আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:৩৭ পিএম
ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে মরক্কোর ঐতিহাসিক মারাকেশ শহর। এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ৬৩২ ছাড়িয়েছে। এটি আরও অনেক বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেখানকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, এমন ভয়াবহতা তারা আগে কখনো দেখেননি।
মারাকেশের বাসিন্দা ও সাংবাদিক নুরেদ্দিন বাজিন আল জাজিরাকে বলেন, ভূমিকম্পটি শহরের বাসিন্দাদের জন্য হঠাৎ এবং বিপর্যয়কর ছিল।
আল হাউজ অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানান নুরেদ্দিন। তিনি বলেন, 'আমরা দুঃস্বপ্নে ভরা এক ভয়ঙ্কর রাত কাটিয়েছি। আমরা এই ধরনের দুর্যোগে অভ্যস্ত নই।'
তিনি আরও বলেন, 'মারাকেশের পুরানো শহরে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কারণ ভবনগুলো বেশ পুরাতন এবং ধসে পড়ার প্রবণতা রয়েছে। তাদের মধ্যে এমন অনেক ভবন রয়েছে যেগুলো ভূমিকম্প ছাড়াই ভেঙে পড়তে পারে।'
আরও পড়ুন: ভূমিকম্প: মরক্কোতে নিহত বেড়ে ৬৩২, ক্ষতিতে ঐতিহাসিক স্থাপনা
তিনি জানান, 'মৃত্যুর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।'
মারাকেশের বাসিন্দা মোহাম্মদ জানান, ভূমিকম্পের সময় তিনি ভবনের তৃতীয় তলায় তার অ্যাপার্টমেন্টে ছিলেন। তার কথায়, 'এটি হঠাৎ এবং সহিংসভাবে কাঁপতে শুরু করে। আমি পালিয়ে গিয়েছিলাম এবং নিরাপদে ছিলাম।'
তিনি বলেন, 'পুরানো শহর মারাকেশে অনেক পুরনো ভবন ধসে পড়েছে। মারাকেশের শহরতলী ভূমিকম্পে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশিরভাগ হতাহতের ঘটনা আশেপাশের গ্রামীণ কমিউন এবং উপকণ্ঠে ঘটেছে।'
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় টিভি জানিয়েছে, ভূমিকম্পে অন্তত ৬৩২ জন নিহত এবং ৩২৯ জন আহত হয়েছে।
মারাকেশ আঞ্চলিক রক্ত সঞ্চালন কেন্দ্র মারাত্মক ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রক্তদানের আহ্বান জানিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি মারাকেশ শহরের সকল মানুষকে শনিবার সকাল থেকে রক্তদানের জন্য কেন্দ্রে আসার অনুরোধ করেছে।
আরও পড়ুন: মরক্কোর মারাকাশে ৫০০ বছরের মধ্যে শক্তিশালী ভূমিকম্প
মরক্কোর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ জিওফিজিক্সের প্রধান বলেছেন যে, শুক্রবারের ভূমিকম্পটি দেশের এক শতাব্দীর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। তিনি আরও বলেন, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দক্ষিণ-পশ্চিম মরক্কোর আল-হাউজ অঞ্চল।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৫০০ বছরের মধ্যে ওই এলাকায় এত বড় ভূমিকম্প হয়নি।
ইউএসজিএস পূর্বাভাসে বলেছে যে, শহরটিতে ভূমিকম্পে এক লাখ মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে ১১ শতাংশ। এছাড়া এক হাজার মানুষের মৃত্যর সম্ভাবনা রয়েছে ৩৪ শতাংশ।
একে