আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ আগস্ট ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম
গাজা শহর দখলের নেওয়ার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর পরিকল্পনায় অনুমোদন করেছে দেশটির নিরাপত্তা মন্ত্রিসভা। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রায় দশ লাখ ফিলিস্তিনিকে জোরপূর্বক উপত্যকার দক্ষিণের নির্দিষ্ট অঞ্চলে স্থানান্তরিত করার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। তবে গাজা শহরের বহু ফিলিস্তিনি তাদের ভিটেমাটি ছাড়তে অস্বীকার করছেন। তাদের দাবি, নিজেদের ভূমিতেই তারা জীবন দেবেন, তবুও জন্মভূমি ছেড়ে যাবেন না।
গাজা শহরের বাসিন্দা উম্মে ইমরান নামে একজন ফিলিস্তিনি নারী কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরাকে জানান, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী তাদের শহর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য ক্রমাগত হুমকি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘তারা আমাদের বলে দক্ষিণে যাও, আল-মাওয়াসিতে যাও, কিন্তু এখন আর উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব বা পশ্চিমে কোথাও নিরাপদ জায়গা নেই। কেউই নিরাপদ নয়, কোনো স্থানই নিরাপদ নয়। আমরা এখানেই থাকব।'
তার মা, উম্মে ইয়াসেরও একই সঙ্কল্পে অটল।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাজা সিটি ছাড়ব না। আমরা এখানেই বাঁচব এবং এখানেই মরব। আমাদের সমস্ত স্মৃতি এখানে জড়িয়ে আছে, আমরা তা ছেড়ে যাব না। এমনকি যদি আমাদের সবাইকে মরতে হয়, আমাদের সন্তানরাও যদি মারা যায়, আমাদের ঘরবাড়িও ধ্বংস করে দেয়, তবুও আমরা এখানেই থাকব।’
আরও পড়ুন
ইসরায়েলের গাজা দখলের পরিকল্পনা, বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড়
গাজা দখলের সিদ্ধান্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে: হামাস
গাজা সিটিতে একটি তাঁবুতে বসবাসকারী সাঈদ আল-জারদ রামে আরও এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আমরা এর মধ্যেই ১০ বার বাস্তুচ্যুত হয়েছি। আমাদের আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। ওদের আসতে দিন। আমরা ক্যাম্পেই আছি। আমরা কোথায় যাব? আমাদের কোনও বাড়ি নেই। সবকিছু শেষ হয়ে গেছে। আমি আমার এই মাটিতেই মারা যাব।’
এদিকে গাজা শহরের দখলে নেওয়ার ইসরায়েলের পরিকল্পনাকে ‘যুদ্ধাপরাধ ও জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা’ বলে অভিহিত করেছে ফিলিস্তিনি স্বাধনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। একইসঙ্গে নেতানিয়াহুর এই সিদ্ধান্ত গাজায় বন্দী ইসরায়েলি জিম্মিদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেবে বলেও সতর্ক করেছে গোষ্ঠীটি।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, দখলদার ইসরায়েল ‘দখল’ শব্দটির পরিবর্তে ‘নিয়ন্ত্রণ’ শব্দটি ব্যবহার করছে, যা নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর তাদের নৃশংস অপরাধের আইনি দায় এড়ানোর একটি প্রচেষ্টা।
ইসরায়েলের এই পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছে যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, তুরস্ক, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশ ও জাতিসংঘসহ মানবিক সংস্থাগুলো। এমনকি ইসরায়েলি সেনাপ্রধানও এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন।
সূত্র: আলজাজিরা
এমএইচআর