আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৩ জুন ২০২২, ০২:৩৫ পিএম
বিশ্বখ্যাত তুর্কি ইসলামিক ব্যক্তিত্ব শায়খ মাহমুদ এফেন্দি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ছিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের ধর্মীয় গুরু।
তুরস্কের রাজনীতিবিদ ড. ফেইথ এরবাকান এক টুইট বার্তায় শায়খ মাহমুদ এফেন্দির মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন। ইয়েনি সাফাকের তুর্কি সংস্করণে এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
টুইটে ফেইথ এরবাকান বলেছেন, আলেমের মৃত্যু দুনিয়ার মৃত্যুর সমান। আমি মাহমুদ এফেন্দির ওপর আল্লাহর রহমত কামনা করছি। তিনি আনাতোলিয়ায় (তুরস্ক) হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন, যারা রাষ্ট্র ও জাতিকে অনেক সেবা দিয়েছেন। তার ভক্তদের প্রতি সমবেদনা। আল্লাহ তাকে জান্নাত দান করুন।
— Recep Tayyip Erdoan (@RTErdogan) June 23, 2022
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ধর্মীয় গুরুর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি টুইট বার্তায় বলেন, আমাদের দেশের একজন আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শক মাহমুদ এফেন্দিকে আল্লাহ রহম করুন। তিনি ইসলামের জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। আমি তার পরিবার, ছাত্র এবং তার সমস্ত ভক্তদের ধৈর্য কামনা করছি। শান্তিতে বিশ্রাম নিন।
ইসলামের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন মাহমদু এফেন্দি। কামাল আতাতুর্কের আধুনিক তুরস্ক শাসনের সময় ধর্মকে মানুষের মধ্যে বাঁচিয়ে রাখতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা ছিল তার। বিভিন্ন বিষয়ে ইসলামের প্রভাব নিয়ে অসংখ্য বই লিখেছেন এই ইসলামিক ব্যক্তিত্ব।
কামাল আতাতুর্কের তুরস্কে যখন মসজিদগুলো মিউজিয়াম হয়ে যায়। মাদরাসাগুলোর যাবতীয় সম্পত্তি সরকার ক্রোক করে নেয়। ধর্মীয় শিক্ষা নিষিদ্ধ করা হয়। রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনে ধর্ম-চর্চা নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সময়ে তুর্কি আলেমগণ শহর ছেড়ে চলে যান প্রত্যন্ত অঞ্চলে। মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন অজপাড়া গাঁয়ে। গাছের নিচে বাচ্চাদের কুরআন শেখানোর কাজ শুরু করেন। সরকারি নিষেধাজ্ঞার খড়গ নিয়ে নিজেদেরকে যারা ইসলামের জন্য সপে দিয়েছিলেন তাদের একজন মাহমুদ এফেন্দি।
তিনি যেভাবে কষ্ট করে দীনি ইলম অর্জন করেছেন। তেমনিভাবে নিজেও গ্রামগঞ্জে এভাবে ছাত্রদের দীন শিখিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার সময় শায়খ মাহমুদ আফেন্দি ছাত্রদের আঙুলের ইশারায় সারফ-নাহু শেখাতেন ও হাতের ইশারায় মাসআলা মাসায়িল বলতেন। এখনও তুরস্কের কিছু জায়গায় এ পদ্ধতি চালু আছে।
মাহমুদ আফেন্দি হাফিজাহুল্লাহ তুর্কি ভাষায় কুরআনে কারিমের আঠারো খণ্ডের বিশাল এক তাফসির লেখেন। যার নাম ‘রুহুল ফোরকান’।
২০১৩ সালে শায়খুল ইসলাম শায়খ মাহমুদ আফেন্দিকে তুর্কিস্থানে দীনি শিক্ষা প্রচার-প্রসারে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘ইমাম কাসেম নানুতুবি রহ. এওয়ার্ড’ প্রদান করা হয়।
তুরস্কের বাইরে ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশে ইসলামের প্রচার-প্রসারে অবদান রেখেছেন তিনি।
একে