images

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে পদ্মা সেতু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৫ জুন ২০২২, ০৬:৫৪ পিএম

বাংলাদেশের ইতিহাসে ২৫ জুন একটি স্মরণীয় অধ্যায়। কারণ এ দিনে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলা ১২টার দিকে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী ফলক ও মুরাল-১ উন্মোচন করেন। এ সময় বাংলাদেশ ও বিদেশের অসংখ্য অতিথি উপস্থিত ছিলেন। এ সেতুটি দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলায় বৈপ্লবিক উন্নয়নের সূচনা করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ইতিহাসের এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোও সরব হয়ে উঠেছে।

পদ্মা সেতু নিয়ে চীন, পাকিস্তান, ভারত, মার্কিন, ফরাসি ও সিঙ্গাপুরের গণমাধ্যমগুলো চমৎকার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তারা বাংলাদেশের উন্নয়নে এ সেতুর গুরুত্ব নিয়ে বিস্তারিত তথ্যও দিয়েছে।

চীনের চায়না ডেইলি, চায়না রেডিও ইন্টারন্যাশনাল, সিনহুয়া নিউজ এজেন্সিসহ অন্যান্য গণমাধ্যমগুলো বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশ করেছে। পদ্মা সেতুর গঠন, গুরুত্ব, টোলসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে। 

সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পদ্মা সেতু বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বৃহৎ ও চ্যালেঞ্জিং অবকাঠামো প্রকল্প। ভবিষ্যতে এটা ট্রান্স এশিয়া রেলপথ নেটওয়ার্কের সাথে যুক্ত হবে।

চীনের পিপলস ডেইলিকে পদ্মা সেতুর ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডেপুটি হেড জো লিন বলেন, ‘পদ্মা সেতুর ফলে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ স্বল্প সময়ে দেশটির রাজধানী ঢাকায় যেতে পারবেন। এ সময় তিনি এ সেতুটি নির্মাণে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথাও বলেছেন।

পাকিস্তানের দৈনিক পত্রিকা ‘ডেইলি টাইমস’ ও ‘উইকলি ফ্রাইডে টাইমস’-এ প্রকাশিত নিবন্ধে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। এ সময় বঙ্গবন্ধু কন্যাকে উন্নয়নের মূর্ত প্রতীক বলে অভিহিত করা হয়েছে। এসব প্রবন্ধ ও নিবন্ধে পাকিস্তানি লেখকরা পদ্মা সেতুর গুরুত্ব নিয়ে কথা বলেছেন। তাদের মতে, ‘পদ্মা সেতুকে তারা শুধু একটি সেতু হিসেবে দেখছেন না। এটা সেতুর থেকেও বেশিকিছু।’

বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতেও পদ্মা সেতুকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। আনন্দবাজার পত্রিকা, হিন্দুস্তান টাইমস, সংবাদ প্রতিদিন, ইটিভি , এবিপি আনন্দ, এএনআই, দ্য ইকোনমিক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস এ বিষয়ে বিশেষ সংবাদ পরিবেশন করেছে। দেশটির বাংলা ভাষার দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার শিরোনাম ছিলো ‘পদ্মা সেতু: জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়! পদ্মা সেতু উদ্বোধনে হাসিনার কণ্ঠে সুকান্ত’। 

হিন্দুস্তান টাইমসের খবরেও পদ্মা সেতু উদ্বোধনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। স্মারক নোট প্রকাশ থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রীর টোল পরিশোধের খবর ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে তাদের প্রতিবেদনে।

ভারতের বার্তা সংস্থা এএনআই লিখেছে, বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্ন সত্য হলো: পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’।

সিঙ্গাপুরভিত্তিক দৈনিক দ্য স্ট্রেইট টাইমস এ বিষয়ে জানিয়েছে, বিদেশি ঋণের ফাঁদ ও আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা এড়িয়ে নির্মিত হলো বাংলাদেশের নতুন সেতু।

বিখ্যাত আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ তাদের শিরোনামে বলেছে, ‘এক দশক আগে বিশ্বব্যাংক কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত সেতু উন্মোচন করেছে বাংলাদেশ।’ তারা তাদের প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, এ সেতুটিকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত অর্জন বলে দেখা হচ্ছে। এ অবকাঠামোর কারণে বাংলাদেশের জিডিপি ১ শতাংশ বাড়বে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি পদ্মা সেতুর উদ্বোধন নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলেছে, দুর্নীতির অভিযোগ, মানব বলির গুজব ছড়িয়ে পিটুনির মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডসহ নানা ঘটন-অঘটনের পর শনিবার রাজধানী ঢাকার কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ সেতু খুলে দিয়েছে বাংলাদেশ।

যুক্তরাষ্ট্রের বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) তাদের প্রতিবেদনের শিরোনাম করেছে ‘বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন’। সেখানে তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার দেশের দীর্ঘতম সেতুর উদ্বোধন করেছেন। রাজনৈতিক সংঘাত ও দুর্নীতির অভিযোগের মধ্যেও এ সেতু নির্মাণ করতে সময় লেগেছে আট বছর।

এমইউ