আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ মে ২০২৫, ০৮:৪৮ এএম
অবরুদ্ধ গাজায় স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা শুরু করেছে বর্বর ইসরায়েল। গত সপ্তাহের শেষ দিক থেকেই এ হামলা আরো জোরদার করেছে দেশটির সেনাবাহিনী।
ট্যাংক-বিমান-কামানসহ অত্যাধুনিক সব মরণাস্ত্র নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অবরুদ্ধ জনপদের অসহায় বাসিন্দাদের ওপর। মধ্যরাত-ভোররাত, সকাল-সন্ধ্যা, দুপুর-বিকেল-২৪ ঘণ্টাজুড়েই চলছে হামলা।
পৃথিবীর বুক থেকে বিধ্বস্ত গাজাকে নিশ্চিহ্ন করতে চাইছে বর্বর ইসরায়েল। গত ২৪ ঘণ্টায় ১৬০ টার্গেটে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। নিহত হয় ১৪৪ জন। খবর আল-জাজিরা ও এএফপির।
সোমবারও এক ঘণ্টায় ৩০ বার বিমান হামলা চালিয়েছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৪৬ জন নিহত হয়েছে।
গাজার বেসামরিকদের অবিলম্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খান ইউনুস ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরাইলি সেনারা। বিশেষ করে পূর্বাঞ্চলের আবাসন এবং বানি সুহাইলাপাড়ায় বসবাসকারীদের জন্য নতুন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির আদেশ জারি করেছে।
এমনকি সেখানে এ যাবতকালের সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা চালানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে। একইসঙ্গে বাস্তুচ্যুত শিবিরগুলোতেও হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি সেনারা।
সোমবার নুসিরাতের বাস্তুচ্যুতদের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা চালায়। সেই হামলায় পাঁচজন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আবার ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা মেডিকেল এইড ফর প্যালেস্টাইনস জানিয়েছে ইসরায়েল রাতের বেলায় দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে অবস্থিত নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের চিকিৎসাসামগ্রী সরবরাহের গুদামে আঘাত করেছে। অন্যান্য হামলায় নিহত ও আহত ফিলিস্তিনিদের হাসপাতালে আনার সময়ই এ ঘটনা ঘটেছে।
চলমান হামলার মাঝেই সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, পুরো গাজার নিয়ন্ত্রণ করবে ইসরায়েল। ইসরায়েলের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন ধরে রাখতে গাজায় মানবিক বিপর্যয় ঠেকানোর উদ্দেশে সীমিত আকারে খাদ্য প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।
এদিকে ইসরায়েলি জিম্মিকে ফেরতের বিনিময়ে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব দিয়েছে ইসরায়েল। কাতারের দোহায় আলোচনার সময় এই প্রস্তাব দেওয়া হয়।
ইসরায়েল ধারণা করছে, গাজায় এখনো ৫৮ জন জিম্মি রয়েছে। তাদের মধ্যে ২০ জনকে জীবিত বলে মনে করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহু এ ঘোষণার আগে গাজার উত্তর ও দক্ষিণে ব্যাপক স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। স্থল অভিযান শুরু হলো এমন এক সময়ে, যখন কাতারে ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে পরোক্ষ শান্তি আলোচনা কার্যত ফলপ্রসূ হয়নি বলে দুই পক্ষের সূত্র জানিয়েছে।
গাজার সর্বশেষ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গাজা যুদ্ধে কমপক্ষে ৫৩,৩৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১২১,০৩৪ জন আহত হয়েছে। সরকারি মিডিয়া অফিস অনুযায়ী, মৃতের সংখ্যা ৬১,৭০০-এরও বেশি।
গাজার প্রায় ৯২ শতাংশ বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গিয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ)।
এক্স পোস্টে সংস্থাটি জানিয়েছে, গাজা ছিটমহলের পরিবারগুলো যে ধ্বংসযজ্ঞের মুখোমুখি হচ্ছে তা অকল্পনীয়। অগণিত মানুষ একাধিকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং আশ্রয় পাচ্ছে না।
-এমএমএস