আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২১ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
ক্যাথলিক চার্চ, ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের প্রধান ও রোমান ক্যাথলিকদের শীর্ষ ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস আর নেই। সোমবার (২১ এপ্রিল) ৮৮ বছর বয়সে চিরবিদায় নেন তিনি। তার মৃত্যুতে প্রশ্ন উঠেছে, কে হবেন নতুন পোপ? কীভাবে বাছাই করা হবে?
পোপের মৃত্যু এবং নতুন পোপ নির্বাচনের মাঝের সময়কে বলে ‘সেডে ভেকান্টে’। ল্যাটিন এই শব্দের অর্থ ‘দ্য সিট ইজ ভ্যাকেন্ট’ বা আসন খালি। এসময়ের মধ্যে মৃত পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পাশাপাশি নতুন পোপ নির্বাচনও করা হয়।
এসময়ে কোনো পোপ না থাকায় চার্চ পরিচালনার ভার থাকে কলেজ অব কার্ডিনালসের হাতে। কার্ডিনাল ক্যামেরলেঙ্গো চার্চের এই সময়ের কাজের দেখাশোনা করেন। কলেজ অব কার্ডিনালসই নতুন পোপ বেছে নেওয়ার জন্য কনক্লেভের আয়োজন করেন। কনক্লেভে উপস্থিত থাকেন কার্ডিনাল ইলেক্টররা। মৃত পোপকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকেই কার্ডিনালরা এসে পৌঁছান ভ্যাটিকান সিটিতে।

নিয়ম অনুযায়ী, পোপের মৃত্যুর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে কার্ডিনালদের অবশ্যই ভ্যাটিকানে পৌঁছতে হয়। তারা বিশেষভাবে নির্ধারিত বাসস্থানে অবস্থান করেন। নতুন পোপ নির্বাচনের জন্য সম্মেলন পরিচালনা করেন এবং তারাই ভোট দিয়ে পরবর্তী পোপ নির্বাচিত করেন। কার্ডিনালদের নিয়ে নতুন পোপ নির্বাচনের যে বিশেষ প্রক্রিয়া, সেটি ‘কনক্লেভ’ নামে পরিচিত।
পোপ নির্বাচনের জন্য ভ্যাটিকানে গোপন সম্মেলন বা কনক্লেভ অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে প্রায় ১২০ জন কার্ডিনাল ভোটদান প্রক্রিয়ায় অংশ নেন। যদিও বিশ্বব্যাপী কার্ডিনালের সংখ্যা প্রায় ১৯৫, তবে ৮০ বছরের বেশি বয়সী কার্ডিনালদের ভোট দেওয়ার অনুমতি নেই।
নির্বাচন প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন কার্ডিনালরা ভ্যাটিকান প্রাসাদে জড়ো হন। নতুন পোপ নির্বাচিত করতে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন। নির্ধারিত সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত ভোট চলতে থাকে। তবে যদি কার্ডিনালরা একমত হতে না পারেন, তাহলে ভোটগ্রহণ একদিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়, যাতে তারা প্রার্থনা ও আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রস্তুতি নিতে পারেন।
দুই তৃতীয়াংশ ভোট পেলে নির্বাচিত কার্ডিনালকে পোপ হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। তিনি জয় স্বীকার করলে পরবর্তী পোপ হন। আর যদি কোনো কার্ডিনাল দুই তৃতীয়াংশ ভোট না পান, তখন সব ভোটের স্লিপ নির্দিষ্ট চুল্লিতে পুড়িয়ে ফেলা হয়। সেই চুল্লির চিমনি দিয়ে কালো ধোঁয়া দেখেই সবাই বুঝতে পারেন পোপ নির্বাচন হয়নি। তখন আবার একই প্রক্রিয়া শুরু হয়। পোপ নির্বাচনের জন্য এই ভোটাভুটি এবং আলোচনা সবই হয় একটি বন্ধ কক্ষে।
পোপ নির্বাচন হয়ে গেলে শুরু হয় নাম ঘোষণার প্রক্রিয়া। ভ্যাটিক্যানে সেই সময়ের মধ্যেই জড়ো হয়ে যান প্রচুর মানুষ। ঊর্ধ্বতন কোনো কার্ডিনাল তখন পোপের নতুন নাম ঘোষণা করেন। নতুন পোশাক পরে জনসম্মুখে আসেন নতুন পোপ। এরপর পরেন ‘ফিশারম্যান রিং’। ঈশ্বরের নামে শপথ নেওয়ার পর ভ্যাটিকানের বারান্দা থেকে ভাষণ দেন তিনি।
এমএইচটি