images

আন্তর্জাতিক

টাইটানিকের আশপাশের পানি কেন এত বিপজ্জনক?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২২ জুন ২০২৩, ০৮:২৬ পিএম

১৯১২ সালের ১৪ এপ্রিল। আইসবার্গে ধাক্কা খেয়ে প্রথম যাত্রাতেই আটলান্টিকে ডুবে গিয়েছিল আরএমএস টাইটানিক। তিন ঘণ্টা ধরে ধীরে ধীরে তলিয়ে গিয়েছিল জাহাজটি। মৃত্যু হয়েছিল এই জাহাজের প্রায় দেড় হাজারের বেশি যাত্রী এবং ত্রুর। 

বর্তমানে নিউফাউন্ডল্যান্ড উপকূলের প্রায় ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্ব দিকে সমুদ্রতল থেকে প্রায় সাড়ে ১২ হাজার ফুট গভীরে পড়ে রয়েছে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ। সমুদ্রের নিচে সমাধিস্থ টাইটানিকের সেই ধ্বংসাবশেষও কি অভিশপ্ত? নাকি অতল সমুদ্রে লুকিয়ে রয়েছে অন্য কোনও রহস্য?

টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গিয়ে পাঁচ যাত্রীসহ নিখোঁজ হয়েছে ডুবোজাহাজ টাইটান। এরপর থেকেই উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন।

অভিশপ্ত এই জাহাজের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে মিডনাইট জোনে, যা ১০০০ মিটার গভীরে রয়েছে। সেখানে সূর্যের আলো পৌঁছয় না। এলাকাটি পুরোপুরি অন্ধকার।

অর্থাৎ টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখতে গেলে দুই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অন্ধকারের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এই সময় যেকোনও ডুবোজাহাজের পথ হারানোর একটা প্রবণতা তৈরি হয়। এক্ষেত্রে যেকোনও সাবমেরিনের পাইলটেরা একটি বিশেষ কৌশল নেন, যা হল 'ইনার্শিয়াল নেভিগেশন' ।

titanic

তা সত্ত্বেও পানির তলায় টাইটানিককে খুঁজে পাওয়া অত্যন্ত কঠিন। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ দেখার অভিজ্ঞতা ভাগ করে লেখক মাইক রেইস বলেন, 'সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছনোর পর্যন্তও বোঝা সম্ভব নয় যে টাইটানিক কোথায় রয়েছে। আমরা প্রায় ৯০ মিনিট ধরে টাইটানিককে খুঁজেছিলাম।'

এছাড়াও সমুদ্রের গভীরে গেলে চারিপাশে পানির একটা বিপুল চাপ থাকে। স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকের মন্তব্য, সেখানে পানির চাপ একটি গাড়ির টায়ারের প্রায় ২০০ গুণ বেশি থাকে। ফলে যে সাবমেরিনগুলো এই গভীরতায় যায় তা এমনভাবেই তৈরি করতে হয় যাতে তা পানির চাপ নিতে সক্ষম হয়।

এদিকে সমুদ্রের নিচে অবস্থিত টাইটানিক ধীরে ধীরে ক্ষয় হচ্ছে। জাহাজের সামনের অংশ দ্রুত নষ্ট হচ্ছে বলে অনুমান করা হচ্ছে। সেটি টাইটানিকের আশেপাশের পানিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলছে।

এছাড়াও টাইটানিক যে অংশে সমাধিস্থ রয়েছে সেখানে স্রোত অনেক বেশি। এছাড়াও বেন্থিক ঝড় প্রবাহিত হয় সেখানে দিয়ে, যা অত্যন্ত বিরল। ফলে সমুদ্রের নিচে থাকা যে কোনও বস্থ এই অংশে অত্যন্ত সংকটে থাকে।

সম্প্রতি টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষ স্ক্যান করতে একটি বিশেষ অভিযান করা হয়। এই দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রত্নতাত্ত্বিক গেরহার্ড সেফার্ট। তবে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন, ডুবোজাহাজের জন্য টাইটানিকের ওই এলাকা সুরক্ষিত। প্রসঙ্গত, ডুবোজাহাজে উপস্থিত পাঁচ যাত্রীকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করা হচ্ছে।

একে