images

আন্তর্জাতিক

শুল্কবিরতির মেয়াদ আরও ৯০ দিন বাড়ালো চীন-যুক্তরাষ্ট্র 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম

অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের মেয়াদ  আরও ৯০ দিন বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এক যৌথ বিবৃতিতে বিশ্বের এই দুই বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জানিয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ঘোষিত একে অপরের পণ্যের ওপর তিন অঙ্কের শুল্ক আরও ৯০ দিনের জন্য- আগামী ১০ নভেম্বর পর্যন্ত স্থগিত থাকবে।

গত এপ্রিলে বিশ্বের অনেক দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন তখন যুক্তরাষ্ট্র – চীন বাণিজ্য উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। কেননা চীনের ওপর সবচেয়ে বেশি শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছিল। পরে আরও কয়েক ধাপে চীনা পণ্য আমদানিতে শুল্কহার পৌঁছায় ১৪৫ শতাংশে। জবাবে চীনও মার্কিন পণ্যে কয়েক দফায় ১২৫ শতাংশ পর্যন্ত পাল্টা শুল্ক আরোপ করে। এমন অবস্থায় আলোচনার মাধ্যমে একটি সমঝোতায় আসতে প্রথম মেয়াদে ৩ মাসের স্থগিতাদেশ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন। যার সময়সীমা ছিল ১২ আগস্ট পর্যন্ত। 

শেষ মুহূর্তে এসে সোমবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই শুল্ক বিরতি বাড়ানোর এক নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছেন। এর মানে হলো ওয়াশিংটন চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ আরও বিলম্বিত করবে এবং বেইজিং যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ১২৫ শতাংশের শুল্ক বিরতি অব্যাহত রাখবে।

এই চুক্তি অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র চীনা পন্য আমদানির ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক রাখবে এবং মার্কিন পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক রাখবে চীন।

হোয়াইট হাউস বলেছে, এই বিরতি বাড়লে বাণিজ্যে ভারসাম্যহীনতা নিরসন এবং অন্যায্য বাণিজ্য আচরণ মোকাবিলার জন্য আরও সময় মিলবে। কারণ ২০২৪ সালে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার, যা তাদের যে কোনো বাণিজ্য অংশীদারের মধ্যে সবচেয়ে বড়।

ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে উইন-উইন সহযোগিতাই সঠিক পথ; দমন ও নিয়ন্ত্রণ করা কোনো সমাধানে নিয়ে যাবে না।’

অন্যদিকে চীন বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের 'অযৌক্তিক' বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। একইসঙ্গে উভয় পক্ষের কোম্পানিগুলো লাভবান হওয়ার জন্য একসাথে কাজ করা এবং বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে চীন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এই আলোচনার লক্ষ্য যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের চীনে প্রবেশ বাড়ানো এবং জাতীয় নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলোও এর আওতায় থাকবে। দাম ও অর্থনীতিতে শুল্কের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগের মধ্যে উচ্চ শুল্ক ফিরিয়ে আনা হলে বাণিজ্যে আরও অস্থিরতা এবং অনিশ্চয়তার আরও ঝুঁকি থাকতো।

ব্রিটিশ সংবাদমাধম বিবিসি জানিয়েছে, দুই পক্ষই এখনো চীনের বিরল খনিজের প্রবেশাধিকার, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল ক্রয় এবং চীনের কাছে চিপসসহ উন্নত প্রযুক্তির বিক্রয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনায় রয়েছে।

সম্প্রতি কিছু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এর ফলে এএমডি ও এনভিডিয়ার মতো প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট চিপ চীনা কোম্পানিগুলোর কাছে আবার বিক্রি শুরু করতে পেরেছে। বিনিময়ে তাদের আয়ের ১৫ শতাংশ সরকারকে দিতে হবে। তবে যুক্তরাষ্ট্র টিকটককে তার চীনা মালিক বাইটড্যান্সের থেকে আলাদা করতে চেষ্টা করছে যেটির বিরোধিতা করেছে চীন।

যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুন মাসের তুলনায় ২০২৫ সালের জুনে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্য আমদানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। বছরের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে ১৬৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। যা কিনা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ কম। 

এমএইচআর