images

আন্তর্জাতিক

মস্কো-ওয়াশিংটন উত্তেজনা: বাড়ছে পরমাণু যুদ্ধের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৪ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩৮ এএম

আন্তর্জাতিক কূটনীতির মঞ্চে ফের উত্তেজনার ছায়া। যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যকার সামরিক শক্তিপ্রদর্শন এবং পাল্টাপাল্টি অবস্থান ঘিরে বাড়ছে পরমাণু সংঘাতের আশঙ্কা। সম্প্রতি রাশিয়ার জলসীমার কাছাকাছি যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যা নিয়ে শুরু হয়েছে জোর আলোচনার ঝড়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো ঠাণ্ডা যুদ্ধ-পরবর্তী যুগের সবচেয়ে বড় কৌশলগত উত্তেজনার ইঙ্গিত দিচ্ছে। বিশেষ করে, পরমাণু সক্ষমতা নিয়ে দুই দেশের ‘নীরব প্রতিযোগিতা’ পরিস্থিতিকে আরও উদ্বেগজনক করে তুলেছে।

রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভের এক হুঁশিয়ারিমূলক বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ট্রাম্প সাবমেরিন মোতায়েনের নির্দেশ দেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, এটি কোনো ধরনের আক্রমণ নয়, বরং প্রতিরক্ষামূলক সতর্কতা। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সংঘাত চায় না, তবে হুমকির মুখে চুপ করে বসে থাকাও সম্ভব নয়।

বিশ্লেষকদের মতে, এই সিদ্ধান্ত শুধু রাশিয়ার প্রতি নয়, বরং পুরো বিশ্বের কাছে একটি বার্তা—মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনো তার পরমাণু সক্ষমতা ও সামরিক প্রভাব বিস্তারে আগ্রহী এবং সক্ষম।

যুক্তরাষ্ট্রের হাতে রয়েছে আধুনিক ও ভয়ংকর ‘বুমার’ সাবমেরিন—ওহাইও-ক্লাস ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী ডুবোজাহাজ। একেকটি সাবমেরিন পারমাণবিক অস্ত্র বহনে সক্ষম এবং শত্রুর অবস্থান অজান্তেই মিসাইল নিক্ষেপ করতে পারে। বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অন্তত ১৪টি সক্রিয় বুমার রয়েছে, যেগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মেরামত ছাড়া সাগরতলে টহল দিতে পারে।

এছাড়া, যুক্তরাষ্ট্র পরিচালনা করে তিন ধরনের ‘ফাস্ট অ্যাটাক’ সাবমেরিন: ভার্জিনিয়া-ক্লাস, সিউলফ-ক্লাস এবং লস অ্যাঞ্জেলেস-ক্লাস। এসব ডুবোজাহাজ শত্রু সাবমেরিন ও যুদ্ধজাহাজ শনাক্ত করে দ্রুত হামলা চালাতে সক্ষম।

অন্যদিকে, রাশিয়ার রয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ সাবমেরিন বহর। এর মধ্যে রয়েছে প্রায় ৬৪টি সাবমেরিন, যার মধ্যে ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রবাহী। বোরেই-ক্লাস ও ডেল্টা আইভি-ক্লাস সাবমেরিনগুলো দেশটির পরমাণু প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রধান স্তম্ভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

এছাড়া রয়েছে ইয়াসেন-ক্লাস সাবমেরিন, যেগুলো আকারে ছোট হলেও দূরপাল্লার হামলার সক্ষমতা রাখে এবং শত্রু নৌযান ধ্বংসে পারদর্শী। এ ধরনের সাবমেরিন খুব কমসংখ্যক নাবিক দিয়ে পরিচালিত হয় এবং দ্রুত মোতায়েনযোগ্য।

যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়া উত্তেজনার এই নতুন অধ্যায় আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতি সামান্য অসতর্কতায় বড় ধরনের সংঘাতে রূপ নিতে পারে।

এইউ