আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ জুলাই ২০২৫, ১০:৫৫ পিএম
মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
ব্রিটিশ সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, এই নিষেধাজ্ঞা ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করে দেওয়া হয়েছে যারা পাচারের সঙ্গে জড়িত এবং যুক্তরাজ্যে অনিয়মিত অভিবাসীদের নিয়ে আসে। এর মধ্যে রয়েছে এশিয়ার একটি ছোট নৌকা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে মধ্যপ্রাচ্যের অর্থলোভীরা, এবং বলকান ও উত্তর আফ্রিকার পাচারকারী দলের নেতারা।
এতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞায় যাদেরকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে তারা পাচারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ভূমিকা পালন করছে। এর মধ্যে রয়েছে ছোট নৌকা সরবরাহ, নকল পাসপোর্ট তৈরি, অবৈধ লেনদেন, অভিবাসীদের পরিবহণ করা ইত্যাদি। নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কেউ কেউ পাচারকারী চক্রের নেতা বলেও ধারণা করছে সরকার।
এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অনিয়মিত অভিবাসন কমিয়ে আনার লক্ষ্যে মাইলফলক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
তিনি জানান, সরকার চায় পাচারকারী বিশ্বের যেই প্রান্তেরই হোক না কেন তাদেরকে যেন তাদের জন্য খেসারত দিতে হয়।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পাচারকারী দল যারা অর্থের জন্য নিরীহ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে ফেলছে তাদের কাছে আমার বার্তা হলো: আমরা জানি, আপনারা কারা এবং আমরা আপনাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে সারাবিশ্বে আমাদের সহযোগিদের নিয়ে কাজ করব।’
নিষেধাজ্ঞায় যারা
যুক্তরাজ্য সরকারের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছেন আলবেনিয়ার ব্লেদার এল। সরকার বলছে, এই ব্যক্তি বেলজিয়ামের একটি অপরাধ চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করতেন। বেলজিয়াম থেকে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ে অভিবাসীদেরকে যুক্তারাজ্যে পৌঁছানোর কাজ কারতেন তিনি।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় রয়েছে একটি প্রতিষ্ঠানও। চীনের ওই প্রতিষ্ঠানটি অনলাইনে ছোট ছোট নৌকার বিজ্ঞাপন প্রচার করে যেসব নৌকা মানবপাচারের কাজে ব্যবহার হয়। ব্রিটিশ সরকার বলছে, চীনা প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেওয়া ঠিক ঐ ধরনের নৌকাই পাচার কাজে ব্যবহার করতো অপরাধীরা।
এদিকে সার্বিয়ার অ্যালেন বি. নামে এক ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ব্রিটিশ সরকার। পুলিশের সাবেক অনুবাদক ওই ব্যক্তি অসাধু পুলিশ সদস্যদের সহায়তায় মানবাপাচারের কাজ করতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। পরে এক অভিযানে পুলিশ তাকে সার্বিয়ার একটি বাড়ি থেকে আটক করে। ওই বাড়িটির দাম প্রায় দশ লাখ ইউরো। অভিবাসীদের কাছে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে তিনি ওই বাড়িটি কিনেছিলেন বলে ধারণা পুলিশের।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কিছু ব্যক্তি ইরাক হয়ে মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কেউ আবার উত্তর ফ্রান্সে পাচারের সঙ্গে জড়িত।
ব্রিটিশ সরকারের বলছে, নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ব্যক্তিদের অনেকে এশিয়া থেকে অভিবাসীদেরকে ইউরোপে নিয়ে যেতে লরি চালানোর কাজ করতেন।
সূত্র: ইনফোমাইগ্রেন্টস
এমএইচআর