আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২৩, ০৩:৪৫ পিএম
ইসরায়েল কর্তৃক অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের চলমান গণহত্যাকে আন্তর্জাতিক আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন বলে তীব্র নিন্দা করেছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান। সোমবার হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পিটার সিজ্জার্তোর সঙ্গে একটি ফোন কলে এই মন্তব্য করেন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান।
ফোনালাপে দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইরান ও হাঙ্গেরির মধ্যকার দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পাশাপাশি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে আলাচনা ও মতবিনিময় করেন। এ সময় গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের কারণে সেখানকার বিপর্যস্ত মানবিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
আমির-আব্দুল্লাহিয়ান বলেন, গাজা উপত্যকার জনগণের ওপর নির্বিচার গণহত্যা ও বোমাবর্ষণ চালিয়ে ইসরায়েল সরকার সুস্পষ্টভাবে সব ধরনের মানবিক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করে যাচ্ছে। গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা করে সেখানে মানবিক ত্রাণ প্রবেশের সুযাগ করে দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত গাজায় সামরিক আগ্রাসন বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েল-ফিলিস্তিন যুদ্ধের ছায়া কলকাতায়!
এর আগে গত ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাস ইসরায়েলের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন সামরিক অভিযান চালায়। সেদিন থেকেই ইসরায়েলের বিমানবাহিনী গাজায় ভয়াবহ রক্তাক্ত অভিযান শুরু করে যা এখন পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলছে।
ইসরায়েলে সামরিক অভিযানের বিষয়ে আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের মুখপাত্র খালেদ কাদোমি বলেন, ‘দশকের পর দশক ধরে ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো নৃশংসতার জবাবে এই সামরিক অভিযান চালানো হয়েছে। আমরা চাই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর এবং আমাদের পবিত্র স্থাপনা আল-আকসায় ইসরায়েলি নৃশংসতা বন্ধে উদ্যোগ নেবে। এগুলোই হামাসের এই অভিযানের কারণ।’দ
বিগত এক মাসে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনিদের সংখ্যা ১২ হাজার ছাড়িয়েছে। নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী। অন্যদিকে ইসরায়েলে নিহত হয়েছে এক হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ। হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে অন্তত ২৪০ জনকে যুদ্ধবন্দী হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস। গাজা উপত্যকার ২৩ লাখ মানুষের মধ্যে অন্তত ১৫ লাখ বেসামরিক লোক হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
অপরদিকে গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে হামাস যোদ্ধাদের তীব্র লড়াই চলছে। গত কয়েক দিন ধরে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর স্থল হামলা জোরদার হওয়ার পর থেকে গাজার উত্তরাঞ্চলে সংঘাতের তীব্রতা বেড়েছে।
উত্তর গাজার শহর গাজা সিটির হাসপাতালগুলোর আশেপাশে সংঘাতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি।
আরও পড়ুন: ‘গাজার আল-শিফা হাসপাতাল এখন কবরস্থান’
হাসপাতালগুলোর আশেপাশের এলাকায় বেশ কয়েক দিন ধরে তীব্র সংঘাত চলার কারণে কয়েকটি হাসপাতাল কার্যত অচল হয়ে পড়েছে।
গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফা ‘আর হাসপাতাল হিসেবে কাজ করছে না’ বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
ইসরায়েলি বাহিনীর ক্রমাগত বোমা হামলা ও স্থল আক্রমণ চলতে থাকায় গাজার আরও কয়েকটি হাসপাতালও একই পরিস্থিতির দিকে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেছে সংস্থাটি।
সূত্র : আল-জাজিরা, প্রেস টিভি
এমইউ