আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২২, ০৯:২৭ পিএম
প্রতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসের ২১ তারিখ সারা বিশ্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়ে থাকে। এদিনটিতে সারাবিশ্বেই মানুষের ভাষাগত স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র উদযাপন করা হয় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের মধ্য দিয়ে। ১৯৫২ সালের এই দিনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ প্রাঙ্গনে ভাষার দাবিতে রাজপথে নেমেছিলো ছাত্র সমাজ। বাংলার দামাল ছেলেরা পাকিস্তানের জালিম সরকারের অন্যায় আদেশের বিরুদ্ধে গড়ে তুলেছিলো তীব্র প্রতিবাদ। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে তারা মিছিল করেছিলো মাতৃভাষার অধিকার রক্ষার দাবিতে।
নিজের মাতৃভাষার প্রতি পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠীরই রয়েছে প্রবল দুর্বলতা। দেশ যদি মানুষের মা হয়ে থাকে তবে ভাষা হলো সেই মা’কে মা বলে ডাকার অবলম্বন। তাইতো বাঙালি জাতির ভাষার প্রতি আত্মত্যাগের এই দৃষ্টান্ত বিশ্ববিবেকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। একাত্মতা প্রকাশ করেছে তারা আমাদের এই আত্মত্যাগের সাথে। বিশ্বের দুইশোরও বেশি দেশ আজ ২১ ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
এদিন বর্বর পাকিস্তানি সেনার গুলিতে নির্মমভাবে প্রাণ হারান সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউরসহ আরও অনেকেই। ভাষা আন্দোলনকে বলা হয়ে থাকে বাঙ্গালির স্বাধীনতা সংগ্রামের পটভূমি, প্রথম সোপান। এই সোপানে ভর করেই বাঙ্গালি পেয়েছিলো তার চূড়ান্ত স্বাধীনতা। মাতৃভাষার জন্য জীবন দেওয়ার ইতিহাস পুরো পৃথিবীতেই বিরল। পৃধিবীর আর কোনো দেশ বা জাতি নিজেদের মাতৃভাষার অধিকারের দাবিতে জীবন দেয়নি। তাদের এই আত্মত্যাগ বৃথা যায়নি। এই আত্মত্যাগের কারণেই আমরা পেয়েছি আমাদের মাতৃভাষার অধিকার।
শুধু তা-ই নয়, সারা বিশ্ব আমাদের আত্মত্যাগের স্বীকৃতি দিয়েছে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর সর্বপ্রথম ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি-এই দিনটিকে বিশ্বজুড়ে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে পালনের আহ্বান জানিয়েছিলো। ২০০২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে এই দিনটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়। মাতৃভাষা দিবস হিসেবে উদযাপনের একটি অন্যতম লক্ষ্য হলো পৃথিবীর সকল দেশের, সকল জাতির ভাষার সুরক্ষা ও সংরক্ষণ। কারণ ভাষাকে বলা হয়ে থাকে সংস্কৃতির অন্যমত প্রধান উপাদান।
নিজের মাতৃভাষার প্রতি পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠীরই রয়েছে প্রবল দুর্বলতা। দেশ যদি মানুষের মা হয়ে থাকে তবে ভাষা হলো সেই মা’কে মা বলে ডাকার অবলম্বন। তাইতো বাঙালি জাতির ভাষার প্রতি আত্মত্যাগের এই দৃষ্টান্ত বিশ্ববিবেকের হৃদয় ছুঁয়ে গেছে। একাত্মতা প্রকাশ করেছে তারা আমাদের এই আত্মত্যাগের সাথে। বিশ্বের দুইশোরও বেশি দেশ আজ ২১ ফেব্রুয়ারিকে মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। যদিও পাকিস্তানি সেনাবাহিনী আজ অবধি তাদের জঘন্য এ কৃতকর্মের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা কিংবা সমবেদনা প্রকাশ করেনি। তবে যে জাতি ৩০ লাখ মানুষকে অন্যায়ভাবে হত্যা করে, ৪ লাখ নারীকে ধর্ষণ করেও আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের যুদ্ধাপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেনি, তাদের কাছ থেকে এটুকু আশা করাটাও যেনো দুরাশা।
প্রতি বছর ঘুরে বারে বারে ফিরে আসে প্রাণের একুশে ফেব্রুয়ারি। সকল ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন ও ভাষাগত সম্প্রীতি বজায় রাখাই হোক এবারের শহীদ দিবসে আমাদের অঙ্গীকার।
এমএসএ