images

আন্তর্জাতিক

গাজায় দুর্ভিক্ষ, ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে শিশুসহ ১৫ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ জুলাই ২০২৫, ০৬:৪৫ পিএম

গাজা উপত্যকায় ত্রাণ প্রবেশে ইসরায়েলের অবরোধের ফলে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি ফিলিস্তিনিরা। গত ২৪ ঘণ্টায় ক্ষুধাজনিত কারণে চার শিশুসহ কমপক্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ জুলাই) মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার হাসপাতালগুলো অনাহার ও অপুষ্টিতে চার শিশুসহ ১৫ জনের মৃত্যুর হয়েছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর ক্ষুধাজনিত কারণে নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা ১০১ জনে দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে ৮০ জনেই শিশু।

চিকিৎসা সূত্র আনাদোলুকে জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন ডায়াবেটিস রোগী, একজন শিশু এবং তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা এক নবজাতকও রয়েছে।

জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাজার জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ একটানা বেশ কয়েক দিন ধরে কিছু না খেয়ে আছে। 

মঙ্গলবার ডব্লিউএফপির জরুরি প্রস্তুতি ও প্রতিক্রিয়া পরিচালক রস স্মিথ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গাজার ক্ষুধা সংকট হতাশার নতুন এবং আশ্চর্যজনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। ফিলিস্তিনি জনসংখ্যার এক তৃতীয়াংশ টানা কয়েক দিন ধরে খাবার পাচ্ছে না।’

ডব্লিউএফপির অনুমান অনুসারে, গাজার জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ চরম দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি। এরমধ্যে ১ লাখ নারী ও শিশু তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। 

ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা এবং অধিকার গোষ্ঠীগুলো উপত্যকাজুড়ে ক্ষুধার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমেই আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন, বিশেষ করে শিশু, অসুস্থ এবং বয়স্কদের মধ্যে চরম অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।

জাতিসংঘের মানবিক সংস্থা ওসিএইচএ-এর একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, গাজা বিশ্বের ‘একমাত্র দুর্ভিক্ষের সংজ্ঞায়িত অঞ্চল’ যেখানে শতভাগ জনসংখ্যা দুর্ভিক্ষের মুখোমুখি।

গাজা মিডিয়া অফিস বলেছে, ইসরায়েলের অবরোধের কারণে খাদ্য ও পানি সংকটের কারণে মৃত্যুর মুখোমুখি অন্তত ৮ লাখ মানুষ। সংকট মোকাবেলায় প্রতিদিন ১৩০০ ট্রাক খাদ্য প্রয়োজন। 

গাজার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করতে চাইছে ইসরায়েল। এই মারাত্মক পরিণতির জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও যুক্তরাষ্ট্র সম্পূর্ণরূপে দায়ী।

অন্যদিকে ১১ সপ্তাহ ধরে গাজায় ত্রাণ প্রবেশে অবরোধের পর আন্তর্জাতিক চাপে গত ২৬ মে জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতায় জিএইচএফ— ত্রাণ বিতরণ সংস্থা খোলার ঘোষণা দেয় ইসরায়েলি। তবে এসব ত্রাণকেন্দ্র খাবার নিতে আসা নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ব্যাপক হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। 

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য মতে, গত ২৬ মে গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) ত্রাণ বিতরণ শুরু করার পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই তাদের খোলা চারটি ত্রাণ কেন্দ্রের কাছে প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে।  ইসরায়েলি বাহিনীর এই ‘মৃত্যুর ফাঁদে’ এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১ হাজার ২১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও ৬ হাজার ৫১১ জন। 

সূত্র: আলজাজিরা, আনাদোলু


এমএইচআর