আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ জুন ২০২৪, ০১:১৮ পিএম
গাজার মধ্যাঞ্চলে নুসেইরাত শরণার্থী শিবিরে শনিবার (৮ জুন) গণহত্যা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল।
চার জিম্মিকে উদ্ধারে এদিন গাজার মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত শরণার্থী শিবিরে ব্যাপক হামলা চালিয়ে অন্তত ২১০ আশ্রয়হীন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
ইসরায়েলি এ বর্বরতা আহত হয়েছেন আরো ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি। ইসরায়েলি এ গণত্যার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের শরণার্থী বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস। খবর আনাদোলুর।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের ওই কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েলকে এখনই থামাতে হবে। অসহায় আশ্রয়হীন ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে তারা কিছুই অর্জন করতে পারবে না। শরণার্থী শিবিরে নৃশংসতার চিত্রই বলে দিচ্ছে ইসরায়েল প্রতিদিন কিভাবে গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, গাজার কোথাও সাধারণ মানুষের জন্য নিরাপদ কোন স্থান নেই, স্বাস্থ্যব্যবস্থা ধ্বংস করে ফেলেছে ইসরায়েল।এখানে শুধু মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
গাজার সরকারি তথ্য অফিস নিজেদের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নুসেইরাত শরণার্থী ক্যাম্পে চালানো ইসরায়েলি গণহত্যায় ২১০ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন ৪ শতাধিক ফিলিস্তিনি।
আহতদের শরণার্থী ক্যাম্পটির আল আওদা এবং দেইর এল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে নেয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছে গাজার কর্তৃপক্ষ।
গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে হামাসের অভিযানের পর থেকে এ পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৭০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে বর্বর ইসরায়েলি বাহিনী।
এদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এছাড়া আহত হয়েছেন আরো ৮৫ হাজার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় এ নৃশংস গণহত্যা বন্ধ করতে বললেও মার্কিন মদদে দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে ইসরায়েল।
গাজায় গত ৮ মাস ধরে ইসরায়েলের চালানো বর্বতায় সেখানকার খাদ্য, পানি ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা প্রায় ধ্বংস হয়ে গেছে।
যে চার জিম্মিকে শনিবার উদ্ধার করা হয়েছে তাদের গত ৭ অক্টোবর একটি গানের অনুষ্ঠান থেকে ধরে গাজায় নিয়ে গিয়েছিল হামাস যোদ্ধারা।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী জানিয়েছে, উদ্ধারকৃতরা হলেন- নোয়া আরগামানি (২৫), আলমোগ মের জান (২১), আন্দ্রে কোজলোভ (২৭) এবং সলমি ঝিভ (৪০)।
এই চারজনকে দিনের বেলা চালানো ‘জটিল’ অভিযানের মাধ্যমে উদ্ধার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েল। অভিযানটি চালিয়েছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা। তাদের মধ্য গাজার নুসেইরাতের আলাদা দুটি জায়গা থেকে উদ্ধার করা হয়।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী আরও জানিয়েছে, জিম্মিদের উদ্ধারের সময় নুসেইরাতে জল, স্থল ও আকাশ তিন দিক থেকেই হামলা চালানো হয়।
তবে গাজায় এত মানুষের হতাহত হওয়ার বিষয়ে কিছু জানায়নি ইসরায়েল। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে জানা যায়, চারজনকে উদ্ধার করতে গিয়ে সেখানে ২১০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে তারা।
হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা সামি আবু জুহরি বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, ৮ মাস যুদ্ধ করার পর চার জিম্মিকে উদ্ধার করার বিষয়টি ইসরায়েলের জন্য একটি ব্যর্থতা। এটি কোনো অর্জন নয়।
-এমএমএস