images

আন্তর্জাতিক

বিশ্ব সংবাদমাধ্যমে সীতাকুণ্ড অগ্নিকাণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৫ জুন ২০২২, ০২:৪৬ পিএম

বিশ্ব গণমাধ্যম গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করেছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে ঘটা ভয়াবহ বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের খবর। এতে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েকশ মানুষ।

সীতাকুণ্ডে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এবং হতাহতের খবর রয়টার্স, আল জাজিরা, এসোসিয়েট প্রেস, বিবিসি, দ্য গার্ডিয়ান, এনডিটিভিসহ বিশ্বের প্রখ্যাত সংবাদমাধ্যমগুলোতে গুরুত্বের সঙ্গে প্রকাশ করা হয়েছে। 

'বাংলাদেশের কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে ডজন খানেক নিহত, আহত শতাধিক' শিরোনামে রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের একটি অভ্যন্তরীণ কন্টেইনার ডিপোতে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ১৬ জন নিহত এবং ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন।

তিনি বলেন, আহতদের মধ্যে দমকলকর্মী ও পুলিশ সদস্য রয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সহায়তা করার জন্য জেলার সকল চিকিৎসকের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশাপাশি আহতদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্তদানের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

'বাংলাদেশ অগ্নিকাণ্ড: ডিপো বিস্ফোরণে ৩৪ জন নিহত, শতাধিক আহত' শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে বিবিসি। তারা বলেছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রাম শহরের কাছে একটি ডিপোতে বিস্ফোরণে অন্তত ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সীতাকুণ্ড শহরের একটি কন্টেইনার স্টোরেজে আগুন নেভানোর জন্য দমকল কর্মীদের ডাকার পর সেখানে বিস্ফোরণ ঘটে। স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ডিপোর কিছু কন্টেইনারে রাসায়নিক পদার্থ মজুত ছিল বলে জানানো হয়েছে। আর এর জেরেই বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

'বাংলাদেশ: কন্টেইনার ফ্যাসিলিটিতে মারাত্মক আগুন ও বিস্ফোরণ' শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে আল জাজিরা। ৪৩ জন নিহতের খবর প্রকাশ করে তারা জানিয়েছে, বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কাছে কনটেইনার সুবিধায় আগুন ও বিস্ফোরণ ঘটেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে কারণ আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন প্রায় ৩০০ জন।

'বাংলাদেশ ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে ডজনখানেক মানুষ নিহত, অনেকে আহত' শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলে। কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে তারা জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের একটি কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লেগেছে, এতে অন্তত ২৮ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।

ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, বাংলাদেশের মূল বন্দর চট্টগ্রাম থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) দূরে সীতাকুণ্ডের বিএম ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার না হলেও স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে, রাসায়নিক পদার্থে ভরা একটি পাত্রে বিস্ফোরণ হয়েছে যা আশেপাশের বাড়ির জানালা ভেঙে দিয়েছে।

২৮ জন নিহতের খবর প্রকাশ করে এসোসিয়েট প্রেস জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বাংলাদেশের একটি বন্দর শহরের কাছে একটি কনটেইনার ডিপোতে একটি বিশাল অগ্নিকাণ্ডে কমপক্ষে ২৮ জন নিহত এবং ১০০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে, কর্মকর্তারা এবং স্থানীয় মিডিয়া রবিবার জানিয়েছে, দমকলকর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে লড়াই করার সময়।

ডাচ-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগ বিএম ইনল্যান্ড কন্টেইনার ডিপোতে শনিবার মধ্যরাতে রাসায়নিক ভর্তি কনটেইনারে বিস্ফোরণের পর আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার কারণ তাৎক্ষণিকভাবে নির্ণয় করা যায়নি। ডিপোটি রাজধানী ঢাকার ২১৬ কিলোমিটার (১৩৪ মাইল) দক্ষিণ-পূর্বে চট্টগ্রামে অবস্থিত।

'বাংলাদেশ কনটেইনার ডিপোতে বিশাল অগ্নিকাণ্ডে ৩৫ জন নিহত, ৪৫০ জনেরও বেশি আহত' শিরোনামে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। তারা জানিয়েছে, বাংলাদেশের চট্টগ্রামে গতকাল রাতে একটি শিপিং কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সীতাকুণ্ড এলাকায় ডিপোতে আগুন লেগে প্রায় ৪৫০ জন আহত হয়েছে এবং কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে।

এছাড়া বার্তাসংস্থা এএফপি, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল, গার্ডিয়ান, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিও টিভি, তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদুলুসহ বিশ্বের বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে বিস্ফোরণের খবর প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও ঘটনার ছবি ও তথ্য দিয়ে অনেকে মানবিক বিষয় তুলে ধরছেন।

১৩ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলেও আগুন এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিট ভয়াবহ এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে। তাদের সহযোগিতায় যোগ দিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তবে কোনোমতেই আগুনের তীব্রতা কমছে না।

নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী বলে জানা গেছে। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

একে