আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৪ নভেম্বর ২০২৩, ০২:২০ পিএম
রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে, কেবলমাত্র যাদের ‘হৃদয় পাথরের’ তারাই ফিলিস্তিনের গাজার ঘটনার ছবি দেখে চুপ থাকতে পারে। শুক্রবার এক বক্তৃতায় পুতিন বলেন, সেখানে ইসরায়েল প্রায় চার সপ্তাহ ধরে বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
মস্কোতে এক সভায় বক্তৃতাকালে পুতিন সতর্ক করে দিয়েছিলেন যে, দুঃখজনক ঘটনাগুলো সহিংসতা উসকে দেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। খবর আনাদুলু এজেন্সির
পুতিন বলেন, গাজায় নিষ্পাপ শিশুদের কষ্ট আর রক্তাক্ত শরীর দেখলে যে কারো চোখে জল আসবে। ক্ষোভ জন্মাবে। এটাই স্বাভাবিক মানুষের প্রতিক্রিয়া। এ অনুভূতি না হলে, তারা হৃদয়হীন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমাদের এখন মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। বুঝতে হবে এই পৈশাচিক কর্মকাণ্ডের শেকড় কোথায়; কোথা থেকে আসছে এসবের উসকানি।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে ১৪৫০ কোটি ডলার মার্কিন কংগ্রেসের, ফিলিস্তিনে শুধু ‘সান্ত্বনা’
পুতিন বলেন, সেখানকার ভয়াবহতা, যন্ত্রণাদায়ক এবং রক্তাক্ত শিশুদের দিকে তাকান, তখন আপনি ক্ষোভে ফেটে পড়বেন। এগুলো দেখলে আপনার চোখে জল আসবে। যেকোনো সাধারণ মানুষেরই এমনটি হবে। যদি তা না হয় তাহলে তাদের হৃদয় পাথরের।
এর আগে সম্প্রতি এক বক্তৃতায় পুতিন গাজা সংকটের জন্য পশ্চিমাদের দায়ী করেন। তিনি বলেন, ফিলিস্তিন সংকটের একমাত্র সমাধান হলো স্বাধীন, সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।
তিনি বলেন, মার্কিন শাসক এবং তাদের স্যাটেলাইট গাজার ফিলিস্তিনিদের হত্যার পিছনে এবং ইউক্রেন, আফগানিস্তান, ইরাক এবং সিরিয়ার সংঘাতের জন্য দায়ী।
পুতিন আরও বলেন, পশ্চিমারা মধ্যপ্রাচ্যকে ক্রমাগত বিশৃঙ্খল অবস্থায় রাখতে চায়। যুক্তরাষ্ট্র সেসব দেশকে অপমান করে যারা গাজার যুদ্ধবিরতিতে জোর দেয় এবং রক্তপাত বন্ধ করে সত্যিকার সমাধানে অবদান রাখতে চায়।
রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, ইউক্রেনে বেঁচে থাকার সংগ্রাম চালাচ্ছে রাশিয়া। পশ্চিম রাশিয়া চূর্ণ করার জন্য ইউক্রেনকে ব্যবহার করতে বদ্ধপরিকর যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া সেটি ঠেকাতেই সেখানে বিশেষ সামরিক অভিযান পরিচালনা করছে। ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ছায়াযুদ্ধ করছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মূলত মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে লড়াই করছে রাশিয়া।
আবাসিক ভবনগুলোসহ নতুন করে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার হাসপাতাল ও অ্যাম্বুলেন্স লক্ষ্য করে হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। নতুন করে এসব হামলায় আরও ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত গাজায় প্রায় ৯ হাজার ২০০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অ্যাম্বুলেন্স বহরে হামলার কথা স্বীকার করেছে ইসরায়েল।
শুক্রবার গুরুতর আহত রোগী বোঝাই অ্যাম্বুলেন্স বহরে ন্যক্কারজনক হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এছাড়া একটি বেসামরিক পরিবহন বাসে হামলার ঘটনাতেও হতাহতের তথ্য মিলেছে।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের টার্গেট এখন হাসপাতাল-অ্যাম্বুলেন্স, গাজায় হাহাকার
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার আকাশে ড্রোন ওড়ানোর কথা প্রথমবারের মতো স্বীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগন জানিয়েছে যে, গাজার ওপর তারা নজরদারি ড্রোন ওড়াচ্ছে। এতে কোনো অস্ত্র নেই বলে দাবি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মিত্র ইসরায়েলকে জিম্মিদের বিষয়ে সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পেন্টাগন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট রাইডার বলেছেন, ড্রোনগুলো ইসরায়েলি জিম্মি উদ্ধারের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে কাজ করছে। এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে তিনি বলে, নিরস্ত্র ড্রোনের ফ্লাইটগুলো ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পর শুরু হয়েছিল।
একে