images

আন্তর্জাতিক

গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে চীন, সৌদি আরব ও ইরান

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৮:০৫ পিএম

গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে চীন, সৌদি আরব ও ইরান। তারা ফিলিস্তিনের এ অবরুদ্ধ ভূখণ্ডে ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসন দ্রুত বন্ধের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি যৌথভাবে আহ্বান জানিয়েছে। এর পাশাপাশি গাজাবাসীর জন্য যাতে টেকসইভাবে ত্রাণ সরবরাহ করা যায় তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করার কথা বলেছে এই তিন দেশ।

শুক্রবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেং লি, ইরানের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলী বাকেরি কানি এবং সৌদি আরবের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়ালিদ বিন আব্দুল কারিম আল-খেরেইজি যৌথ বৈঠকের পর এই আহ্বান জানান।

বিবৃতিতে ওই তিন মন্ত্রী গাজার জনগণকে স্থানান্তরের কঠোর বিরোধিতা করেছেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, গাজাবাসীর জন্য ভবিষ্যতে যেকোনো ব্যবস্থা নিতে হলে তাদের মতামত ও সমর্থন নিয়েই তা করতে হবে। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রেও সেখানকার জনগণের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে।

আরও পড়ুন: গাজায় জিম্মিদের হত্যার পর ইসরায়েলে তীব্র বিক্ষোভ

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের যে আগ্রাসন চলছে তাতে তিন কূটনৈতিক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি ইরান ও সৌদি আরবের সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়। তেহরান ও রিয়াদের মধ্যে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার ক্ষেত্রে চীনের প্রভাবশালী ভূমিকার প্রশংসা করেন ইরান ও সৌদি আরবের দুই মন্ত্রী। আগামী জুন মাসে এই তিন দেশের যৌথ বৈঠক সৌদি আরবে অনুষ্ঠিত হবে।

উল্লেখ্য, গাজা উপত্যকার নিরপরাধ ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ওপর প্রায় দুই মাস ধরে ইসরায়েল পাশবিকতা চালিয়ে গেলেও কোনো পশ্চিমা দেশ বা ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত তেল আবিবকে আগ্রাসন বন্ধ করার আহ্বান পর্যন্ত জানায়নি।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৮ হাজার ৭৮৭ জন। 

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ৮ হাজার শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং ৬ হাজার ২০০ জন নারী রয়েছেন। 

আরও পড়ুন: ইসরায়েলি গোয়েন্দাকে ফাঁসি দিল ইরান

গাজার সরকারি স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ নারী ও শিশু। 

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫১ হাজার ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।

গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। ওই অভিযানে ১,২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়। ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা দুই শতাধিক ইসরায়েলিকে বন্দী করে নিয়ে গাজা উপত্যকায় ফিরে যায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের সেনাবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।

ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’

সূত্র : আল-জাজিরা, আনাদোলু এজেন্সি

এমইউ