আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:৩৫ পিএম
দুই ছাত্রের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ভারতের মনিপুর রাজ্যে বিজেপি দফতরে হামলা হয়েছে। এর আগে বুধবার এ রাজ্যে তীব্র বিক্ষোভের পরেই ইম্ফলে ফের কারফিউ জারি করে দেওয়া হয়েছে। এই বিক্ষোভের জেরে মঙ্গলবার থেকেই সেখানে আবারও ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় সেই অশান্তির পরিণতিতেই হামলা হলো পাহাড়ি জেলা থৌবলের বিজেপি দফতরে। সেখানে অবাধে ভাঙচুর চালানোর পরে আগুন ধরায় উত্তেজিত জনতা। জেলা বিজেপির দফতরে রাখা কয়েকটি গাড়িতেও আগুন ধরানো হয় বলে অভিযোগ আছে।
আরও পড়ুন: মালদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন: চীনপন্থী ও ভারতপন্থী প্রার্থীর লড়াই
গোষ্ঠীহিংসার কারণেই নিরপরাধ দুই মেইতেই ছাত্র-ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কুকি দুষ্কৃতীরা খুন করেছে বলে অভিযোগ আছে। তার প্রতিবাদে রাজ্যের রাজধানী ইম্ফল-সহ বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেছে মেইতেই সংগঠনগুলো। মঙ্গলবার থেকে দফায় দফায় পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে ৫০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। ফলে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।
এই পরিস্থিতিতে গুজব ছড়ানো ঠেকাতে মণিপুরের বিজেপি সরকার মঙ্গলবার থেকে ইন্টারনেট পরিষেবার ওপর বিধি-নিষেধ আরোপ করেছে। বুধবার ঘোষণা করা হয়েছে, কুকি অধ্যুষিত পাহাড়ি অঞ্চলে আগামী ছয় মাসের জন্য বলবৎ থাকবে ‘সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন’ (‘আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অ্যাক্ট’ বা আফস্পা)। তবে ছাড় দেওয়া হয়েছে মেইতেই প্রভাবিত ইম্ফলের ১৯টি থানাকে।
বিতর্কিত এই আইনে সেনাবাহিনীকে ব্যাপক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। সৈন্যরা ভুল করেও কোনো বেসামরিক লোককে হত্যা করলে এর জন্য কোনো সেনা সদস্যের সাজা হয় না। উত্তর-পূর্ব ভারতের অনেক রাজ্যেই এই আইনটি কার্যকর আছে।
অন্যদিকে, মণিপুরে প্রায় পাঁচ মাস ধরে চলা জাতিগত সহিংসতার সময়ে আদিবাসীদের হত্যা ও ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিতে কেন দেরি করল সরকার, সেই প্রশ্ন তুলে চুড়াচাঁদপুরে বিক্ষোভ দেখায় আদিবাসী সংগঠনগুলো।
আরও পড়ুন: ইসকনের বিরুদ্ধে মানেকা গান্ধীর গুরুতর অভিযোগ
উত্তেজনার এই আবহে বুধবার কেন্দ্রীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর আমেরিকায় একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘‘বাইরে থেকে আসা কিছু ব্যক্তি মণিপুরে সহিংসতা ছড়াচ্ছে।’’ এ ক্ষেত্রে তিনি কুকিদের নিশানা করতে চেয়েছেন। প্রসঙ্গত, গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাইকোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলো তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
সূত্র : পিটিআই, বিবিসি
এমইউ