images

আন্তর্জাতিক

মিশরে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধবিরতিতে ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

০৫ মে ২০২৪, ০১:৫৬ পিএম

কায়রোতে হামাসের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি’ হয়েছে বলে জানিয়েছে মিশরের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম। তবে যুদ্ধ পুরোপুরি সমাপ্তির সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়েছেন ইসরায়েলের এক কর্মকর্তা।

গাজায় গত ৭ মাস ধরে চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধে সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীগুলোর চাপের মুখে পড়েছে তেল আবিব।

খাবার, পানি ও ওষুধের অপ্রতুলতার কারণে উত্তর গাজায় চরম দুর্ভিক্ষ দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। অথচ এর মধ্যেই মিশরের সীমান্তবর্তী দক্ষিণ গাজার শহর রাফাহতে ফের হামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েল। ওই অঞ্চলে বর্তমানে ১০ লাখের বেশি ফিলিস্তিনি আশ্রয় নিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের মধস্থতায় সম্প্রতি দুপক্ষই যুদ্ধবিরতির ব্যাপারে সমঝোতার ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে হামাসকে পুরোপুরি ধ্বংস করার যে অঙ্গীকার নিয়ে আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল, তা না করেই তারা যুদ্ধের পুরোপুরি ইতি টানবে কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে ইসরায়েলের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল রাফাহ আক্রমণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং জিম্মিদের মুক্তির চুক্তিতে কোনো অবস্থাতেই যুদ্ধ পূর্ণরূপে শেষ করার প্রস্তাব গ্রহণ করবে না।

শনিবার মিশরের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আল-কাহেরা নিউজ বিস্তারিত না জানালেও এটুকু বলেছে, দুই পক্ষই অনেক বিতর্কিত বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। আলোচনা চলাকালে হামাসের প্রধান দাবি ছিল, (গাজা) যুদ্ধের সম্পূর্ণ অবসান এবং গাজা থেকে সমস্ত ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার।

আরও পড়ুন

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ: কায়রোতে যুদ্ধবিরতি আলোচনা জোরদার

মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা যুদ্ধবিরতি কাজটি তিনটি ধাপে সম্পন্ন করতে চান। প্রথম ধাপে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তির শর্তে তাৎক্ষণিকভাবে ছয় সপ্তাহের জন্য যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে হামাস জানিয়েছে ইসরায়েলে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির বিনিময়ে বেসামরিক নারী জিম্মিদের মুক্তি দেবে তারা। পরবর্তী ধাপে ৪০ দিনের যুদ্ধবিরতির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে এবং এ ধাপে গাজা থেকে কিছু সেনা প্রত্যাহার করবে ইসরায়েল। শেষ ধাপে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা ও শর্তাবলি নিয়ে আলোচনা হবে।

ইন্টারন্যাশনাল কমিউনিটি অর্গানাইজেশনের মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক পরিচালক গেরশন বাস্কিন বলেছেন, মনে হচ্ছে হামাস মিশরের প্রস্তাবিত কাঠামোতে সম্মত হয়েছে। ইসরায়েলও তা মেনে নিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শনিবার সন্ধ্যায় আলোচনা শেষ হওয়ার পর ইসরায়েল যদি তাদের শীর্ষ কর্মকর্তাদের কায়রোতে পাঠায়, তাহলে বোঝা যাবে বিষয়টি তারা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।’

শুক্রবার গাজার স্বাস্থ্য বিভাগের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৬২২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৭৭ হাজার ৮৬৭জন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে ঢুকে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনের সশস্ত্র শাসক গোষ্ঠী হামাস। হামলায় অন্তত ১ হাজার ২০০ বেসামরিক ইসরায়েলি নাগরিক নিহত হন। সেই সঙ্গে ২৫০ জনকে অপহরণ করে জিম্মি করে তারা।

ইসরায়েল বলছে, হামাস এখনও প্রায় ১০০ জনকে জিম্মি করে রেখেছে।

ওই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় গাজায় লাগাতার হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী। হামলা শুরুর পর ৯ অক্টোবর গাজায় সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দেয় দখলদার ইসরায়েল। তাদের সেনা আগ্রাসনে ক্রমবর্ধমান মৃত্যু, অনাহার ও অবকাঠামোর ক্ষতি মিলিয়ে এই কয়েক মাসে মৃত্যু উপত্যকায় পরিণত হয়েছে গাজা। সূত্র: এপি

এইউ