images

আন্তর্জাতিক

২২ বছর পর তালেবানকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে সরাল রাশিয়া

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৭:৩৩ এএম

আফগানিস্তানের শাসক গোষ্ঠী তালেবানের ওপর থেকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা তুলে নিয়েছে রাশিয়া। ২২ বছর পর এই সিদ্ধান্ত নিলো দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) রাশিয়ার সর্বোচ্চ আদালত এই সিদ্ধান্ত দেয়। এখন থেকে তালেবান রাশিয়ায় বৈধভাবে কাজ করতে পারবে।

২০০৩ সালে তালেবানকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছিল রাশিয়া। এরপর থেকে গোষ্ঠীটির সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রুশ আইনে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হতো। তবে ২০২১ সালে তালেবান দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে বদলাতে শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনা প্রত্যাহারের পর ২০২১ সালের আগস্টে ফের আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এরপর থেকেই তালেবান সরকারের সঙ্গে কাজ শুরু করে রাশিয়া। তাদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার পক্ষেও অবস্থান নেয় মস্কো।

গত চার বছরে তালেবান সরকারের প্রতিনিধিরা বেশ কয়েকবার রাশিয়া সফর করেছেন। এমনকি গত বছর রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, ‘আফগানিস্তানে যেহেতু তালেবানই ক্ষমতায়, তাই তাদের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা জরুরি।’

চলতি বছরের মে মাসে তালেবানের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে প্রস্তাব দেয় রাশিয়ার পররাষ্ট্র ও বিচার মন্ত্রণালয়। এরপর প্রসিকিউটর জেনারেলের দপ্তর সেই প্রস্তাব সুপ্রিম কোর্টে জমা দেয়। সর্বোচ্চ আদালত বৃহস্পতিবার সেই প্রস্তাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়।

আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তালেবানের সঙ্গে রাশিয়ার দীর্ঘদিনের সংঘাতময় সম্পর্ক রয়েছে। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত এক দশক ধরে আফগানিস্তানে সোভিয়েত সেনারা ছিল। তখন তারা গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। তবে সময়ের পরিক্রমায় সেই শত্রুতা বদলে গেছে কূটনৈতিক যোগাযোগে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তালেবানের ওপর থেকে ‘সন্ত্রাসী’ তকমা সরিয়ে নেওয়া তালেবানকে আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।

এর আগেও, মধ্য এশিয়ার কিছু দেশ তালেবানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়ন করেছে। ২০২৩ সালে কাজাখস্তান তালেবানকে সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দেয়। ২০২৪ সালে একই সিদ্ধান্ত নেয় কিরগিজস্তান।

তবে এখন পর্যন্ত কোনো দেশ তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি। নারীদের অধিকার হরণ ও কঠোর নীতির কারণে আন্তর্জাতিক মহলে তাদের তীব্র সমালোচনা হচ্ছে।

তবুও কাবুলে কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রেখেছে কিছু দেশ। বর্তমানে চীন, ভারত, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার ও ইরানের দূতাবাস সেখানে সক্রিয় রয়েছে। এমনকি ২০২৩ সালে তালেবান সরকারের আমলে প্রথম রাষ্ট্রদূত নিয়োগ করে চীন।

বিশ্লেষকদের মতে, রাশিয়ার এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক পরিসরে তালেবান সরকারের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করতে পারে।

এইউ