আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩২ পিএম
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে আগামীকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) যুক্তরাষ্ট্রের আলাস্কা আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে ট্রাম্প-পুতিনের এই শান্তি আলোচনা ব্যর্থ হলে ভারতের ওপর আরোপিত শুল্ক আরও বৃদ্ধি পেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট।
বুধবার( ১৩ আগস্ট) ব্লুমবার্গের সাথে এক সাক্ষাৎকারে স্কট বেসেন্ট বলেন, ‘আমরা রাশিয়ান তেল কেনার জন্য ভারতের ওপর সেকেন্ডারি শুল্ক আরোপ করেছি। আমি দেখতে পাচ্ছি, আলাস্কায় ট্রাম্প ও পুতিনের বৈঠকে যদি পরিস্থিতি ঠিকঠাক না হয়, তাহলে ভারতের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা সেকেন্ডারি শুল্ক আরও বাড়তে পারে।’
গত বুধবার এক নির্বাহী আদেশে রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তি হিসেবে ভারতীয় পণ্যের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর ফলে আগের ২৫ শতাংশসহ ভারতের ওপর মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এর মধ্যে ২৫ শতাংশ ইতোমধ্যেই কার্যকর হয়েছে এবং বাকি ২৫ শতাংশ শুল্ক আগামী ২৮ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে।
এরআগে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (০৫ আগস্ট) মার্কির সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি কিনে সেই তেল আবার খোলা বাজারে বিক্রি করে লাভ করছে। তার ভাষায়, রাশিয়া ইউক্রেনে হত্যাকাণ্ড চালাচ্ছে, অথচ ভারত তাদের কাছ থেকে তেল কিনে সেগুলো আবার বিক্রি করে প্রচুর অর্থ আয় করছে।
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতকে ভালো বাণিজ্যিক মিত্র বলা যায় না। তারা আমাদের সঙ্গে প্রচুর ব্যবসা করে, আমাদের দেশে পণ্য রফতানি করে। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে তেমন বাণিজ্য করি না। এই অসম বাণিজ্যের কারণে আমরা তাদের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক দিয়েছি। তবে আমি মনে করি, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই শুল্ক উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ানো হবে।’
এদিকে অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে ট্রাম্পের এই পদক্ষেপকে ‘অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং ভিত্তীহীন’ বলেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউক্রেনে শুরুর পর রাশিয়ার জ্বালানি তেলসহ প্রায় সব পণ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোর জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। কিন্তু সে সময় জ্বালানির বাজার স্থিতিশীল রাখতে ভারতকে রাশিয়াার কাছ থেকে তেল কিনতে উৎসাহ দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
একই সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ রাশিয়া থেকে পণ্য আমদানি করছে বলে উল্লেখ করে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর রাশিয়ার সঙ্গে এই দেশগুলোর বাণিজ্য একটি পরিসংখ্যানও দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রকাশ্য হুমকি সত্ত্বেও মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ভারত।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া মন্তব্যে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চুক্তি রয়েছে। হঠাৎ করে সেই চুক্তি স্থগিত করা সম্ভব নয়।
সূত্র: এনডিটিভি
এমএইচআর