সমকামিতাকে অপরাধ ঘোষণা, ইরাকে নতুন আইন পাস

সমলিঙ্গের মানুষের মধ্যকার যৌন সম্পর্ক তথা সমকামিতাকে অপরাধ ঘোষণা করে একটি নতুন আইন করেছে ইরাক। দেশটির সংসদে এ সংক্রান্ত একটি বিল পাস হয়েছে। নতুন আইনে সমকামী সম্পর্কে জড়ালে ১০ থেকে ১৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে। এমনকি ট্রান্সজেন্ডারদেরও এক থেকে তিন বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

যারা সমকামিতা বা যৌনবৃত্তিকে উৎসাহিত করে, যেসব চিকিৎসক লিঙ্গ পরিবর্তন সার্জারি করেন, যেসব পুরুষ ‘ইচ্ছাকৃতভাবে’ নারীদের মতো আচরণ করেন এবং যারা ‘স্ত্রী অদলবদলে’ জড়িত, নতুন আইনে তাদেরও কারাদণ্ডের মুখোমুখি হতে হবে।

শনিবার পাস হওয়া আইনটির একটি অনুলিপি রয়টার্সের হাতে এসেছে। এতে বলা হয়েছে, নৈতিক অবক্ষয় ও বিশ্বগ্রাসী সমকামিতার আহ্বানের হাত থেকে ইরাকি সমাজকে রক্ষা করা এ আইন পাসের উদ্দেশ্য।

ইরাকের পার্লামেন্টে বৃহত্তম জোটের অংশ হিসেবে রক্ষণশীল শিয়া মুসলিম দলগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় নতুন এই আইন পাস করা হয়েছে।

যদিও অধিকারকর্মীরা এই আইনের বিরোধিতা করেছেন। তাদের মতে, ইরাকে এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণের সর্বশেষ নজির এটি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এলজিবিটিকিউদের অধিকারবিষয়ক প্রোগ্রামের উপপরিচালক রাশা ইউনেস বলেন, নতুন এ আইন ইরাকের এলজিবিটিকিউ সম্প্রদায়ের অধিকার লঙ্ঘনের নজির এবং মৌলিক মানবাধিকারের ওপর গুরুতর আঘাত।

এ আইনে বলা হয়েছে, যৌনবৃত্তি ও সমলিঙ্গের সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। এমন কর্মকাণ্ডে জড়ালে ১০ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এমনকি যৌনবৃত্তি ও সমকামিতা প্রচারের জন্যও কমপক্ষে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।

নতুন এ আইনের খসড়ায় সমকামিতায় জড়ানোর জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছিল। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কঠোর বিরোধিতায় মৃত্যুদণ্ডের বিধান বদলে সর্বোচ্চ শাস্তি ১৫ বছরের কারাদণ্ড করা হয়েছে।

বর্তমান বিশ্বে ৬০টির বেশি দেশে সমকামিতাকে আইনত অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে জানিয়েছে আওয়ার ওয়ার্ল্ড। সংগঠনটির হিসাবে, ১৩০টির বেশি দেশে সমলিঙ্গের মধ্যে যৌন সম্পর্ক বৈধ।