আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১০ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৩ এএম
ফিলিস্তিনের গাজায় নির্মম গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে যখন ইসরায়েলের সঙ্গে অস্ত্র ও বাণিজ্য বাতিলের দাবি উঠছে, ঠিক এ সময় তেলআবিবের সঙ্গে বড় বাণিজ্যচুক্তি করলো মিশর।
মিসর ইসরাইলের সঙ্গে ৩৫ বিলিয়ন ডলারের এক রেকর্ড গ্যাস চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যা ইসরায়েলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় রপ্তানি চুক্তি।
এর ফলে লেভায়াথান সমুদ্রতলীয় গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত ১৩০ বিলিয়ন ঘনমিটার (বিসিএম) গ্যাস মিশরে রপ্তানি করা হবে। খবর মিডল ইস্ট আইয়ের।
ইসরায়েলি জ্বালানি কোম্পানি নিউমেড গত বৃহস্পতিবার এই চুক্তির ঘোষণা দেয়। কোম্পানিটি লেভায়াথান গ্যাসক্ষেত্রের ৪৫.৩৪ শতাংশ মালিক।
আরও পড়ুন: জাতিসংঘে মার্কিন সহকারী দূত ট্যামি ব্রুস
২০১৮ সালে হওয়া আগের চুক্তির তুলনায় এটি প্রায় তিনগুণ বড়। সেই চুক্তি অনুযায়ী বছরে ৪.৫ বিসিএম গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছিল, যা গাজায় ইসরায়েলের হামলার পর একাধিকবার বন্ধ হয়েছিল।
নতুন চুক্তি কার্যকর হলে মিশরের জ্বালানি নির্ভরতা আরও বাড়বে, কারণ গত তিন বছরে দেশটির নিজস্ব গ্যাস উৎপাদন ধসে পড়েছে।
দেশটিতে বিদ্যুৎ সংকট তীব্র হওয়ায় গ্রীষ্মকালে লোডশেডিং বাড়ছে। ঘাটতি পূরণে মিসর তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি বাড়িয়েছে—২০২৫ সালে যার খরচ ১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে ইসরায়েল মিশরের মোট গ্যাস চাহিদার ১৫-২০ শতাংশ সরবরাহ করে। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম ‘মাদা মাসর’ জানিয়েছে, নতুন চুক্তিতে মিশর প্রতি বিসিএম গ্যাসের জন্য প্রায় ৩৫ মিলিয়ন ডলার বেশি দেবে, যা আগের তুলনায় ১৪.৮ শতাংশ বেশি।
চুক্তি কার্যকর নির্ভর করবে নতুন পাইপলাইন ও রপ্তানি অবকাঠামো নির্মাণের ওপর। প্রথম ধাপে ২০২৬ সালের শুরুর দিকে ২০ বিসিএম গ্যাস সরবরাহ শুরু হওয়ার কথা, তবে গাজায় ইসরায়েলি হামলার কারণে অবকাঠামো প্রকল্প স্থগিত রয়েছে।
দ্বিতীয় ধাপে ১১০ বিসিএম গ্যাস সরবরাহের জন্য ইসরায়েল-মিসর সীমান্তে নতুন স্থল পাইপলাইন তৈরি করতে হবে, যা এখনো শুরু হয়নি।
চুক্তি ঘোষণার মধ্যেই মিশরের অভ্যন্তরে গাজা অবরোধে কায়রোর তথাকথিত ভূমিকা নিয়ে জনঅসন্তোষ বাড়ছে। ইসরায়েলি অবরোধে প্রায় ২০০ ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা যাওয়ার খবর প্রকাশের পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়েছে।
গত জুলাইয়ে কায়রোতে পুলিশ স্টেশনে হামলা ও ইউরোপের বিভিন্ন রাজধানীতে মিশরীয় দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ হয়েছে রাফাহ ক্রসিং বন্ধের প্রতিবাদে।
তবে প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি এসব অভিযোগ ‘অযৌক্তিক’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যায় মিসরের সম্পৃক্ততার কথা অস্বীকার করেছেন।
-এমএমএস