আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০১ এপ্রিল ২০২৫, ০৪:৩৭ পিএম
ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে বেআইনি ভাবে বাড়ি ভাঙায় ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
রাজ্যটির প্রয়াগরাজ প্রশাসন এবং যোগী আদিত্যনাথ সরকারের সমালোচনা করে মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) সুপ্রিম কোর্ট ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিয়েছে।
বাড়ি ভাঙার অভিযানকে ‘অসাংবিধানিক’ এবং ‘অমানবিক’ বলে ব্যাখ্যা করেছে শীর্ষ আদালত। বিচারপতি এএস ওকা এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভূঞার বেঞ্চ এ সময় বলেছে, এভাবে কারো বাড়ি ভেঙে ফেলা হলে, তা আমাদের বিবেককে নাড়া দেয়।
বাসস্থানের অধিকার বিষয়ে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে সেসব কিছুই মানা হয়নি। যা সংবেদনশীলতার অভাবকেই স্পষ্ট করে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।
বিতর্কের সূত্রপাত প্রয়াগরাজ প্রশাসনের একটি পদক্ষেপকে কেন্দ্র করে। সেখানকার একটি জমিতে চার-পাঁচ জনের বাড়ি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন একজন আইনজীবী এবং অধ্যাপকও।
তারা আদালতে অভিযোগ করেন, যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন না করেই তাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়। কেন তাদের বাড়ি ভাঙা হয়েছিল? তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী জানান, তার মক্কেলদের বাড়ি যে জমিতে ছিল, প্রশাসন তা ভুল করে নিহত গ্যাংস্টার আতিক আহমেদের বলে চিহ্নিত করেছিল।
তার পরই ওই বাড়িগুলি বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এমনকি, বাড়ি ভাঙার কথা তার মক্কেলদের জানানো হয় মাত্র একদিন আগে।
বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়া ‘অবৈধ’ বলে দাবি করে ভুক্তভোগীরা প্রথমে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। যদিও সেখানে তাদের আবেদন খারিজ হয়।
তার পরই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। বিচারপতি ভূঞার বেঞ্চ সরকারের এ ধরনের পদক্ষেপের সমালোচনা করে। প্রশ্ন তোলে, প্রশাসনের নোটিস পাঠানোর প্রক্রিয়া নিয়েও।
বিচারপতি ওকা বলেন, বাড়ি ভাঙার ফলে মামলাকারীরা তাদের মাথার উপর ছাদ হারিয়েছেন। তাদের যা ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করতে প্রত্যেককে ১০ লাখ টাকা করে দিতে হবে। শুধু তা-ই নয়, কর্তৃপক্ষের উচিত সর্বদা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা।
আদালতের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, যাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে, তাদের নোটিসের জবাব দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি।
সুপ্রিম কোর্ট জানায়, কোনো বাড়ি ভেঙে ফেলার আগে কর্তৃপক্ষের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, সব নাগরিকের বাসস্থানের অধিকারের কথা সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে উল্লেখ রয়েছে।
-এমএমএস