বিনোদন ডেস্ক
০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৩০ পিএম
ইসরায়েলে হামাসের হামলা ছিল ভয়াবহ। তবে তার পাল্টা হিসেবে ফিলিস্তিনে ইসরায়েল যেভাবে হামলা চালাচ্ছে, সেখানে যা ঘটছে তা অসহনীয় বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
সম্প্রতি ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রতিক্রিয়া উল্টো কাজ করতে পারে বলে মন্তব্য করেছিলেন ওবামা। আবারও গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলার বিরুদ্ধে মন্তব্য করলেন তিনি।
শনিবার এক সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামাসের ৭ অক্টোবরের হামলা ভয়াবহ, তবে এখন ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যা করা হচ্ছে, তা সহ্যের বাইরে।
আরও পড়ুন: গাজায় চূড়ান্ত মানবিক সংকট, এখনও যুদ্ধবিরতি চায় না যুক্তরাষ্ট্র
ওবামা বলেন, ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। তবে এর জন্য যেকোনো বেসামরিক লোকের মৃত্যুতে চরমপন্থা বাড়বে। এটা তাদের দীর্ঘমেয়াদে নিরাপত্তার ক্ষতি করবে।
ওবামা বলেন, হামাস এবং ইসরায়েল কেউই নিরপরাধ নয়। তবে ফিলিস্তিনের ইসরায়েলের হামলায় এমন সব লোক মারা যাচ্ছে যাদের সঙ্গে হামাসের কোনো সম্পর্ক নেই।
পড সেভ আমেরিকা পডকাস্টের জন্য দেওয়া সাক্ষাৎকারে ওবামা বলেন, 'কোনো গঠনমূলক উদ্যোগ নিতে হলে আমাদেরকে প্রথমে মেনে নিতে হবে যে এখানে একটি জটিল পরিস্থিতি চলছে এবং বাইরে থেকে দেখে যা মনে হয়, বিষয়টি ততটা সরল নয়। হামাস যা করেছে, তা ভয়ানক এবং এর পেছনে কোন যুক্তি নেই। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও সত্য যে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে এখন যা চলছে এবং আগে তাদের ভূখণ্ড যেভাবে অধিগ্রহণ করা হয়েছে, তা সহ্যের বাইরে।'
তিনি বলেন, 'তবে এটাও সত্য, গাজায় অনেক ফিলিস্তিনি মারা যাচ্ছেন, যাদের সঙ্গে হামাসের কার্যক্রমের কোনো যোগসূত্র নেই', যোগ করেন ওবামা।
প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ওবামা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধান দেওয়ার উচ্চাভিলাষী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে থাকলেও তিনি এতে সক্ষম হননি।
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলা ও অভিযানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ৫০০ জনে। যার অর্ধেকের বেশি আবার নারী ও শিশু। এদিকে গাজায় হাজার হাজার গর্ভবর্তী নারী অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। গাজার ফিলিস্তিনি নারীরা ইসরায়েলি উত্তেজনার মধ্যে অকাল প্রসব ও গর্ভপাতের সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজার গর্ভবতী নারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ, নিহত সাড়ে ৯ হাজার
গাজা প্রশাসনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সালাম মারুফ সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, অক্টোবরের ৭ তারিখ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা উপত্যকায় অন্তত সাড়ে ৯ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ৩ হাজার ৯০০ জনই শিশু এবং ২ হাজার ৫০৯ জন নারী।
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় বিভিন্ন স্থাপনার ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে সালামা মারুফ বলেন, ‘ইসরায়েলি হামলার কারণে গাজায় ৫৫টি মসজিদ,৩টি বিশ্ববিদ্যালয়, তিনটি গির্জা ধ্বংস হয়েছে।’
তিনি আরও জানান গাজা প্রশাসনের ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনের পাঁচটি ভবনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ১৬টি হাসপাতাল, ৩২টি প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ২৭টি অ্যাম্বুলেন্স ধ্বংস হয়েছে। চিকিৎসা খাত সংক্রান্ত ১০৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
গাজায় হামলার শুরু থেকেই অন্যান্য দেশের তুলনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে তুরস্ক। এরদোয়ান শুরু থেকেই সরাসরি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের তীব্র সমালোচনা করছেন। যুদ্ধবিরতির জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে চেষ্টা চালানো হচ্ছে বলেও জানিয়েছে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের কার্যালয়।
একে