আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১২ জুলাই ২০২৫, ০৮:২৫ পিএম
ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ওড়িশায় একটি কলেজে শিক্ষকের যৌন হয়রানির বিচার না পেয়ে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন এক ছাত্রী। এতে ওই ছাত্রীর শরীরের ৯৫ শতাংশ এবং তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করা তার এক সহপাঠীর শরীরের ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে।
শনিবার( ১২ জুলাই) ওড়িশার বালাসোরে ফকির মোহন কলেজের এই ঘটনা ঘটেছে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, গত ১ জুলাই কলেজের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটির কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বি.এড প্রোগ্রামের ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, তার বিভাগীয় প্রধান সমীর কুমার সাহু তাকে বেশ কয়েকবার অনৈতিক প্রস্তাব দেন এবং তার কথা মতো না চললে ক্যারিয়ার নষ্ট করে দেবেন বলে হুমকিও দিয়েছিলেন।
সূত্র জানায়, সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ভুক্তভোগী ছাত্রীকে আশ্বস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু কিছুই হয়নি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শনিবার ভুক্তভোগী ছাত্রীসহ এবং আরও বেশ কয়েকজন ছাত্রী কলেজের গেটের বাইরে বিক্ষোভ শুরু করেন।
ভুক্তভোগীর সহপাঠীরা জানান, তিনি বিক্ষোভ থেকে হঠাৎ উঠে পড়েন এবং দৌড়ে অধ্যক্ষের অফিসের কাছের গিয়ে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন।
একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, আগুনে পুড়ে যাওয়া ওই ছাত্রী গায়ে আগুন নিয়ে কলেজের একটি করিডোরে দৌড়ে যাচ্ছেন। একজন লোক তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করছে, কিন্তু তার টি-শার্টে আগুন ধরে যাওয়ার পর সে পিছু হটতে বাধ্য হয়। পরে ছাত্রীটি করিডোর থেকে বের হয়ে আসে এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে।
রাজ্যের উচ্চশিক্ষামন্ত্রী সূর্যবংশী সুরজ বলেছেন, ইতোমধ্যে অভিযুক্ত বিভাগীয় প্রধানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা বিভাগ তাকে এবং কলেজের অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করেছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কলেজের অধ্যক্ষ দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ছাত্রীর অভিযোগ আমলে নেওয়া হয়েছিল এবং খুব শিগগিরই অভ্যন্তরীণ কমিটি একটি প্রতিবেদন দাখিল করতো।
বালাসোরের পুলিশ সুপার (এসপি) রাজ প্রসাদ বলেন, ‘ অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দল প্রমাণ সংগ্রহ করছে। যেই দোষী বলে প্রমাণিত হোক না কেন, তাকে জবাবদিহিতার আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’
তিনি আরও জানান, ভুক্তভোগী ছাত্রী এবং তাকে বাঁচাতে গিয়ে পুড়ে যাওয়া শিক্ষার্থী ভুবনেশ্বরের এইমস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এমএইচআর