images

আন্তর্জাতিক

লাশ চিনতে সন্তানের গায়ে নাম লিখে রাখছেন ফিলিস্তিনিরা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২৪ অক্টোবর ২০২৩, ১১:১৬ এএম

মানবিক সংকটের চূড়ান্ত সীমা পার করেছে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা। সেখানকার লাখ লাখ বাসিন্দা মৃত্যুর প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। ইসরায়েলের নিরবিচ্ছিন্ন হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুই হাজারের বেশি শিশু। এমন অবস্থায় শিশুদের নিয়ে হৃদয়বিদারক সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজার বাবা-মায়েরা।

সিএনএন ও আনাদুলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনি বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের শরীরের বিভিন্ন অংশে নাম লিখে রাখছেন। যাতে ইসরায়েলি হামলায় মৃত্যু হলে যেন সহজেই লাশ চিহ্নিত করা যায়।

গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলায় এখন পর্যন্ত ৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এদের মধ্যে দুই হাজারের বেশি শিশু এবং ১১০০ এর বেশি নারী বলে জানিয়েছে ফিলিস্তের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি কর্মকাণ্ডের ফল উল্টো হতে পারে: ওবামা

সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় সংকট ক্রমশ বাড়ছে। ধারাবাহিকভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এমন অস্থায় ফিলিস্তিনি বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের শরীরের বিভিন্ন অংশে নাম লিখে রাখছেন।

গাজার আল আকসা হাসপাতালের মর্গের একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে সিএনএন। সেখানে দেখা যাচ্ছে যে, কয়েকটি শিশু ইসরায়েলের হামলায় প্রাণ হারিয়েছে। তাদের শরীরে আরবীতে নাম লেখা ছিল।

gaza_child_name
গাজার হাসপাতালের মর্গে থাকা শিশুর শরীরে লেখা নাম। ছবি: এএফপি

এ বিষয়ে আল-আকসা মার্টিয়ারস হাসপাতালের প্রধান আব্দুল রহমান আল-মাসরি জানান, তারা বেশ কিছু শিশুর মরদেহ পেয়েছেন যাদের পা, পেট কিংবা শরীরের অন্যান্য অংশে মা-বাবারা নাম লিখে রেখেছিলেন।

মাসরির মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে সন্তানের ক্ষেত্রে যেকোনো কিছুই ঘটে যেতে পারে। বোমার আঘাতে মারা গেলে শিশুদের মরদেহ দেখে অনেক সময় চেনার উপায় থাকে না। এ ক্ষেত্রে কালো কালি দিয়ে শরীরে লিখে রাখা নাম চেনার উপায় হতে পারে। বিষয়টিকে ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি নতুন প্রবণতা হিসেবেও উল্লেখ করেন মাসরি। তিনি জানান, অতীতে এই বিষয়টি কখনোই দেখা যায়নি।

আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতদের ১৯০০ শিশু, নারী ১০০০

চলমান সংঘাতে গাজা শহরে ইসরায়েলি হামলায় প্রায় পাঁচ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর নিহতদের এক-তৃতীয়াংশই শিশু বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য বিভাগ। তাদের দাবি, চলমান সংঘাতের মধ্যে গাজায় প্রতি ১৫ মিনিটে একজন করে শিশুর মৃত্যু হচ্ছে। চিকিৎসকদের তথ্যমতে, গাজার হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা আহতদের ৪০ শতাংশই শিশু।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, ফিলিস্তিনি শিশুদের হত্যা করে মূলত একটি প্রজন্মকে পঙ্গু করে দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সাত দশক ধরে ফিলিস্তিনে দখলদার ইসরায়েলিদের বন্দুক-বোমার প্রধান লক্ষ্যবস্তু হয়েছে হাজারো শিশু।

খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের ব্যাপক হামলায় গাজার প্রায় ৬০ শতাংশ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

একে