আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৩ আগস্ট ২০২৫, ০৮:৩০ এএম
রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রকাশ্য হুমকি সত্ত্বেও মস্কোর সঙ্গে জ্বালানি বাণিজ্য চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে ভারত।
নিউইয়র্ক টাইমসকে দেওয়া মন্তব্যে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানান, রাশিয়ার সঙ্গে তাদের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি চুক্তি রয়েছে। হঠাৎ করে সেই সম্পর্ক ছিন্ন করা সম্ভব নয়। ট্রাম্পের হুমকির পরও নয়াদিল্লি তাদের কৌশলগত স্বার্থকে গুরুত্ব দিচ্ছে।
সম্প্রতি এক বক্তৃতায় ট্রাম্প দাবি করেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে যাচ্ছে। তবে তিনি নিজেই স্বীকার করেন, এটি এখনও নিশ্চিত নয়।
এর আগে, রাশিয়া-ভারত জ্বালানি সম্পর্কের তীব্র সমালোচনা করে ট্রাম্প বলেন, যদি ভারত তেল আমদানি বন্ধ না করে, তাহলে তাদের পণ্যে শতভাগ শুল্ক আরোপ করা হবে। সেইসঙ্গে রাশিয়া ও ভারতের অর্থনীতিকে ‘মৃত’ বলে কটাক্ষ করেন তিনি।
তবে ভারত এই দাবি সরাসরি নাকচ করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দেশটির দুই কর্মকর্তা বলেন, রাশিয়া থেকে জ্বালানি কেনা পুরোপুরি বৈধ এবং বৈশ্বিক নীতিমালার মধ্যেই হচ্ছে।
তাদের একজন বলেন, রাশিয়া এখন ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী। এটি দেশের মোট আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশ। এই নির্ভরতা রাতারাতি কমানো সম্ভব নয়।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল শুক্রবার জানান, জ্বালানির উৎস নির্বাচন করা হয় বৈশ্বিক বাজার পরিস্থিতি বিবেচনায়। তিনি আরও বলেন, ভারতের পররাষ্ট্রনীতি স্বাধীন এবং সেটি অন্য কোনো দেশের চোখে বিচার করা উচিত নয়।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, তেল রফতানির ওপর এখনও কোনো সরাসরি নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং জি-৭ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) একটি মূল্যসীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে, যা ভারত মেনে চলছে।
এদিকে ট্রাম্পের শুল্ক হুমকির জবাবে রাশিয়া কৌশলগত একটি পদক্ষেপের ইঙ্গিত দিয়েছে। ক্রেমলিন জানিয়েছে, তারা কাস্পিয়ান অঞ্চল থেকে বিশ্ববাজারে তেল সরবরাহকারী সিপিসি (সিপিসি) পাইপলাইন বন্ধ করে দিতে পারে।
এর মাধ্যমে প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন ব্যারেল তেল সরবরাহ হয়, যা বিশ্ব জ্বালানি চাহিদার প্রায় ৩.৫ শতাংশ। এটি বন্ধ হলে তেলের দাম বাড়বে এবং পশ্চিমা দেশগুলো তীব্র জ্বালানি সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সূত্র: নিউইয়র্ক টাইমস
এইউ