি ও রাজস্ব অফিস এবং অসংখ্য পৌর ওয়ার্ডের ভবন পুড়িয়ে দিয়েছেন।
মন্ত্রণালয়ের একজন প্রকৌশলী বলেন, ‘কখন, কীভাবে এবং কোন খাতের অর্থ দিয়ে এই কাঠামোগুলো পুনর্নির্মাণ করা যেতে পারে সেটিই এখন বড় চিন্তার বিষয়।’
নগর উন্নয়ন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেছে রাজধানী কাঠমান্ডুতে। তবে পোখারা, ইতাহারি, জনকপুর, ধানগধি এবং বিরাটনগরের মতো বড় শহরগুলোতেও সরকারি অফিসগুলোতে আগুন দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারের গণবিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিক্ষোভকারীা শুধুমাত্র সরকারি প্রতিষ্ঠানই নয়, তারা ব্যক্তিগত সম্পদকেও লক্ষ্যবস্তু করেছে। রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি, ব্যবসায়িক কমপ্লেক্স, পর্যটন অবকাঠামো, গাড়ির শোরুম, গণমাধ্যম কার্যালয়সহ অনেক কিছুতে আগুন দিয়েছেন।
এদিকে এই ধ্বংসযজ্ঞ নেপালের রাষ্ট্রযন্ত্রকে পঙ্গু করে দিয়েছে এবং সরকারি কর্মকাণ্ড থমকে গেছে। সুপ্রিম কোর্টের ভবন পুড়িয়ে দেওয়ায় এখন তাঁবুতে অফিস বানিয়ে কাজ চালানোর চেষ্টা করলেও সিংহ দরবার, নির্বাহী কেন্দ্র, বানেশ্বরের সংসদ ভবন পুড়ে গেছে। এ অবস্থায় নতুন সরকার গঠন হলে ওই সরকারের আইন প্রণেতারা কোথায় মিলিত হবেন তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
গত সোমবার বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে পুলিশ। এতে ১৯ জন মারা গেলে বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। মঙ্গলবার সকাল থেকেই আন্দোলনকারীরা সরকারি স্থাপনাগুলোতে আগুন দেওয়া শুরু করে। এই গণবিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় দেড় হাজার মানুষ।
সূত্র: খবরহাব
এমএইচআর